বিদ্যুৎ মৈত্র, বহরমপুরঃ সাগরদিঘি উপনির্বাচনে পরাজয়ের পর মুর্শিদাবাদ জেলার নেতৃত্বদের অক্সিজেন জোগাতে এসে হতাশা ও আক্ষেপ ঝড়ে পড়ল রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর গলায়। বুধবার বহরমপুরে জনপ্রতিনিধি ও দলীয় নেতৃত্ব জেলা প্রশাসনের একাংশের কার্যকলাপ নিয়ে দলীয় বৈঠকে সোচ্চার হন। তার জবাবে সিদ্দিকুল্লা আক্ষেপের সুরে বলেন, “ আমার বিধানসভা এলাকার প্রশাসনের একাংশই আমার কথা শোনে না।” যা শুনে তৃণমূলের একাংশের বক্তব্য “কারে দিলাম রাজার পার্ট।”
সাগরদিঘি উপনির্বাচনের পর নতুন করে মুর্শিদাবাদ মালদহের তৃণমুল সংগঠনকে চাঙ্গা করতে দায়িত্ব পেয়েছেন সিদ্দিকুল্লা। দায়িত্ব পাওয়ার পর বুধবার বহরমপুর শহরে মুর্শিদাবাদের দুই সাংগঠনিক জেলার জনপ্রতিনিধি ও নেতৃত্বের সঙ্গে প্রথম দলীয় বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন তৃণমূলের এই সংখ্যালঘু মুখ। সেখানেই জেলা নেতাদের সামনে এই মন্তব্য করেন তিনি।
বৈঠকে উপস্থিত এক বিধায়ক সিদ্দিকুল্লাকে অভিযোগের সুরে বলেন, “ আমার এলাকায় আমার অবস্থা সিভিক ভলান্টিয়ারের থেকেও খারাপ। আমি দীর্ঘদিনের বিধায়ক। আমার বিডিও আমার কথাই শোনেন না।” এক পুরপ্রধান বলেন, “ আমার শহরের তৃণমূল নেতা কর্মীদের পুলিশ অকারণে হয়রান করছে। আপনি প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলুন।” এক মহিলানেত্রী সংগঠনের বেহাল দশা নিয়ে সোচ্চার হন। জেলা পরিষদের এক কর্মাধ্যক্ষেরও সমালোচনার তীর ছিল জেলা প্রশাসনের একাংশের দিকে। সব শোনার পর সিদ্দিকুল্লার আশ্বাস “ আপনারা যা বললেন সেগুলি সব শুনলাম এবং আপনাদের অভিযোগ আমি দলনেত্রীর কাছে পৌঁছে দেব।”
পঞ্চায়েত নির্বাচনে দলীয় কৌশল ঠিক করতে জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে এদিন বৈঠকে বসেছিলেন সিদ্দিকুল্লা। সেখানে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের রাজ্য সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি মোশারফ হোসেন। জেলার সাত জন বিধায়ক ও ছ’জন পুরপ্রধানের সঙ্গে ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি সামসুজ্জোহা বিশ্বাস ও একাধিক কর্মাধ্যক্ষ সহ তৃণমূলের মূল সংগঠন সহ শাখা সংগঠনের নেতাদের একাংশ। তবে সাগরদিঘির উপনির্বাচনে তৃণমূলের হার নিয়ে বিরোধীরা যে সমালোচনাই করুক না কেন তাকে গুরুত্ব দিচ্ছে না তৃণমূল। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সেই দাবি করে সিদ্দিকুল্লা বলেন, “ সাগরদিঘির ঘটনা একটি বিরল ঘটনা। এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি মুর্শিদাবাদে হবে না। আজকের বৈঠকে সেই প্রতিজ্ঞাই আমরা সকলে করলাম।”