মধ্যবঙ্গ নিউজ ডেস্কঃ পৌরসভা নির্বাচন মিটলেও মিটছে না তৃণমূল কংগ্রেসের আভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব। পৌরসভা ভোটের পর ধূলিয়ান পৌরসভায় চেয়ারম্যান নির্বাচনের দিন স্পষ্ট হয় তৃণমূলের দুই শিবিরের বিভাজন। তার জেরেই শোকজ করা হয় সামসেরগঞ্জ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি সহিদুল ইসলাম , ধূলিয়ান টাউন তৃণমূল সভাপতি মেহবুব আলম, দুই কাউন্সিলার সাজাহান মহলদার ও মোস্তাক আজাদকে।
দলের জঙ্গিপুর জেলার সভাপতি, জঙ্গিপুরের সাংসদ খলিলুর রহমানের সাথে সামসেরগঞ্জের বিধায়ক আমিরুল ইসলামের গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব সামনে এসেছে এই ঘটনায়। ২১ আসনের ধূলিয়ান পৌরসভায় ১১ টি আসনে জেতেন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতীকে লড়া প্রার্থীরা । দল আগেই ঘোষণা করেন, চেয়ারম্যান হবেন ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার । ইনজামামুল হক কিন্তু ভোটাভুটি হয় সভাপতি নির্বাচন ঘিরে। দলের নির্দেশ উপেক্ষা করেন চেয়ারম্যান হিসেবে ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার সাজাহান মহলদারের নাম প্রস্তাব করেন ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার মোস্তাক আজাদ। হয় ভোটাভুটি। যদিও বিক্ষুব্ধ প্যানেলকে হারিয়ে চেয়ারম্যান হন ইনজামামুল হক। এর পরেই দলের জেলাসভাপতির বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েন তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্বের একাংশ। জেলা সভাপতি খলিলুরের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন সামসেরগঞ্জ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি সহিদুল ইসলামও। সহিদুল দাবি করেন, খলিলুর রহমানই মদত যোগাচ্ছেন গোষ্ঠীকোন্দলে। ঘটনায় অস্বস্তি এড়াতে বৃহস্পতিবার চার নেতাকেই শো’কজ করলে জঙ্গিপুর জেলা তৃণমূল কংগ্রেস।
জঙ্গিপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল সভাপতি খলিলুর রহমান বলেন, “ ধূলিয়ান পৌরসভা নিয়ে আমাদের দলেরই কিছু কাউন্সিলার, কিছু পদস্থ নেতৃত্ব যে কাজগুলো করেছেন আমরা সেটা মনে করছি পুরোপুরি শৃঙ্খলা ভঙ্গ হয়েছে। দল মেনে নিতে পারছে না” । খলিলুর বলেন, “ প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে সেই সমস্ত লোককে আমরা শো কজ করেছি এবং শো কজ উত্তর পেলে সন্তুষ্টজনক হলে ঠিক আছে না হলে দল আগামী দিনে ব্যবস্থা নেবে । সামসেরগঞ্জ ব্লক সভাপতি , টাউন সভাপতি বাইরে বেড়িয়ে মিছিল করে যেভাবে দলের জেলা সভাপতিকে যে ভাষায় কথা বলেছেন সেটা অত্যন্ত নিন্দনীয়। ব্লক সভাপতি এবং টাউন সভাপতিকেও আমরা শো কজ করেছি” ।
শোকজ নিয়ে অবশ্য কিছু জানেন না বলে দাবি করেছেন সামসেরগঞ্জ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি সহিদুল ইসলাম । খলিলুর রহমানের দিকেই পালটা তোপ দেগে সহিদুল ইসলাম বলেন, “ শোকজ করেছে আর কে করেনি সেটা আমার জানা নেই। দিদির নির্দেশকে যিনিই অমান্য করুন না কেন! সে এমএলএ হোক বা এমপি হোক! আর জেলা সভাপতি হোক! দিদির নির্দেশকে যে অমান্য করবে আমি তার বিরুদ্ধে লড়াই করব, প্রতিবাদ করব। এটা আমাকে কেউ রুখতে পারবে না । সেহেতু দিদির নির্দেশকে অমান্য করেছে তার প্রতিবাদ জানিয়েছি” ।
জেলাসভাপতি মিটং’এ ডাকেন না, নির্বাচন নিয়ে খোঁজ রাখেন না বলেও দাবি করেছেন সাহিদুল। সাহিদুল এদিন প্রকাশ্যেই বলেন, শো কজে কিছু আসে যায়না তার, বিধায়ক আমিরুল ইসলামের প্রশংসাও করেন তিনি।শোকজে আমিরুল ইসলাম ও খলিলুর রহমানের দূরত্ব বাড়ে না কমে সেদিকেই নজর রাজনৈতিক মহলের।