রাহি মিত্রঃ বহরমপুরঃ সরষের তেলে রান্না করতে গিয়ে একসময় গৃহিণীদের চোখে ঝাঁঝ লেগে চোখে জল এলে তাঁরা খুশিই হতেন , খুশি হতেন এই ভেবে যে সরষের তেল খাঁটি । সেই সরষের তেলে এখন দামের ঝাঁঝে চোখে জল গৃহিণীদের।বাঙালির সব রান্নার একমাত্র সাথী সরষের তেল আজ ১৯৩ টাকা প্রতি লিটার । মুদিখানা বাবদ বাজেটে যে অংক বরাদ্দ ছিল তা টপকে কোথায় যে চলে গেছে , পেন খাতা নিয়ে বসে মধ্যবিত্ত কর্তা-গিন্নি থমকে তাই ভাবছেন। ক্রমবর্ধমান দ্রব্যমূল্য জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধিতে হাঁসফাঁস অবস্থা নিম্নবিত্ত থেকে মধ্যবিত্ত সকলের । পেট্রোপণ্য জ্বালানি গ্যাস থেকে শাকসবজি ফলমূল সব প্রায় নাগালের বাইরে চলে যেতে বসেছে ।
গৃহবধূ চিত্রা গোস্বামী খান জানালেন , মাত্র 15000 টাকা পেনশন পাই রাজ্য সরকারের কাছ থেকে। সর্বাগ্রে মেটাতে হয় মুদিখানার বিল । আর তা দিনকে দিন বেড়েই চলেছে । দু হাজার টাকা আগে বিল হতো এখন এমাসে দিলাম সাড়ে তিন হাজার টাকা । কি করে সারা মাস চলবে জানিনা। সমবায় ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী জয়শ্রী দত্ত জানালেন, বাড়ি ভাড়ার টাকা আর সামান্য পেনশন থেকে সংসার চলে । সরষের তেলের দাম দ্বিগুণ দিতে হচ্ছে । মাসে যে পরিমাণ তেল লাগাতো তা থেকে কিছু কমিয়েছি । তবে বাকি যা তা তো দিতেই হবে । মুদিখানা বাবদ খরচ প্রায় ২০০০ টাকা বেড়ে গেছে আগের চেয়ে । কি করে খরচে ভারসাম্য আনবো বুঝতে পারছি না । আর সরষে তেল ছাড়া রান্না করব কি ভাবে ? তাই যদি দ্রুত রান্নার তেলের দাম সরকার না কমাতে পারে আমরা মধ্যবিত্তরা আর পেরে উঠব না।
বহরমপুরের জনবহুল রাস্তার মোড়ের মাথাতে মুদিখানা দোকান মালিক জানালেন , সরষের তেলের দাম আজ যা দেখছেন তা আরো বাড়বে । কমার কোন খবর আমাদের কাছে নেই। তবে ভোজ্য তেল হিসেবে পাম অয়েল আর সোয়াবিন তেলের দাম একটু কমেছে। ১৩০ টাকা আর ১৪০ টাকা প্রতি লিটার দরে ।
অপর এক মুদিখানা দোকান মালিক যিনি মূলত পাড়ার মধ্যেই দোকান করে ব্যবসা করেন । জানালেন স্টকিস্ট এর কাছ থেকে কিনে এনে ব্যবসা করি । বহুদিনের পুরনো দোকান । লোকের বিশ্বাস ভরসা আছে দোকানে। তাই বলছি আমাদের এত দামে সরষের তেল বিক্রি করতেও খারাপ লাগে । কিন্তু কি করব বাজার দর মেনে তো ব্যবসা করতে হবে।
খাঁটি সরষের তেলের ঝাঁঝে চোখে জল আসুক । তবে দামে হাতে ছ্যাকা যেন না লাগে , ক্রেতা থেকে বিক্রেতা বাড়ির কর্তা থেকে গৃহিণী সকলেই কায়মনোবাক্যে এটাই চাইছেন ।