নিজস্ব প্রতিবেদন: ৮ ই নভেম্বর মুর্শিদাবাদের খড়গ্রামে সদ্য প্রয়াত জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষের স্মরণ সভায় শুভেন্দু অধিকারীকে মুখ্য বক্তা হিসেবে আমন্ত্রণ ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক। মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে এই স্মরণ সভার আয়োজন করা হয়েছে খড়গ্রামের কৃষক বাজার সংলগ্ন মাঠে। এই কর্মসূচি নিয়ে সরাসরি প্রশ্ন তুলেছেন জেলা তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব। জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি, সাংসদ আবু তাহের খান প্রশ্ন তুলেছেন জেলা পরিষদের তো আলাদা অস্তিত্ব নেই, সেটাও পার্টির একটা উইংস, জেলা পরিষদ পার্টি দ্বারা পরিচালিত। মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদ তৃণমূল কংগ্রেসের। সমস্ত সদস্য তৃণমূল কংগ্রেসের। সুতরাং এখানে তৃণমূল কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে জেলা পরিষদের আলাদা কোন অস্তিত্ব নেই। ফলে জেলা পরিষদের ব্যানারে কেন এই ধরনের অনুষ্ঠান হবে? যা হবে পার্টির ব্যানারে পার্টির মাধ্যমে আলাপ আলোচনা করেই হবে।
জেলা পরিষদের সভাধিপতি মোশারফ হোসেন বলেন, আগামি রবিবার ৮ ই নভেম্বর ৩ টের সময় আমরা স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত করছি জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে। এই স্মরণ সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। আমরা সেই সভা জেলা পরিষদের উদ্যোগে করব দলমত নির্বিশেষে। মফিজুদ্দিন সাহেব আমাদের জেলা পরিষদের সহকর্মী আমাদের বন ও ভুমি কর্মাধ্যক্ষ ছিলেন। পার্টি একদিকে আমাদের সরকারি কাজ, কর্মসূচি একদিকে। জেলা পরিষদ একটা সেলফ গভর্নমেন্ট, সেই জায়গায় আমরা আমাদের জেলা পরিষদের উদ্যোগেই স্মরণসভাটা করছি। পার্টি আর জেলা পরিষদকে এক করে দেওয়াটা ঠিক নয়।
এই মুহূর্তে স্মরণ সভায় শুভেন্দু অধিকারীর মুর্শিদাবাদে আসাকে ঘিরে শুভেন্দু অনুগামীদের সাথে তৃণমূল নেতৃত্বের চাপানউতোর ঘিরে রাজনৈতিক তরজা জোরকদমে। বিরোধীরা এই তরজা উপভোগ করছে। কটাক্ষের সুর মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেস মুখপাত্র জয়ন্ত দাসের গলায়। তার বক্তব্য, শুভেন্দু বাবুর স্মরণ সভায় আসা নিয়ে ইতিমধ্যেই তৃণমূল কংগ্রেস ভার্সেস তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত জেলা পরিষদ যে দুভাগে বিভক্ত এটা স্পষ্ট। বিজয়া সম্মিলনী হোক বা যে কোন ব্লকে যা কিছু হচ্ছে তৃণমূলের গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব মানুষের চোখের সামনে এমন ভাবে চলে আসছে যে তৃণমূল সম্পর্কে মানুষ ভাবনা চিন্তা তো দুরের কথা তৃণমূল শব্দটা উচ্চারন করতেই মানুষের কষ্ট হচ্ছে ।
বিজেপি দক্ষিন সাংগঠনিক মুর্শিদাবাদ জেলা সভাপতি গৌরীশংকর ঘোষ বলেন, পশ্চিমবঙ্গে এখনও পরিবহন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীই রয়েছেন , তিনি এখনও পদত্যাগ করেননি। পরিবহন মন্ত্রী তার সরকারের, এখানে আসছেণ তার দলের নেতারা বাঁধা দিচ্ছে এটা কখনোই শুভ লক্ষন নয় , এটা অশুভ লক্ষন, গণতন্ত্রের পক্ষেও অশুভ লক্ষন।
২১ এর বিধানসভার আগে ২০ শে তৃণমূলের অন্দরের এই কোন্দল প্রকাশ্যে আসায় চরম অস্বস্তিতে তৃণমূল শিবির। একদিকে প্রকাশ্যে গোষ্ঠী কোন্দল অন্যদিকে সেই কোন্দল তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করছে বিরোধীরা। আগামি দিনে মুর্শিদাবাদের রাজনীতি কি বলে- সেটাই এখন দেখার।
স্পেশ্যাল রিপোর্ট, মধ্যবঙ্গ নিউজ