সেখ আনিস জলঙ্গী ২৮ শে ফেব্রুয়ারী : সাগরদিঘি, মুর্শিদাবাদের পর এবার জলঙ্গীতেও দলের কর্মীদের রোশের মুখে খোদ তৃণমূল বিধায়কই । বিধানসভা ভোটের মুখে প্রকাশ্যে ফের দলীয় দ্বন্দ্ব ।
সোমবারই তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা হতে পারে ।তার আগেই জলঙ্গীর বিধায়ক আব্দুর রাজ্জাকে যেন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী না করা হয় তার জন্য কোমর বেঁধে প্রকাশ্যে বিরোধিতা করে সভা করলেন জলঙ্গী তৃণমূলেরই একাংশ। ভোটের মুখে জলঙ্গীর তৃণমূল কংগ্রেস নেতা থেকে জনপ্রতিনিধিরা প্রকাশ্যে বিদ্রোহে চরম অস্বস্তিতে জেলা তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব। বিধায়ক আব্দুর রাজ্জাক এই ঘটনার পিছনে জেলার এক ‘কোর’ কমিটির এক সদস্যের গোপনে ইন্ধন রয়েছে বলে মনে করছেন । বিরোধীরা বলছেন ‘দলবদলু’দের এই হালই হবে। এটাই সিপিআই(এম) থেকে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়া বিধায়কের পাওনা বলেও কটাক্ষ করতে ছাড়ছেন না তারা । বিধানসভা ভোটের মুখে তৃণমূলের ফের ‘জলঙ্গী কাঁটা’ বেশ কিছুদুর এগোবে বলেই মত রাজনৈতিক মহলের।
অনেক টালবাহানার পরেও জলঙ্গী উত্তরের তৃণমূল ব্লক সভাপতির চেয়ারে কাউকেই বসাতে পারেনি দল। প্রদীপ মণ্ডলকে কনভেনার করে ১৫ জনের কমিটি করা হয় । সেই প্রদীপ মণ্ডলের নেতৃত্বেই এবার বিদ্রোহ জলঙ্গীতে । তাদের দাবি তাদের সাথে দশটি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে আটটি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কুড়ি জন পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য একজন জেলাপরিষদের সদস্য ও এলাকার বহু বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত হয়েছেন বিধায়কের বিরুদ্ধে আয়োজিত সভায়। তাদের একটাই দাবি, শুভেন্দু অনুগামী বিধায়ককে কোন মতেই যেন ফের প্রার্থী না করা হয়। যদি দল তাদের এই আবেদন না মেনে ফের বিধায়ক আব্দুর রাজ্জাকেই প্রার্থী করে, প্রয়োজনে তারা নির্দল প্রার্থী দিয়ে প্রতিদ্বন্দিতা করবেন। বিরোধিতা করবেন দলে যোগ দেওয়া বিধায়কের।
যা শুনে বিধায়ক রাজ্জাকের সাফ জবাব, পিকের লোকজন সব দেখছেন । তারাই দিদির কাছে সঠিক রিপোর্ট দিচ্ছেন । দিদি আমাকেই ফের জলঙ্গী থেকে প্রার্থী করছেন এই আশা আমার রয়েছে।
২০১৬ সালে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীকে হারিয়ে বিধায়ক হন আব্দুর রাজ্জাক। ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে তৎকালীন পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে তৃণমূলে যোগদেন তিনি। জলঙ্গীর সাহেবনগরে গ্রামবাসীদের উপর গুলিচালনার ঘটনায়, বিধায়কের বয়ান নিয়েও শুরু হয় বিতর্ক। রাজ্জাক বিরোধীদের অভিযোগ, এখনও শুভেন্দু অধিকারীর সাথে সম্পর্ক রেখে চলছেন বিধায়ক।
এবার ভোট আসতে আড়াআড়ি ভাগ হয়েছে জলঙ্গীর তৃণমূল কংগ্রেস।
দলের এক অংশের দাবি, দিদির কাছে পৌঁছে গিয়েছে তাদের কথা। বদলাবেই প্রার্থী।
তবে, পিকের ভরসায় নদী পেরোবেন রাজ্জাক ? সেই প্রশ্নই ঘুরছে জলঙ্গী জুড়ে।