মুর্শিদাবাদে আল কায়দার জাল কতদূর ! তৎপর NIA

Published By: Madhyabanga News | Published On:

নিজস্ব প্রতিবেদন: মুর্শিদাবাদ ও জঙ্গি যোগ- ক্রমশই জোড়াল হচ্ছে। সোমবার মুর্শিদাবাদের রানীনগরের নাজরানা গ্রাম থেকে আল কায়দা জঙ্গি সন্দেহে আরও একজনকে গ্রেপ্তার করল এন আই এ। ধৃতের নাম আব্দুল মোমিন মণ্ডল। এলাকার ত্রুন যুবদের মগজ ধোলাইয়ের কাজ করত সে, এন আই এ এর হাতে এসেছে নানান সুত্র। এর আগেও রানীনগরের নওদাপাড়া থেকে দু জনকে গ্রেপ্তার করেছে এন আই এ। তাহলে তাদের সাথে কি মোমিনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল? উঠছে সেই প্রশ্নও। জানা যায় রানীনগরের নাজরানা গ্রামে বাড়ি আব্দুল মোমিন মণ্ডলের। ডোমকলের রায়পুরে এক মাদ্রাসায় পড়াত সে। ধৃত আব্দুল মোমিনের পরিবার কোন ভাবেই মানতে নারাজ- জঙ্গি যোগের বিষয়। ধৃতের মা বলছেন, তার ছেলে নির্দোষ।

জানা যায়, ধৃত আব্দুল মোমিন মণ্ডল ডোমকলে রায়পুর দারুলহুদা ইসলামিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক। কয়েক বছর ধরে সেখানেই শ্বশুর বাড়িতে থেকে শিক্ষকতা করত সে। ধৃতের স্ত্রীর দাবি, দু মাস থেকে বন্ধ মাদ্রাসা। ডোমকল, জলঙ্গি দু জায়গায় ডেকে নিয়ে যাওয়া হয় তার স্বামীকে। ছোটদের পড়াতেন। ভিতু স্বভাবের ছিলেন। বিনা দোষেই গ্রেপ্তার করে এন আই এ। স্বামী না ফিরলে সন্তানদের নিয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেওয়া ছাড়া উপায় নেই।

প্রসঙ্গত জাতীয় তদন্ত কারী সংস্থা সপ্তাহখানেক ধরেই জলঙ্গিতে ঘাটি গেড়েছে। বি এস এফ ক্যাম্পে বেশ কয়েকজনকে ডেকে দফায় দফায় জেরাও চলে। আব্দুল মোমিন মণ্ডলকে ডেকেও দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদও চলে। রায়পুরের বাসিন্দারাও মাদ্রাসার মৌলবিকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় হতবাক। স্থানীয় এক বাসিন্দা বলছেন, কোনরকমে টাকা তুলে মাদ্রাসা চলে। তেমন কোন উন্নতি নেই মাদ্রাসার। জঙ্গি যোগের কোন সম্পর্কই নেই।

মাদ্রাসার কোষাধ্যক্ষ বলছেন, অত্যন্ত ভালো মানুষ ছিলেন আব্দুল মোমিন মণ্ডল। কি কারনে তাকে গ্রেপ্তার করা হল- জানা নেই। সন্তান স্ত্রী নিয়ে সংসার ক্রুক সেটাই চাই।

গোয়েন্দারা মুর্শিদাবাদ এবং কেরল থেকে ৯ জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করে আল কায়দা মডিউলের অনেকেরই নাম পেয়েছে। উল্লেখ্য, গত সেপ্টেম্বরে এন আই এ কেরলের এরনাকুলাম ও মুর্শিদাবাদে বিভিন্ন স্থানে এক যোগে হানা দিয়ে গ্রেপ্তার করে ৯ জনকে। এই আন্তঃরাজ্য আল কায়দা মডিউলের অপারেটিভরা দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সন্ত্রাসবাদি হামলার ছক কষেছিল। সেপ্টেম্বরেই মুর্শিদাবাদ থেকে ৬ জনকে এবং তিনজনকে এরনাকুলাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। আল কায়দায় মডিউলের সাথে যুক্ত কারা? খোঁজে চলছে তল্লাশি। যদিও এন আই এ র তল্লাশি অভিযানের মাঝেই অনেকেই যে বাংলাদেশে গা ঢাকা দিতে পারে- সেই আশংকাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। অন্যদিকে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা সুত্রে খবর বাংলাদেশ থেকেও জঙ্গিরা জলঙ্গিতে এসে জঙ্গি ভাবধারা প্রচারের চেষ্টা চালাচ্ছে। তাদের ওপরেও তীক্ষ্ণ নজর রেখেছেন তদন্তকারীরা। এন আই এ সুত্রে জানা যাচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় স্লিপিং সেল গড়ে তুলছে আল কায়দা। যার অন্যতম কেন্দ্র মুর্শিদাবাদ। প্রশ্ন হচ্ছে- জেলার কোথায় কোথায় এই জাল ছড়িয়ে আছে? কাদের মদতে এতবড় র‍্যাকেট চলছে? সামনে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। নাম জড়াচ্ছে দুই স্বেচ্ছা সেবী সংস্থার নামও। তাহলে এই সংস্থাদের তরফে কি অর্থ সংগ্রহ করে টাকা যেত জঙ্গি সংগঠনের কাছে- যে ধোঁয়াশা রয়েইছে। জঙ্গি যোগে এন আই এ এর তৎপরতায় আর কি কি তথ্য সামনে আসে সেটাই এখন দেখার।

ব্যুরো রিপোর্ট, মধ্যবঙ্গ নিউজ