অর্ঘ্যপ্রতিম বিশ্বাস : বহরমপুর ২৩ শে মার্চ – মুর্শিদাবাদের দু:সময়ের কংগ্রেস নেতৃত্বকে এখন চিনতে পারছেন না উচ্চ নেতৃত্ব। আসন্ন বিধানসভা ভোটের আগে ‘তাদের’ অবহেলা করায় মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন প্রান্তে কংগ্রেসের বিদ্রোহ ঘিরে দলের মধ্যে চরম অসন্তোষ ও অস্বস্তি। ক্ষোভ জানাচ্ছেন পুরোনো কংগ্রেস নেতা কর্মীরাই।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর গড় মুর্শিদাবাদে বিধানসভা ভোটের আগে এই নজীরবিহীন পরিস্থিতি গত দু’দশকে দেখেনি মুর্শিদাবাদের কংগ্রেস কর্মীরা। অধীর চৌধুরীর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে বিদ্রোহ কার্যত নজীরবিহীন ঘটনা হলেও এখন বিধানসভা ভোটের আগে মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি থেকে সুতি সর্বত্রই এই ছবি চোখে পড়ছে প্রকাশ্যেই।
সুতির কংগ্রেস প্রার্থী হুমায়ূন রেজার বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করেছেন কংগ্রেসেরই একাংশ। তাতেও দলের হুঁশ না ফেরায় সুতি ব্লক কংগ্রেস সভাপতি আলফাজুদ্দিন বিশ্বাস তার অনুগামীদের নিয়ে শেষ পর্যন্ত কংগ্রেস দল ছাড়লেন।
দল ছেড়ে সুতির কংগ্রেস প্রার্থী শিল্পপতিদের কথায় চলেন বলে প্রকাশ্যে অভিযোগ তুলে বিড়ি শ্রমিকদের পক্ষে দাঁড়িয়ে নির্দল প্রার্থী দাঁড় করাবেন বলে ঘোষণা করেছেন। বিড়ি শ্রমিক অধ্যুষিত সুতিতে আলফাজুদ্দিনের মনোনিত ‘নির্দল’ কী প্রভাব ফেলে তার দিকে তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল।
একই অবস্থা সাগরদিঘিতেও। কংগ্রেস প্রার্থীর বিরুদ্ধে মিছিল করে কুশপুত্তলিকা পুড়িয়ে প্রকাশ্যে রাস্তায় কংগ্রেস নেতা কর্মীরা। তাদেরও একটাই দাবি হয় সাগরদিঘির বহিরাগত প্রার্থী বদলাও না হলে আমরাও বড় সিদ্ধান্তের পথে যেতে বাধ্য হব।
একই ভাবে অভিমান আর ক্ষোভে ফুঁসছেন বড়ঞার বিধায়ক প্রতিমা রজকও।
তারও আক্ষেপ এত প্রলোভন,অত্যাচার সত্ত্বেও দল বদল করলাম না, কংগ্রেসেই থাকলাম। শেষ পর্যন্ত আমায় মনোনয়ন দেওয়া হল না। এখানেও বহিরাগত একজনকে এনে পুনর্বাসন দেওয়া হল অথচ দল আমার কথা ভাবলো না।
একই ভাবে নওদায় তৃণমূল থেকে সদ্য কংগ্রেসে যোগ দেওয়া সভাধিপতি মোশারাফ হোসেন কংগ্রেসের প্রার্থী হওয়ায় নওদাতেই দলের একাংশই ক্ষোভে রয়েছে । তাদের বক্তব্য ২০১৮ সালে নওদাতে পঞ্চায়েত ভোটের সময় এই সভাধিপতির নেতৃত্বে ভোট লুঠ করা হল।আক্রান্ত হলেন কংগ্রেস নেতা কর্মীরা। ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটের সময় এই সভাধিপতিই অধীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে নেতৃত্ব দিয়ে তৃণমুলকে এই ব্লক থেকে জেতালেন। তার পর সেই সভাধিপতিই আবার কংগ্রেস প্রার্থী বিধানসভায়। আমরা হয়তো মেনে নিচ্ছি কিন্তু সাধারণ কংগ্রেস কর্মীদের কি ভাবে বোঝাবো ‘বছর ঘুরতেই জাত শত্রু পরম মিত্র হয়ে গেল’। আরে দাদা আমরা সাধারণ নেতারা এখন দিশেহারা হয়ে গেছি কিছুই বুঝতে পারছিনা।
সব নিয়ে গোটা ঘটনায় ভোটের মুখে চরম অস্বস্তিতে মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেস ।