মুর্শিদাবাদের আম বাগানে মনের মানুষের খোঁজ । ভাগীরথী বাউল ফকির উৎসব

Published By: Madhyabanga News | Published On:

মধ্যবঙ্গ নিউজ ডেস্কঃ শনিবার সন্ধ্যায় নবাবের শহর মুর্শিদাবাদে বৃষ্টির গন্ধ মাখা আম বাগানে যেন ফিরে এল বসন্ত । সন্ধ্যা সবে ঘনিয়ে এসেছে। মুর্শিদাবাদ শহরের ঐতিহাসিক পার্ক আমবাগানে মাটির মঞ্চে তখন গান গাইছেন অনাথ বন্ধু ঘোষ । গেয়ে উঠলেন ভক্তের মনে ভগবানের গান। শোনালেন জয়দেবের আখ্যান, মধু ঋতু বসন্তের বর্ণনা। প্রেম তরঙ্গে ভাসালেন দর্শক, শ্রোতাদের। সন্ধ্যা থেকেই ভাগীরথী বাউল ফকির উৎসবে গানের আসরে ছিল মনের মানুষের খোঁজ।
“মানুষ খেলা করে বিরজার পারে”, গাইলেন মাকি কাজুমি। যেন ভাবের ঘরে সন্ধান নিতে বললেন মনের মানুষের। রাত গভীর হতে দোতারার সুর মূর্ছনায় রাতের আকাশে তারা ফোটালেন মনসুর ফকির। গেয়ে উঠলেন “এখনো সেই বৃন্দাবনে বাঁশি বাজে রে। ঐ বাঁশি শুনে বনে বনে ময়ূর নাচে রে”। গান শুনতে, সুরে ভাসতে আম বাগানে ভিড় করেছিলেন জেলার বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ।

শনিবার সকালে প্রভাত ফেরীর মধ্যে দিয়ে শুরু হয় উৎসব। এই উৎসবের অন্যতম উদ্যোক্তা বাদশা মৈত্র জানান, “মানুষের সাড়া পেয়ে আমরা অভিভূত”।
উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন , মুর্শিদাবাদের আলকাপ, বাউল ফকিরি গান, মালদার গম্ভীরায় জাতপাতের বেড়া নেই। লোক সংস্কৃতির উঠোনে সব ধর্মের মানুষজন একসঙ্গে পাত পেড়ে খান। একসঙ্গে ঘুমোন। আসরে একসাথে গান ধরেন -‘ শুনহে মানুষ ভাই —-‘ এদের একটাই পরিচয়, তাঁরা শিল্পী। এই ভাবনার অনুসারী হয়েই শুরু হয়েছে ভাগীরথী বাউল ফকির উৎসব।
অশান্ত সময়ে ভাগীরথী বাউল ফকির উৎসব আক্ষরিক অর্থেই হয়ে উঠছে মানুষের মিলনমেলা। শনিবারের মতো রবিবারও সারাদিনই হবে শিল্পীদের আলাপচারিতা। আর সন্ধেয় থাকবে শুধুই গান আর গান। কোনরকম সংকীর্ণতার বেড়া ছাড়াই ।