চিরঞ্জীত ঘোষঃ বহরমপুরঃ ২৭ মার্চঃ ভোট আছে। জল নেই। তাই আছে ভোর থেকে লাইন। জল নিয়ে পাড়ায় পাড়ায় দ্বন্দ্ব। আছে গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে আসা তীব্র জলকষ্ট। আর আছে সব দেখেও না দেখা উপরমহল তবে, নীচের দিকে নজর যায় নেই উপর মহলের। তাই, চোখে পড়ে না বস্তিবাসীর যন্ত্রণা। বলছিলেন কোন এক কালে বিহার থেকে এই বাংলায় কাজের খোঁজে আসা মালতী রায় দাস। প্রায় বিশ বছর আছেন বহরমপুরের সুভাষ কলোনীতে।
ভোট এসেছে গিয়েছে কতো। পাল্টায়নি জলের ছবি।
এই ছবি খোদ জেলা সদর বহরমপুরের ২০ নম্বর ওয়ার্ডের সুভাষ কলোনীতে।
এই কলোনিতে বাস করে হাজারেরও বেশি পরিবার। প্রত্যেকেই খেটে খাওয়া, শ্রমজীবী মানুষ। দিন এনে দিনে খান। ভোট এসেছে এই নুন আনতে পান্তা ফুরানো সুভাষ কলোনিতেও। নানা কথা বলছেন হরেক রঙের নেতারা। তবে, জলের খবর নেই কারো কাছেই।
জলকষ্টই সুভাষ কলোনির বাসিন্দাদের প্রধান সমস্যা। এছাড়াও বস্তি জুড়ে না কাঁটা অবস্থায় আছে বড় বড় গাছ, ডালপালা ছাঁটা না হওয়ায় ঝুপড়ি, বাড়ির চাল ভেঙে যাওয়ার আশংকা প্রতিদিনের।
বেহাল দশা রাস্তারও। আছে জমির পাট্টা না পাওয়া নিয়ে ক্ষোভ ।
তবে এই বস্তিতে টিউবওয়েলের সংখ্যা হাতে গোনা। যে কটি জায়গায় টাইম কল আছে- তা একপ্রকার না থাকার মতোই ।
কলের মুখ ভেঙে গিয়েছে বহুদিন। সারানোর লোক নেই। ড্রেনের ওপরেই ভাঙা মুখে পাইপ লাগিয়ে জল ভরা হয় পাত্রে। রাস্তার ওপর দিয়ে গড়িয়ে যাওয়া জল মগে করে ভর্তি করা হয় বালতিতে-মাথার ওপর চড়া রোদ থাকলেও উপায় নেই। জল যে জীবন। তাই জীবন বাঁচাতে এভাবেই জল যন্ত্রণা নিয়েই দিন কাটাচ্ছেন সুভাষ কলোনির মালতি দলোই , অর্চনা দাসরা।
নেতা এসেছেন, ভোট ভিক্ষা করেছেন। আমরা শুধু বলেছি কল করে দেন, পাট্টা দেন; আর তো কিছু চাই না। ভোট চিত্রের সহজ ব্যাখ্যা দিচ্ছেন এই বস্তিরই বাসিন্দা তুলসী মিস্ত্রী।
এটুকুই বলুনতো, এটুকুই তো চাই। নেতা কাউন্সিলাররা কান করেন না। অসহায়তার সুর পাশে দাঁড়ানো নুরজাহান বিবির গলাতেও।
জানেন না কবে হবে এই জল যন্ত্রনার সমাধান।
ভোটের খেলায় আদৌ জল নিয়ে ভাববে তো ? সংশয় সুভাষ বসুর নামে গড়া কলোনি জুড়েই।