ভোটের যেন তাল না কাটে ! ঐক্যের ছবি সতর্ক তৃণমূলে

Published By: Madhyabanga News | Published On:

মধ্যবঙ্গ নিউজ ব্যুরোঃ ০৪ মার্চঃ  দিন ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। বেজেছে ভোটের বাদ্যি । তবে,  তৃণমূলের  একেক বাদ্যে একেক সুরে,  তাল কাটছে প্রায়শই। নেতায় নেতায় পাল্লা দিয়ে চলছে তরজা। মুর্শিদাবাদে দলীয় দ্বন্দ্বে ছন্দপতন হবে  নাতো ? আশঙ্কায় ঘুম উড়েছে নেতাদের।

বৃহস্পতিবারই সাগরিঘিতে  দলের বিধায়কের বিরুদ্ধ রাস্তায় নামেন তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা। যে কথা বলার কথা বিরোধী দলের, সেই কথাই শোনা গেল বিধায়ক সুব্রত সাহার নিজের দলের কর্মীদের মুখে। বিধায়ক বদল চেয়ে রাস্তার দুই পাশে পোস্টারও সাঁটালেন তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা। স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের দাবি, ভূমিপুত্র কাউকে করতে হবে প্রার্থী। যদিও ২০১১ সাল থেকেই এই কেন্দ্রে জয়ে হচ্ছেন তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী সুব্রত সাহা। এদিন সাগরদিঘি  ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি নুরুজ্জামান সেখের নেতৃত্বে চলে এই কর্মকান্ড। কর্মসূচীতে যোগ দেন সাগরদিঘি পঞ্চায়েত সমিতির  ও গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রতিনিধিরা।

বিধায়ক বদল চেয়ে সাগরদিঘিতে পোস্টারিং তৃণমূল কর্মীদের

প্রার্থী বদল চেয়ে কর্মীসভাও সেরে ফেলেছেন মুর্শিদাবাদ বিধানসভা এলাকার এক অংশের তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা। মঙ্গলবার বিকেলে জিয়াগঞ্জের  তৃণমূল নেতা কর্মীরা স্থানীয় বিধায়ককে বাদ দিয়েই  কর্মী সভায় মিলিত হন।

এই সভায় স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন জিয়াগঞ্জ- আজিমগঞ্জ পৌরসভা ও মুর্শিদাবাদ পৌরসভার প্রশাসক দুই তৃণমূল নেতা প্রসেনজিত ঘোষ ও বিপ্লব চক্রবর্তী, মুর্শিদাবাদ-জিয়াগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মুর্শিদা বেগম,  ছ টি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান এবং অধিকাংশ এলাকার তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব। এই কর্মীসভা থেকে দাবী উঠল বহিরাগত নয় ভূমিপুত্রকেই চাই বিধায়ক হিসেবে। এদিন জিয়াগঞ্জে  কর্মী সমর্থকে ঠাসা প্রেক্ষাগৃহে বিভিন্ন অঞ্চলের তৃণমূল নেতৃত্ব স্থানীয় বিধায়কের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন এবং তারা মুর্শিদাবাদ বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থী পরিবর্তনের দাবী করেন।

জিয়াগঞ্জে তৃণমূলের সভা প্রার্থী বদল চেয়ে

 

যদিও নিজের প্রার্থীপদ নিয়ে কার্যত কনফিডেন্ট মুর্শিদাবাদের বিধায়ক শাওনী সিংহ রায়। কংগ্রেসের টিকিটে জেতা শাওনী, যোগ দিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসে।

একই ছবি জলঙ্গীতেও।

সই সাবুদ করে দলের উচ্চ নেতৃত্বের কাছে চিঠি লিখেছেন দলের কর্মীরা। বিধায়ক আব্দুর রাজ্জাক মণ্ডল  অবশ্য এর পিছনে নেতৃত্বের এক অংশের ইন্ধন খুঁজেছেন।

তবে  এর মাঝেই ভোটের মুখে দলের  ঐক্যবদ্ধ চিত্র তুলে ধরতে মরিয়া তৃণমূল। সেই ছবিই ধরা পড়ল শহর বহরমপুরে নেতা কর্মীদের জোট বেঁধে দলের প্রচারে ।বৃহস্পতিবার  রীতিমতো “খেলা হবে” র স্লোগান মাইকে বাজিয়ে হয় সভা। ছিলেন জেলা সভাপতি আবু তাহের খান।

বৃহস্পতিবার বহরমপুরে তৃণমূলের সভা

চাপা উত্তেজনায় রুদ্ধশ্বাস প্রতীক্ষায় বহরমপুরে তৃণমূল কংগ্রেস  নেতৃত্ব বলছেন, কে কোথায় প্রার্থী হবে সেটা ফ্যাক্টর নয়, সব কেন্দ্রে  দিদি নিজেই প্রার্থী।

জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি আবু তাহের খানের সাফ বয়ান, ” আমরা জেলা থেকে  যে প্রার্থী তালিকার সুপারিশ রাজ্যে করেছি, তাতে আমরা নতুন প্রজন্মকে বেশি দায়িত্ব দেওয়ার কথা ভেবেছি। চাইছি নতুন  মুখ আসুক। মহিলাদের আলাদা করে গুরুত্ব দিয়ে ভাবা হচ্ছে। সেরকম দাবিই উচ্চ নেতৃত্বের কাছে রাখা হয়েছে। আশা রাখি, দল মর্যাদা দেবে”। প্রত্যাশা আর পাওনার মিল নিয়ে চাপ আছে মানছেন  তাহেরও, জেলা থেকেই প্রায় দেড়শো জনের বায়োডাটা জমা পড়েছে, রাজ্যেও বায়োডাটা জমা পড়েছে। দল বিবেচনা করছে।

বহরমপুরের প্রার্থী হিসেবে নাম ভাসছে নাড়ুগোপাল মুখোপাধ্যায়ের। তার অবশ্য মন্তব্য, ” প্রার্থী কে হবে না হবে সেটা বিচার্য বিষয় নয়। তৃণমূলকে জেতানোই একমাত্র লক্ষ্য। ২৯৪ টা কেন্দ্রেই দিদি নিজে প্রার্থী”।

একই সুর অশোক দাস,  অরিত মজুমদার, শাহনাওয়াজ বেগমদের গলায়।

ঘাসের উপর জোড়াফুলের প্রতীকে যেই প্রার্থী হোক। তাদেরকেই জেতাবেন বলেই আত্মবিশ্বাসী দলের নেতারা।

তবে, প্রার্থী ঘোষনার পর ঐক্যের তাল অটুট থাকে কতোটা সেদিকেই নজর সব মহলের।