ভারত আজ রত্নহীন – সমাপ্তি এক অবিস্মরণীয় অধ্যায়ের

Published By: Madhyabanga News | Published On:

নিজস্ব প্রতিবেদন: ভারত আজ রত্নহীন, এক অবিস্মরণীয় অধ্যায়ের সমাপ্তি। প্রথম বাঙালি রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী হতে না পারলেও দিল্লীতে পাওয়ার করিডোরে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন তিনি। অগাধ পাণ্ডিত্য, চান্যকের মস্তিষ্ক, সমস্ত দলের শ্রদ্ধা আদায় করে নিয়েছিলেন তিনিই। রাজনীতির অলিন্দে সকলের কাছেই অত্যন্ত শ্রদ্ধার এবং অনুসরণীয় ছিলেন তিনি, তিনি প্রনব মুখোপাধ্যায়। ভারতের বর্ণময় রাজনীতির এক কিংবদন্তি চরিত্র। ইন্দিরা গান্ধী, নরসিমা রাও কিংবা মনমোহন সিং- তিনি ছিলেন সরকারের ক্রাইসিস ম্যানেজার। আজ আবারও একবার ফিরে দেখা তাঁর রাজনৈতিক জীবনের কিছু মুহূর্ত।

বর্ষীয়ান রাজনীতিক প্রনব মুখোপাধ্যায়, ভারতের প্রথম বাঙালি রাষ্ট্রপতি, ২০১২ সালে দেশের ১৩ তম রাষ্ট্রপতি পদে দায়িত্ব নেন। ২০১৭ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর রাজনৈতিক কর্মজীবন প্রায় ছয় দশকব্যাপী। সকলের প্রিয় পলটু দা থেকে প্রেসিডেন্ট হয়ে ওঠার এ এক সুদীর্ঘ যাত্রা। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা, বিভিন্ন সময়ে ভারত সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকের ভারপ্রাপ্ত মন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেছিলেন। ২০১২ সালে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের আগে প্রনব মুখোপাধ্যায় ২০০৯ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ছিলেন ভারতের অর্থমন্ত্রী। ১৯৩৫ সালের ১১ ই ডিসেম্বর, বীরভূমের মিরাটি গ্রামে জন্ম প্রনব মুখোপাধ্যায়ের। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাস ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ও এল এল বি ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৬৯ সালে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন প্রনব মুখোপাধ্যায়। তাঁর আগে শিক্ষকতা এবং সাংবাদিকতার সাথে যুক্ত ছিলেন। এরপর রাজনৈতিক কর্মজীবনে তাঁর দ্রুত উত্থান শুর হতে থাকে। কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার পর মন্ত্রী হন ১৯৭৩ সালে। আশির দশকের মাঝামাঝি সময়ে একবার কংগ্রেস থেকে বিতাড়িত হন। তবে ফিরে আসেন ১৯৮৯ সালে। ১৯৮০ থেকে ৮৫ পর্যন্ত তিনি রাজ্যসভার দলনেতাও ছিলেন। দলের প্রতি আনুগত্য ও অসামান্য এই বাঙালি রাজনীতিবিদকে কংগ্রেস দল এমনকি দলের বাইরেও বিশেষ শ্রদ্ধার পাত্র করেছে। দেশের প্রতি অবদানের জন্য তাকে ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান ‘পদ্মবিভূষণ’ ও শ্রেষ্ঠ সাংসদ পুরষ্কারেও ভূষিত করা হয়েছে। 2019 এ ‘ভারতরত্ন’ সম্মানে ভূষিত হন প্রনব মুখোপাধ্যায়। ২০০৪ সালে ভোটে জিতিয়ে প্রথম বার লোকসভায় পাঠিয়েছিল জঙ্গিপুর। তারপর ২০০৯ এ আরও একবার জয় এসেছিল লক্ষাধিক ভোটে। কখনো দাদা কখনো কাকু- কেউ বা প্রনব বাবু- এভাবেই ভালোবেসে ডাকতেন বহু মানুষ। ২০১২ সালে প্রনব বাবু লোকসভা ছেড়ে রাইসিনা হিলসের রাষ্ট্রপতি ভবনের বাসিন্দা হলেন, বর্ণময় এই চরিত্র, সকলের অত্যন্ত শ্রদ্ধেয় মানুষটির জীবনাবসানে শোকস্তব্ধ দেশবাসী। প্রনব বাবু সকলের মনের মণিকোঠায় আজও জীবন্ত। তাঁর প্রয়াণে শোকের আবহের পরে রইল শুধুই বেদনাঘন স্মৃতি।