বেলডাঙ্গায় ‘জামতারা’ স্ক্যাম! উদ্ধার হাজার হাজার ভুয়ো সিম

Published By: Madhyabanga News | Published On:

মধ্যবঙ্গ ডিজিটাল ডেস্কঃ ২১ মার্চঃ একটি অচেনা নম্বর থেকে বেজে উঠল ফোন বা মেসেজ এল, ‘হ্যালো আমি ****** এই কোম্পানি থেকে বলছি, আপনি লটারিতে ********* টাকা জিতেছেন এই টাকাটাকে আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার করতে আপনার ফোনে একটি ওটিপি নম্বর গেছে, সেই নম্বরটি আমাদের বলুন।’ – এইরকম ফোন বা মেসেজ আজকাল খুব বিরল ঘটনা নয়। নিজেদের বা চেনা কারও ফোনে এই জাতীয় ফোন আজকাল আসেই। কেউ ফোন ধরে জাল ফোন বুঝতে পেরে ধমকে কেটে দেন, আবার কেউ বা পড়েন গাড্ডায়। রাতারাতি খালি হয়ে যায় ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট এরকমই বড়সড় জালিয়াতি চলছে সারাবিশ্বে। পিছিয়ে নেই ভারতও। ঝাড়খণ্ডের জামতারা এই জালিয়াতির জন্য খবরের শিরনামে উঠে এসেছিল। এই নিয়ে সম্প্রতি তৈরি হয়েছে ‘জামতারা’ নামে দুটি সিজিনের একটি ওয়েব সিরিজও, যা মুক্তি পেয়েছে নেটফ্লিক্সে। এবার এই জালিয়াতির প্রত্যক্ষ নজির মিলল খোদ মুর্শিদাবাদ জেলার বেলডাঙ্গাতে।

অন্যের মোবাইলের সিম ব্যবহার করে অনলাইনে টাকা জালিয়াতির অভিযোগে বেলডাঙা থানার পুলিশের জালে ধরা পড়ল ৩ জন। এ যেন সিনেমার ঘটনা! বাইরে থেকে দেখতে একটি ছোট মোবাইলের দোকান। যেখানে বিক্রি হয় সিমকার্ড, করা হয় মোবাইল রির্চাজ আরও নানা কিছু। কিন্তু ভিতরে চলে জালিয়াতি, বিভিন্ন মানুষকে ফোন করে, বোকা বানিয়ে টাকা হাতিয়ে নেবার স্ক্যাম। গত সোমবার রাতে বেলডাঙার মীর্জাপুরের এরকমই একটি মোবাইলের দোকানে গোপনে অভিযান চালায় বেলডাঙ্গা থানার পুলিশ হয়। সেখান থেকে উদ্ধার হয় ২৫০০ এরও বেশি জাল সিম কার্ড (যা সাধারণ মানুষের নামে রেজিস্টার্ড), ২৪টি মোবাইল, ২৫টি এটিএম কার্ড, ও অনেক কিউআর স্কোড এবং বায়োমেট্রিক স্ক্যানার।

মঙ্গলবার সকালে ধৃতদের সাত দিনের পুলিশি হেফাজতের আবেদন জানিয়ে কোর্টে পাঠায় পুলিশ। বেলডাঙ্গার এসডিপিও সন্দীপ গড়াই জানান, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে এই ঘটনায় গ্রেপ্তার করা হয় তিনজনকে। সাথে উদ্ধার করা হয়েছে আড়াই হাজারেরও বেশি সিমকার্ড, বেশ কিছু মোবাইল ফোন ও অন্যান্য সামগ্রী। পুলিশের দাবী ধৃতরা বিভিন্ন অনলাইন গেমিং সাইট ও শপিং সাইটে ফেক অ্যাকাউন্ট তৈরি করে তার মাধ্যমে জালিয়াতি করত এই তিনজন। জালিয়াতির এই ঘটনায় আরও কে কে যুক্ত তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

আজ সবার আসক্তি মোবাইল ফোনে আর এই মোবাইল ফোনের মাধ্যমেই চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ছে জালিয়াতির জাল। জেলার বিভিন্ন প্রান্তে সর্বত্র ছড়িয়ে ছোট ছোট দোকান, তার কোনটা ক্রেতার কথা মাথায় রেখে আর কোনটা জালিয়াতির ঠেক তা বোঝা দায়। তাই নিজের সুরক্ষা নিজের কাছে রাখা ও চেনা কিংবা সুরক্ষিত কেউ ছাড়া ব্যক্তিগত তথ্য কারও সাথে ভাগ না করা ই শ্রেয়।