চিরঞ্জীত ঘোষঃ বৃষ্টির দেখা নেই দক্ষিণবঙ্গে। জল না পেয়ে মাঠেই শুকিয়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে পাট গাছ। খাল-বিল শুকিয়ে কাঠ। মাথায় দেনার দায়। কপালে চিন্তার ভাঁজ ক্রমেই চওড়া হচ্ছে মুর্শিদাবাদের পাট চাষিদের।আবহাওয়া দপ্তর বলছে বর্ষা ঢুকতে এখনও বেশ কয়েকদিন দেরি । নেই বৃষ্টিও। ছিটেফোঁটা যা বৃষ্টি হচ্ছে, তাতেই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে কৃষকদের । পর্যাপ্ত জল না পেয়ে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পাটচাষ।
এমনিতেই মন্দা পাটের বাজার। ফলন ভালো হলেও, তার দাম মেলা ভার। এবার সমস্যা বাড়িয়েছে তীব্র জল সংকট। পুকুর, খাল, বিল শুকিয়ে কাঠ। মাঠেই শুকিয়ে যাচ্ছে পাট গাছের পাতা। পাম্পের মাধ্যমে জমিতে সেচ দেওয়ার খরচ খরচ দেড়শো টাকা প্রতি ঘণ্টা। কৃষকদের আশঙ্কা, খুব তাড়াতাড়ি বরুণদেবের কৃপা না হলে পাট গাছ বাঁচানো যাবে না। মেটানো যাবে না দেনাও।
হরিহরপাড়ার কুতুব আলি বলেন, পাট লাগানোর পর থেকে তেমন ভাবে বৃষ্টি নেই, ফলে তেমন ভাবে বাড়েনি পাটার উচ্চতা, পাম্পের মধ্যে দিয়ে জল দিয়ে চলছে জমিতে সেচের কাজ, তবে সেই সেচের খরচ যোগাতে হিমশিম অবস্থা আমাদের। পেট্রোলের দাম এখনও ১০০ টাকার উপরে, ডিজেলের দামও ১০০ টাকার দোড়গোরায়, ফলে সেচের খরচের পাশাপাশি সার বিষের দামও আকাশ ছোঁয়া । খরচ যোগানই দায় হচ্ছে পাট চাষের । বৃষ্টি না হলে আর কিছু দিন পর মাঠেই হয়তো পাট গাছে শুকিয়ে যাবেই বলে মনে করছে পাট চাষিরা।
মুর্শিদাবাদ জেলার হরিহরপাড়া, নওদা, বেলডাঙা, রেজিনগর, জলঙ্গী, ডোমকল, বহরমপুর সহ বিভিন্ন ব্লকে এবারও বহু জমিতে পাট চাষ করেছেন কৃষকরা। হরিহরপাড়ার এক পাট চাষি আলমগীর হোসেন জানাচ্ছেন পাট লাগানোর পর থেকে হাতে গোনা কয়েক দিন বৃষ্টি হয়েছে, সেই বৃষ্টিতে পাট গাছ কয়েক দিন সতেজ থাকলেও বৃষ্টি না হওয়ায় তীব্র দাবদাহে এখন পাট গাছ শুকিয়ে যাচ্ছে। সেচের জল দিয়ে মাটি ভেজানোর কয়েক দিনের মধ্যে সেই জল শুকিয়ে মা আবার ফেটে যাচ্ছে। এই ভাবে আরও কিছু দিন চললে পাট গাছের আর রক্ষা থাকবে না। আবহাওয়া দপ্তর জানাচ্ছে বর্ষা ঢোকার মুখে, তবে এখনও সবাই বৃষ্টির দিকেই তাকিয়ে।