বিএসএফ জওয়ানকে মিছিলে মার, জামিন পেলেন দুই তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী

Published By: Madhyabanga News | Published On:

মধ্যবঙ্গ নিউজ ব্যুরোঃ ১৬ ডিসেম্বরঃ কান্দীতে শাসক দলের মিছিলের সামনে বিএসএফ জওয়ানকে মারের ঘটনায় গ্রেপ্তারের চব্বিশ ঘন্টার মধ্যেই জামিন পেলেন অভিযুক্ত দুই তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী। সোমবার রাতে গ্রেপ্তারের পর মঙ্গলবার দুপুরেই জামিনে ছাড়া পান ধৃত দুজনেই । মঙ্গলবার কান্দি কোর্টে তোলা হলে দুজনের জামিন মঞ্জুর হয়। ১১ ই ডিসেম্বর বি এস এফ জওয়ানকে মারধরের ঘটনা- ভিডিও ভাইরাল হওয়ার তিন দিন পর অর্থাৎ সোমবার রাতে কান্দি ব্লক রোড থেকে দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ধৃতদের মধ্যে সাদ্দাম হোসেন- মহালন্দি ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য এবং অপরজন হিরন মিঞা- গোকর্ণ চাতরার তৃণমূল কর্মী। যদিও প্রথম থেকেই আক্রান্তের পরিবার অভিযোগ তোলে- যাদের বিরুদ্ধে এফ আই আর করেছে পুলিশ সবটাই হয়েছে জামিন যোগ্য ধারায়। একজন সীমান্ত রক্ষা বাহিনীকে বেধড়ক মারধরের ঘটনায় অভিযুক্তরা ছাড়া পেল- শুধু শাসক দলের কর্মী বলেই কি? এই ঘটনায় সঠিক বিচার চায় আক্রান্ত জওয়ানের পরিবার।
কান্দির এই ঘটনায় রাজনৈতিক তরজাও তুঙ্গে। প্রশ্ন উঠছে- কান্দি থানা থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে সিসি টি ভি ক্যামেরায় মোড়া এলাকা সত্ত্বেও অভিযুক্তদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারে এতো টালবাহানা কীসের ? দ্বিতীয়ত জামিন যোগ্য ধারায় মামলাই বা করা কীসের ভিত্তিতে? সব নিয়েই রাজনৈতিক মহলেও চড়ছে সমালোচনার পারদ। বিরোধীদের কটাক্ষ- শাসক দলের মিছিলে দলীয় কর্মীদের একাংশ এই ঘটনায় জড়িত বলেই কি ধামাচাপা দেওয়ার প্রচেষ্টা? মঙ্গলবারই বহরমপুরে সাংবাদিক বৈঠক করে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি জানান, মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চিঠি দিয়েছেন। বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জবাব না পেলে প্রধানমন্ত্রী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেন, শেষে কোর্টেও যাবেন।
ঘটনার নিন্দায় সরব বিজেপিও। অবিলম্বে দোষীদের গ্রেপ্তার করে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার দাবি জানান বিজেপি দক্ষিন সাংগঠনিক মুর্শিদাবাদ জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর ঘোষ।
বি এস এফ জওয়ানকে মারধরের ঘটনায় কান্দিতে তৃণমূল শিবিরও চরম অস্বস্তিতে।
মুর্শিদাবাদ জেলা তৃণমূলের সাধারন সম্পাদক, স্থানীয় তৃণমূল নেতা অবশ্য এই ঘটনা অত্যন্ত নিন্দাজনক বলেই প্রতিক্রিয়া জানান। কান্দির স্থানীয় নেতৃত্বকে এই বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখার বিষয়টিও পরোক্ষভাবে বুঝিয়ে দিলেন। তিনি বলেন, দলের মধ্যে থেকে যারা দলের শৃঙ্খলা রাখবে না, যারা মানুষের শ্ত্রু হিসেবে কাজ করবে, তারা মনে হয় না দলের কর্মী। তিনি আরও বলেন, দলের শৃঙ্খলা লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা করা হোক- আর যদি কর্মী না হয়ে থাকে তাহলে কর্মী নয় বলে ঘোষণা করা হোক।
সব নিয়েই সিমান্ত রক্ষা বাহিনির ওপর এমন আক্রান্তের ঘটনায় নিন্দার ঝড় অব্যাহত। ওপর দিকে পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা এবং শাসক শিবিরের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা। আগামী দিনে এই ঘটনায় যুক্তদের চিহ্নিত করে কি গ্রেপ্তার করা হবে? না রাজনীতির আড়ালে ঢাকা পরে যাবে সমস্তটাই- সেটাই এখন দেখার বিষয়।