বাজার চলতি ফেসওয়াশ মোটেই নয়

Published By: Madhyabanga News | Published On:

” রূপসাগরে ডুব দিয়েছি   অরূপ  রতন আশা করি   /  ঘাটে ঘাটে ঘুরবো না আর ভাসিয়ে আমার জীর্ণ তরী ” রূপ প্রসঙ্গে এমনই বলেছেন রবীন্দ্রনাথ ।  রূপের  যে আকর্ষণ তা যুগ যুগ ধরেই সমানভাবে বহমান  ।  চোখ থেকে মন ,  রূপের আধারের দিকেই ধায় ।   যেন একটা নিঃশব্দ হুকুম  । একটা বশ্যতা বলা যায় ।  একটা অনুরোধ কাজ করে নীরবে রূপের মধ্যে  ।   যা  বাধ্য করে তার প্রতি আকৃষ্ট হতে  ,  আর রূপদর্শীর  বশ্যতা  স্বীকারেই  এই যেন  রূপের  সার্থকতা বলা যেতে পারে ।

তাই আজও মায়ের আবাহনে  ধ্বনিত হয়: “রুপং দেহি   জয়ং দেহি   যশো দেহি”

রুপ  আর  সৌন্দর্য কিছুটা জন্মগত হলেও ,   সঠিক পরিচর্যা আর নিয়মিত কয়েকটি সাধারণ বিধি মেনে চলতে পারলে অকৃত্রিম অনাবিল রূপ মাধুর্যের  অধিকারী হওয়া কিছু কঠিন নয়  ।  রূপের প্রসঙ্গে প্রথমেই আসে সুন্দর,    সুডৌল   দাগ ছোপহীন  একখানা  মুখ ।  যেখানে থাকবে কমনীয়তা ।  থাকবে তারুণ্যের দীপ্তি ।  বয়স  যেমনই হোক না কেন  ।  মুখ দেখে যেন সঠিক বয়সের আশেপাশেও নিন্দুকেরা না যেতে পারেন ।

বিউটি উইথ হোম   কেয়ার  ( beauti with  home care )    প্রসঙ্গে আমরা কিন্তু আমাদের ঘরেই   বলা  ভাল রান্না ঘরে থাকা  নানা উপাদান দিয়ে রূপচর্চা সেরে ফেলতে পারি ।

চটজলদি মুখ পরিষ্কারের প্রশ্নে বেশিরভাগ মহিলা-পুরুষ ফেসওয়াশ জেলকে বেছে নেন ,    রাতে শুতে যাবার আগে হোক বা বাইরে থেকে ফিরেই হোক ।   তবে একথা অনেকেই জানেন না যে বেশিরভাগ ফেসওয়াশ এর মধ্যে এমন কিছু উপাদান আছে যা আসলে ত্বকের ক্ষতি করে ।   সেই সঙগে ত্বকের সৌন্দর্যকে   নষ্ট  করে  দেয় । ত্বক  নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে ।  বাজার প্রচলিত একাধিক ফেসওয়াশ জেলে সোডিয়াম লরেল সালফেট এবং মিনারেল অয়েল থাকে আর থাকে বেশ কিছু কেমিক্যালও ।   যা নানা ভাবে ত্বকের ক্ষতি করে দেয়।

বেশকিছু ঘরোয়া উপাদান আছে যা সহজলভ্য সাধারন ,  যা দিয়ে   সহজেই মুখের ত্বকের ভিতরে জমে থাকা ধুলো ময়লা পরিষ্কার করা সম্ভব  ।  একটু দেখে নি আমরা সেগুলো ঠিক কেমন..

1) দুধ : ত্বকের পরিচর্যায় দুধ একটি অমূল্য উপাদান বলা যায়  ।  দুধের ভিতরে থাকা ল্যাকটিক অ্যাসিড একদিকে যেমন ত্বকের ভেতরে জমে থাকা ধুলো-ময়লা কে বের করে দেয় ।  তেমনি ত্বকের উপরের জমে থাকা মৃত কোষের স্তরকে সরিয়ে দেয় ।  ফলে স্বাভাবিকভাবেই ত্বক হয়ে ওঠে সুন্দর উজ্জ্বল।   ত্বকের  ভিতরে হারিয়ে যাওয়া আদ্রতা  ফিরিয়ে আনতে দুধ বিশেষ ভূমিকা পালন করে ।  এক্ষেত্রে কোনো একটি পাত্রে অল্প পরিমাণ দুধ নিয়ে তা মুখে লাগিয়ে ম্যাসাজ করে নিতে হবে কিছুক্ষণ বাদে জল দিয়ে মুখটা ধুয়ে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিলেই হবে।

2) মধু : এই প্রাকৃতিক উপাদান টির   মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট অ্যান্টি  ব্যাকটেরিয়াল প্রপার্টিস৷

এ  ছাড়াও আরো কিছু উপাদান ত্বকের রোগের প্রকোপ কমায় ।   ত্বকের আর্দ্রতার মাত্রা কমিয়ে স্কিন টোনের উন্নতি ঘটাতে সাহায্য করে  ।  ত্বক পরিষ্কার করতে নিয়মিত মধু কে কাজে লাগানো যেতে পারে।   হাফ চামচ মধু নিয়ে তার সঙ্গে অল্প পরিমাণ জল মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে ভালো করে ম্যাসাজ করে নিতে হবে 10 মিনিট পর হালকা গরম জলে মুখ ধুয়ে নিলেই হবে।

3) : লেবু : লেবু খুবই উপকারী কার্যকরী খুব বেশি তৈলাক্ত ত্বকের ক্ষেত্রে ।  রোদে পুড়ে যাওয়া ত্বকে কালো দাগ সারাতে লেবুর জুড়ি  মেলা ভার ।  ত্বকের সৌন্দর্যকে ধরে রাখতে পরিমাণমতো লেবুর রসে  অল্প দুধ বা দই মিশিয়ে মুখে লাগাতে হবে।  কয়েক  মিনিট পর মুখ ধুয়ে   মশ্চারাইজার লাগিয়ে নিতে হবে।

4) শসা : খাদ্যগুণ ছাড়াও ত্বকের সৌন্দর্য বাড়াতে শসা কে কখনোই উপেক্ষা করা যায়না ।  শসার রস ত্বকে টোনিং করলে ত্বকের ইলাস্টিসিটি বাড়ে   ,  ত্বক  সুন্দর হয়ে ওঠে ।

শসাকে খোসা ছাড়িয়ে তার থেকে রস বের করে নিতে হবে  । একটি ছোট পাত্রে রেখে সারা মুখে তা পর্যায়ক্রমে লাগাতে হবে  ।  নিয়মিত কাজটি করলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে  ।  ত্বক সতেজ হবে  ।   ত্বকের ভেতরে   জমে থাকা ধুলো ময়লা পরিষ্কার হবে।

5) ওটস মিল : ত্বককে পরিষ্কার রাখতে ওটস মিল এর কোনো জুড়ি নেই ।  ত্বকের  উপরিভাগে জমে থাকা মৃতকোষ কে সরিয়ে ফেলতে ওটসের বিরাট ভূমিকা আছে ।  পরিমাণমতো ওটস নিয়ে ভালো করে গুুঁড়ো করে নিতে হবে  । এবার তাতে অলিভ অয়েল বা জল মিশিয়ে একটি পেস্ট বানিয়ে নিতে হবে  আর  মুখে লাগিয়ে কিছু সময় থাকার পর হালকা গরম জলে ধুয়ে নিলেই হবে।

 

পুজোর এখনো যে কদিন বাকি আছে তাতে বাইরে ঘুরে ঘুরে বাজার করা রোদে কখনোবা জলে ভিজে যাওয়া তাতে মুখের  কিছুটা সৌন্দর্যহানি হতে পারে তা বলা যেতেই পারে ।   তাই বাইরে থেকে ফিরে সবকিছুর আগে মুখ পরিষ্কার করা খুব জরুরি  ।  আর তা কোন প্রকার রাসায়নিক মিশ্রিত উপাদান  ছাড়াই  করা বাঞ্ছনীয় ।

মধ্যবঙ্গ ডেস্ক