বহরমপুর পৌরসভায় বসলো নতুন প্রশাসক শুরু রাজনৈতিক তরজা

Published By: Madhyabanga News | Published On:

 

রিয়া সেন : বহরমপুর ২৩শে ফেব্রুয়ারী –  বিধানসভা ভোটের আগে বহরমপুর পৌরসভার প্রশাসকের দায়িত্ব ভার গ্রহন করলেন পৌরসভার প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান জয়ন্ত প্রামানিক।  তাঁকে সহযোগিতা করবেন বহরমপুর পৌরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলার বাবন রায়। মঙ্গলবার সকালে বহরমপুর পৌরসভায় প্রশাসক ও বহরমপুর সদর মহকুমা শাসক তাঁকে দায়িত্বভার বুঝিয়ে দেন। আর এই প্রশাসক পরিবর্তনের পরেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্ক। বিরোধীরা ফের গনতন্ত্র হরণ করা হচ্ছে বলে একযোগে সরব হয়েছেন। ভোটের মুখে ফের সরগরম বহরমপুর। উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে বহরমপুর পৌরসভায় নির্বাচিত বোর্ডের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর বহরমপুরের মহকুমা শাসককেই দায়িত্ব দেওয়া হয় প্রশাসকের। ২০১৯ এ লোকসভা ভোটের কিছু দিন আগে তৎকালীন কান্দির বিধায়ক অপূর্ব সরকারকে বহরমপুরের প্রশাসক করা হয়েছিল। যদিও, লোকসভা ভোটে বহরমপুরে অপূর্ব সরকার তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী হওয়ায় মহকুমা শাসকই ফের প্রশাসকের দায়িত্ব নেন। কেন এই সিদ্ধান্ত ? রাজনৈতিক মহলের অনুমান শাসক দল মুর্শিদাবাদের সদর শহর বহরমপুরে সরকারী আধিকারিক প্রশাসকের দ্বায়িত্ব নেবার পর প্রতিদিনের  পরিসেবা নিয়ে নানান প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষত নিকাশী নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছিল প্রতিদিনই। সেই বিষয়ে নাগরিকদের ক্ষোভ প্রশমনের জন্য প্রয়োজন ছিল শহরের কোন জনপ্রিয় মুখ সামনে থেকে নেতৃত্ব দিক পৌরসভা পরিচালনের। কিন্তু সেখানেও শাসক দলের ঐক্যমত্য হচ্ছিল না কে মুখ হবেন । অবশেষে জয়ন্ত প্রামানিককে বেছে নিল।

বিরোধীরা সরকারে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রকাশ্যেই সরব হয়েছেন। জেলা কংগ্রেস মুখোপাত্র জয়ন্ত দাস কটাক্ষ করে বলেন, পৌরসভা নির্বাচন এখনও পর্যন্ত ভয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় করতে পারল না। এটাই হচ্ছে আমাদের কাছে প্রধান বস্তু। বিধানসভা নির্বাচন যদি এই ভাবে প্রশাসক বসিয়ে হত তাহলে মনে হয়  মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্বাচন কমিশনকে বাদ দিয়ে এখানে সমস্ত বিধানসভায় একটা করে প্রশাসক বসিয়ে দিতেন। উনি আগে গণতন্ত্রের কথা বলছেন, ক্ষমতায় এসে গণতন্ত্রকে হরণ করেছেন, উনি আগে লড়াইয়ের ডাক দিতেন, এখন লড়াই করতে গেলে জেলে পাঠাচ্ছেন, উনি আগে গন প্রতিষ্ঠানে ভোটের কথা বলছেন, এখন সেখানে প্রশাসক বসাচ্ছেন। অর্থাৎ নীতিগত ভাবে মুখে যা বলেন কাজে তা উল্টো করেন, যার জন্য আমরা এটাকে ধিক্কার জানাচ্ছি, আমরা বলতে চাইছি কবে আপনার সৎ সাহস হবে বহরমপুর পৌরসভা নির্বাচন করার? সেটা আপনাকেই জিজ্ঞেস করছি।

বিজেপি মুর্শিদাবাদ দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি গৌরীশংকর ঘোষ বলেন,  তৃণমূল কংগ্রেস পশ্চিমবঙ্গে হারতে বসেছে। এই মুহূর্তে মুর্শিদাবাদ জেলাকে তারা চাইছে আঁকড়ে ধরে বাঁচতে। কিন্তু এই জেলাতেও তৃণমূল কংগ্রেসকে মানুষ চাইছে না। বহরমপুর পৌর বোর্ড প্রায় আড়াই বছর ধরে ঝুলে রয়েছে এখানে নির্বাচন তৃণমূল কংগ্রেস করাতে পারে নি। সেই জায়গায় তিনি এর আগে প্রশাসক বসিয়েছিলেন পরবর্তীতে আমরা দেখতে পাচ্ছি এস ডি ও অ্যাকচুয়াল এখানে প্রশাসক ছিলেন। হঠাৎ করে রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব জ্যন বাবু নিয়ে এসে প্রশাসক বসানো হল, এর মধ্যে দিয়ে তৃণমূল চাইছে যে আজকে তৃণমূলের লোকেরাই  এই জায়গাটাকে শাসন করুক, নির্বাচন দরকার নেই। নির্বাচন না করে তৃণমূলের লোককে প্রশাসক হিসেবে বসিয়ে দেওয়া এটাও বহরমপুর শহরের মানুষ ভালোভাবে নেবে না।

রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে বহরমপুর পৌরসভায় এক জন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে প্রশাসক পদে বসান হল- বিরোধীদের এই অভিযোগ প্রসঙ্গে বহরমপুর পৌরসভা নব নির্বাচিত প্রশাসক জয়ন্ত প্রামানিক ওরফে ডনু বলেন, এটা ভুল ব্যাখ্যা। বহরমপুর শহরে বিগত দু বছর ধরে প্রশাসক ছিলই। পরিষেবাও বহরমপুরের মানুষ পাচ্ছিলেন। মানুষ যাতে আরও উন্নত পরিষেবা পায় তার জন্যে সরকার মনে করেছে তাই একজন প্রশাসক নিয়োগ করেছে। বিরোধীদের কথা শুনে চললে তো হবে না, বিরোধীরা  তো আমাদের বিরুদ্ধাচারন করবেই। আমরা যতই ভালো কাজ করি এবং বিগত দিনে আমরা এত ভালো কাজ করেও আমাদের সমালোচনা হয়েছে। সেদিকে না তাকিয়ে  মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নের লক্ষে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।