পাড়ায় শিক্ষালয়ে নিরাশ শিক্ষকরাই

Published By: Madhyabanga News | Published On:

রাহি মিত্রঃ  স্বাস্থ্য বাঁচাতে শিক্ষা খোয়া  যেতে  বসেছে ।  এমনই এক পরিস্থিতির  সম্মুখীন আজ  আমরা  ।   পড়ুয়াদের   মনে     স্কুলের   দিন  গুলি   ধীরে ধীরে ধূসর বর্ণ হতে হতে যেন মিলিয়ে যেতে বসেছে ।  ছাত্র ছাত্রীদের সঙ্গে বিদ্যালয়ের যে নিবিড়  সম্পর্ক  তা   প্রায় ছিন্ন হতে বসেছে   যেন  ।  সেই   ২০২০  মার্চ  মাস   থেকে আজ 2022 এর জানুয়ারির শেষের দিক  বন্ধ   স্কুলের দরজা ।   মাঝে দিন কয়েকের জন্য মাধ্যমিক স্তরের  সকুল   গুলি চালু হয়েছিল তবে কোভিডের কারণে তা পুনরায় বন্ধ হয়ে যায় ।   ভার্চুয়াল শিক্ষাদান পদ্ধতি   যে   কার্যকরী নয়  তা  ইতিমধ্যে  প্রমাণিত  হয়ে গেছে  ।    বর্তমানে কোভিড সংক্রমণ কিছুটা হলেও   আয়ত্তে আসলেও স্কুলের দরজা কবে খুলবে তা অনিশ্চিত আজও ।   এইরূপ পরিস্থিতিতে     ‘ পাড়ার শিক্ষালয় ‘  নামে এক প্রকল্পের ঘোষণা করা হয় সোমবার রাজ্য সরকারের তরফ থেকে ।  শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু   জানান ,   বাচ্চাদের ক্ষতি না করে  ,    কোভিড  সংক্রমণকে না বাড়িয়ে  যাতে  স্কুল খুলে আবার বন্ধ না করে দিতে হয় তার পাকাপোক্ত ব্যবস্থা করে ,   প্রতিষেধকের  ব্যবস্থা করে তারপরে মুখ্যমন্ত্রী নিজেই জানাবেন কবে স্কুল খুলতে পারে৷।  শিক্ষা মন্ত্রী আরো  জানান  সরকারি তরফ থেকে আমরা ধাপে ধাপে স্কুল  গুলি খুলতে চাইছি ।   মুখ্যমন্ত্রী যথাসময়ে জানিয়ে দেবেন স্কুল খোলার দিন ।

বিদ্যালয় শিক্ষা এবং উচ্চশিক্ষা বিভাগের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু ‘পাড়ায় শিক্ষালয়’ প্রকল্পের শুভ সূচনা করেন

তবে সরকারের পক্ষ থেকে পরিস্থিতি বিবেচনা করে একইসাথে পড়ুয়াদের কথা ভেবে প্রাক-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত  পড়ুয়াদের জন্য   ‘  পাড়ায় শিক্ষালয় ‘  প্রকল্প চালু হতে চলেছে আগামী  ৭  ফেব্রুয়ারি  থেকেই ।

প্রকল্পে সামিল থাকবেন প্রাথমিক শিক্ষক শিক্ষিকা গণ ,  পার্শ্বশিক্ষক শিক্ষিকা গণ ,  শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের সহায়িকা রা ।   ৫০ ,  ১৫৯   টি   প্রাথমিক বিদ্যালয়  ,  ১৫ ,  ৫৯৯   টি   শিশু শিক্ষা  কেন্দ্র থাকবে এই  প্রকল্পে ।  ১.  ৮৪  লক্ষ প্রাথমিক শিক্ষক  ,   ২১   হাজার পার্শ্বশিক্ষক  ,     ৩৮  হাজার সহায়ক সহায়িকা   এবং    ৬০ , ৫২ ,   ৬৮২   জন  পড়ুয়া    শিক্ষালয়ে   যোগ  দেবে   এমনটাই খবর ।     কোভিড  বিধি মেনে পাড়ার খোলা জায়গায়  উন্মুক্ত  পরিবেশে যেখানে সংক্রমণের আশঙ্কা  কম    এমন  পরিবেশে   প্রাথমিক শিক্ষক শিক্ষিকা  গণ   পার্শ্ব শিক্ষক শিক্ষিকা   গণ   শিশু শিক্ষা কেন্দ্রের সহায়িকা রা   নিজ  নিজ  পাড়াতে পড়াবেন ছাত্র-ছাত্রীদের  ।   এভাবেই চলবে   ‘ পাড়ায় শিক্ষালয় প্রকল্প   ‘  কর্মসূচি   ।   পাঠ্য বিষয় ছাড়াও সাংস্কৃতিক কাজকর্ম ও  চলবে   শিক্ষালয় গুলিতে ।  যেমন নাচ গান আবৃত্তি প্রভৃতি ।

তবে বিষয়টি যতটা সহজ সমাধান যোগ্য মনে হচ্ছে কার্যত তার নাও হতে পারে বলেই মনে করছেন প্রাথমিক  শিক্ষক শিক্ষিকাদের কেউ কেউ ।  তাঁদের দাবি বেশকিছু ফাঁক-ফোকর আছে এই প্রকল্পে ।  মুর্শিদাবাদের বেলডাঙা চক্রের   নওপুকুরিয়া   নতুন পাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সৌমেন  সরকার জানালেন  ,  শিক্ষা দপ্তরের  কথামতো পাড়ায় শিক্ষালয় প্রকল্পে পড়ুয়া থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের টয়লেটের কোন ব্যবস্থার   কথা  বলা  হয়নি  ।    শিক্ষালয় হলে  যে  পড়ুয়ারা  আসবে   তাতে পড়ুয়াদের     সাথে   শিক্ষকদের    সমন্বয়ের কিছু অসুবিধা দেখা দিতে পারে ।    গ্রামাঞ্চলে শিক্ষালয়ের জন্য ফাঁকা জায়গা পাওয়া গেলেও শহরাঞ্চলে ফাঁকা জায়গা পেতে সমস্যা  হতে  পারে   ।

পাশাপাশি বহরমপুরের কাশিমবাজার এলাকার   ৭   নম্বর ঝাউখোলা সুধাংশু শেখর মেমোরিয়াল প্রাইমারি  স্কুলের প্রধান শিক্ষক সৌমেন  কুমার মন্ডল জানালেন  ,  সরাসরি স্কুল গুলি   যত  তাড়াতাড়ি  সম্ভব  খুলে দেওয়ায় উচিত হবে রাজ্য সরকারের  করোনা সতর্কতা  বিধি  মেনেই   ।   কারণ    ‘ পাড়ায় শিক্ষালয়  ‘  নামে যে কর্মসূচি রাজ্য সরকারের শিক্ষা দপ্তরের তরফ থেকে নেওয়া হয়েছে তা মোটেই কার্যকরী হবে না  পড়ুয়া  থেকে শিক্ষক শিক্ষিকা সকলের জন্যই ।  এই ধরনের প্রকল্পে নানা ধরনের অসঙ্গতি দেখা দেবে ।  তাই বাচ্চা থেকে সব ধরনের পড়ুয়াদের জন্যই স্কুলগুলি যত দ্রুত সম্ভব খুলে দেওয়া উচিত সরকারি তরফে । কিশোর বাবু সরাসরি জানিয়ে দিলেন৷ ‘  পাড়ায় শিক্ষালয়  ‘  প্রকল্প কোন অবস্থাতেই সফলতা অর্জন করতে পারবে না ।