মধ্যবঙ্গ ওয়েব ডেস্ক: প্রতি বছর পয়লা বৈশাখ ‘ভক্তি ও সম্মানের’ সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের ‘ রাজ্য দিবস ‘ হিসেবে পালন করতে হবে। শনিবার সরকারিভাবে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানান, রাজ্য মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বীবেদি। পাশাপাশি, রাজ্য সরকারের সমস্ত কর্মসূচি, অনুষ্ঠানের শুরুতে গাইতে হবে ‘ রাজ্য সঙ্গীত ‘।
মুখ্য সচিবের দ্বারা বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, রাজ্যের সংস্কৃতি, গরিমা, ঐতিহ্য এবং রাজ্য প্রতীকের কথা মাথায় রেখে দীর্ঘদিন ধরে ‘ রাজ্য দিবস ‘ এবং ‘ রাজ্য সঙ্গীতের ‘ – এর প্রয়োজন অনুভূত হয়েছে। এবং পয়লা বৈশাখকে ঘোষণা করা হয় ‘রাজ্য দিবস’ হিসেবে। পাশাপাশি, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘ বাংলার মাটি, বাংলার জল ‘ – কে ‘ রাজ্য সঙ্গীত ‘ – এর মর্যাদা দেওয়া হয়েছে।
এবং তারপরেই জানানো হয়, সম্মানের সঙ্গে প্রতিবছর পয়লা বৈশাখে ‘ রাজ্য দিবস ‘ পালন করবেন সকল পশ্চিমবঙ্গবাসী। এছাড়াও সরকারি সমস্ত অনুষ্ঠানে, কর্মসূচির শুরুতে প্রায় ১ মিনিট ৫৯ সেকেন্ড সময় ধরে গাইতে হবে ‘ রাজ্য সঙ্গীত ‘। এবং অনুষ্ঠান শেষে গাইতে হবে জাতীয় সঙ্গীতও। উভয় গানই গাইতে হবে উঠে দাঁড়িয়ে।
এর আগেই সেপ্টেম্বরে রাজ্য বিধানসভায় রাজ্য সঙ্গীত এবং রাজ্য দিবস নিয়ে প্রস্তাব এনেছিল তৃণমূলের পরিষদীয় দল। পশ্চিমবঙ্গ দিবস হিসেবে কোন দিনটিকে পালন করা হবে, তা নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই বিতর্ক চলেছে রাজ্য রাজনীতিতে। তারই মধ্যে রাজ্য বিজেপির তরফে স্থির হয়েছিল ২০ জুন তারিখটিকে পশ্চিমবঙ্গ দিবস হিসাবে পালন করা হবে। কারণ ১৯৪৭ সালে ২০ জুন বাংলা দুভাগে বিভক্ত হয়। এক পূর্ব পাকিস্তান এবং আরেকটি পশ্চিমবঙ্গ। এবং পশ্চিমবঙ্গ ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়। তাই অনেক বিশিষ্টজন এবং রাজ্যবাসীর একাংশ এই বিভাগের দিনটিকে রাজ্য দিবস হিসেবে মানতে নারাজ হন।
যদিও গত ২০ জুন রাজ্যপাল বোস রাজভবনে পশ্চিমবঙ্গ দিবস হিসেবে দিনটিকে পালন করেছিলেন। সেই নিয়েও শুরু হয় রাজনৈতিক ওঠানামা।
প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ তথা ইতিহাসবিদ সুগত বসুকে উপদেষ্টা করে ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস নির্ধারণ কমিটি’ তৈরি হয়। সেই মতো গত ২৯ অগস্ট নবান্নে সভাঘরে ডাকা হয়েছিল সর্বদল বৈঠক। যদিও এই বৈঠকে বিরোধী বিজেপি, কংগ্রেস এবং সিপিএমের কোনও প্রতিনিধি যোগ দেননি। বৈঠকে উপস্থিত বিশিষ্টজন এবং রাজনৈতিক দলগুলির প্রতিনিধিরা মতামত জানানোর পর দেখা যায় এগিয়ে পয়লা বৈশাখই।
অন্যদিকে, রাজ্য সঙ্গীত নিয়েও নেওয়া হয়েছিল বেশ কিছু সিদ্ধান্ত কিন্তু শেষ মুহূর্তেও তাও পাল্টে যায়। মুখ্যমন্ত্রী চেয়েছিলেন বেশ কিছু শব্দের পরিবর্তন করতে। কিন্তু শনিবার রাজ্য মুখ্য সচিবের নির্দেশিকায় সমস্ত জল্পনার ঘটে অবসান।