নেতাজী নিয়ে রাজনীতি , কী বললেন অধীর ?

Published By: Madhyabanga News | Published On:

মধ্যবঙ্গ নিউজ ব্যুরোঃ২৩ জানুয়ারিঃ ভোটের আগে নেতাজী নিয়ে মোদী- দিদি রাজনীতি করছেন।নেতাজীকে পণ্য করছেন মোদী। শনিবার বহরমপুরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অভিযোগ করেন অধীর চৌধুরী। এদিন প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তোপ দাগেন অধীর।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী বহরমপুরে নেতাজীর জন্মদিবসে নেতাজী মূর্তিতে মাল্যদান করলেন জেলা কংগ্রেস ভবনের সামনে । জেলা কংগ্রেস কার্যালয়ের সামনে এক সংক্ষিপ্ত সভায় নেতাজীর জীবনাদর্শ নিয়ে আলোচনাও করেন তিনি। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি আরও বলেন, ” আমি তো বারবারই বলি- দিদি আর মোদি তাদের রাজনৈতিক পদক্ষেপ , প্রশাসনিক পদক্ষেপ এবং নিজেদের ঢোল বাজানোর জন্য তাদের প্রচেষ্ঠায় কোন ফারাক নেই তাদের দুজনের রাজনৈতিক ডিএনএ এক । এরা উভয়েই ভোটের বাজারে নেমে পড়েছে পণ্য নিয়ে, সেই নির্বাচনী পণ্য যাতে বাজারে ভালো বিক্রি হয় তার জন্য তাদের চেষ্টার কোন ত্রুটি নেই । তাদের মহাত্মা গান্ধীর কথা মনে পড়ছে, নেতাজীর কথা মনে পড়ছে, বিবেকানন্দের কথা মনে পড়ছে , সকলের কথা মনে পড়ছে”।
পরাক্রম দিবস নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। বলেন, ” আমি ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রীর কাছে জিজ্ঞেস করতে চাই যে আপনি কি সত্যি মনে প্রানে নেতাজীকে শ্রদ্ধা করেন তার জন্য পরাক্রম দিবস পালন করছেন ? প্রথম কথা পরাক্রম কথাটার মধ্যে দিয়েই যেন একটা জঙ্গি কাউকে লক্ষ করে উদ্দ্যেশ্য করে কিছু বলার চেষ্টা করা । নেতাজী ছিলেন ভারতবর্ষের ধর্মনিরপেক্ষতার একটা আদর্শ প্রতীক । নেতাজীকে নিয়ে ভোটের বাজারে নামার আগে নেতাজীর আদর্শকে কি বিজেপি পার্টি স্বীকার করে ? প্রথমে তার উত্তর দিক । এতদিন আগে হঠাৎ করে তাদের নেতাজীর কথা মনে পড়ল কেন বাংলায় নির্বাচন এসেছে বলে? তাই আজকের প্রধানমন্ত্রীর নেতাজীকে পণ্য করার বিরোধীতা সারা বাংলার মানুষ করবে । এই নেতাজীর নামে কলকাতার একটা পোর্ট ছিল ডক ছিল নেতাজী ডক , এই নরেন্দ্র মোদি পশ্চিমবঙ্গের মানুষের আবেগ নেতাজীর নামে ডকটাকে উঠিয়ে দিয়ে শ্যামাপ্রদাদের নামে নামাঙ্কিত করল, এটার মানেটা কি ? শ্যামাপ্রসাদ মুখ্যার্জি আপনাদের পার্টির একজন তাত্ত্বিক জনসংঘ তৈরী করেছিল। আজকে ক্ষমতায় এসেছেন, তার ক্ষাতির তো করতেই হবে, তা শ্যামাপ্রসাদ মুখ্যার্জিঁর নামে অন্য একটা কিছু করতে পারতেন। কিন্তু যে নেতাজীর নামে একটা নেতাজী ডক ছিল , সেটাকে উঠিয়ে দিলেন তারপর আপনি বলবেন বাংলার মানুষ নেতাজীকে সামনে রেখে – আমি তোমাদের কাছে এসেছি আমাকে ভোট দাও। ভোটের বাজারে পণ্য করার নাম নেতাজী হতে পারে না। ঠিক একই ভাবে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আপনি এতদিন পর নেতাজীকে নিয়ে নির্বাচনী ব্যবসায় নামলেন ? কি করেছেন বাংলায় নেতাজীর নামে বলুন? দশ বছর তো ক্ষমতায় ছিলেন, বলুন দশ বছরে নেতাজীর নামে কি করেছেন আপনি । নেতাজীর পরিবারে যারা এম পি ছিল আজকে তাদেরকেও দেখতে পাইনা আমরা । আজকে তাদেরকেও দেখতে পাইনা আপনার দলে কেন? রাজ্যের বিরুদ্ধে তোপ দেগে অধীর বলেন, আপনার রাজ্যে নেতাজীর পরিবারকে কিভাবে হেনস্থা হতে হয়- তা তো আমরা দেখেছি। বাড়ি সারাতে গেলে আপনার রাজ্যে মস্তানদের পয়সা দিতে হয় । মস্তান জিজ্ঞেস করে, পাঠিয়ে দাও আমাদের ঠেকে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুকে। সেই বাংলায় দিদিভাই আপনি আর দেশের মোদী ভাই আর দিদিভাই সবকিছু করুন, তাই সবকিছু করুন দয়া করে মহাপুরুষদের নিয়ে নির্বাচনী ব্যবসা করবেন না । এই সমস্ত মহাপুরুষদের তাদের নিজের নিজের জায়গায় থাকতে দিন। শ্রদ্ধা নিশ্চয়ই করবেন, কিন্তু তাদেরকে নির্বাচনী পণ্য করবেন না” ।

অধীর বলেন, ” বাংলার মানুষ নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু, স্বামী বিবেকানন্দ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাদেরকে নিয়ে নির্বাচনী পণ্য করার যে প্রচেষ্টা দিদি এবং মোদী করে চলেছেন, বাংলার মানুষ তাকে বরদাস্ত করবে না”।