প্রশান্ত শর্মাঃ ১ এপ্রিলঃ নেতা আছে। স্লোগান আছে । নির্বাচনের প্রতীক নেই। দেখে অবাক হয়েছেন জলঙ্গীর আনিস আলি। প্রবীণের দাবি, কতোদিন ধরেই তো ভোট দেখছি। এমন তো দেখিনি। একই নেতা কমাস আগেও গ্রামে ঘুরেছেন বাইকে দলের পতাকা লাগিয়ে। তিনিই ভোট চাইছেন ফাঁকা হাতে।
যদিও সঙ্গী সেই চেনা স্লোগান। কারো মুখে ইনকিলাব জিন্দাবাদ, কারো মুখে বন্দেমাতরম। মুর্শিদাবাদে ভোট যুদ্ধ জমিয়ে দিচ্ছেন নির্দলরাই।
শুক্রবার সকালে জলঙ্গী বাজারে দেখা মিলল আরিফ বিল্লার। তৃণমূল নেতা হিসেবেই পরিচিত আরিফ , হেঁকে বলছেন, “কাকা, ভোট টা এবার নির্দলের করতে হবে”।
“ভোট করা” মানে ভালোই বোঝেন জলঙ্গীর মানুষ। এই আসনে নির্দল হয়ে দাঁড়িয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে জেলা পরিষদে জিতে আসা সসদ্য সৈয়দা রাফিকা সুলতানা।
বাড়ি বাড়ি সারছেন প্রচার। সাথে এলাকার পরিচিত নেতা কর্মীরা।
নওদাতে নির্দলের সঙ্গী আবার লাল ঝান্ডা। এই কেন্দ্রে দাঁড়িয়েছেন সদ্য প্রাক্তন হওয়া সিপিআই(এম) নেতা শমীক মণ্ডল।
এলাকায় শিক্ষক হিসেবে পরিচিতি আছে শমীকের। নওদায় দল বাঁচানর স্লোগান তুলে ভোট দাঁড়ানোর কথা ঘোষণা করতেই তার বিরুদ্দধে ব্যবস্থা নিয়েছে সিপিআই(এম)। বহিষ্কার করেছে দলের দুই জেলা কমিটি সদস্য শমীক মণ্ডল আর গোরাচাঁদ ঘোষকে।
তবে লাল ঝান্ডা ছাড়ছেন না শমীক। প্রচারে তৃণমূল কংগ্রেস, বিজেপিকে আক্রমণের পাশাপাশি নিশানা করছেন জেলা পরিষদ কর্মাধ্যক্ষ মোশারফ হোসেন মধুকে। ‘দলবদলু’ হওয়ার দরুন মধুর বিশ্বাসযোগ্যতা নেই প্রচার করছেন শমীক। প্রসঙ্গত, এই আসনে কংগ্রেস প্রার্থী হয়েছেন সদস্য তৃণমূল ছেড়ে আসা মোশারফ হোসেন।
শমীকের সাথে প্রচারে নামছেন নওদা , আমতলা একাকায় দলের কর্মীদের বড় অংশই।
সুতিতে আবার “আলফাজুদ্দিন’র মনোনীত” নির্দল হয়েছেন জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ মইদুল ইসলাম। সদ্য তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়েছেন তিনি। অন্যদিকে কংগ্রেসের সুতির ব্লকের সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন আলফাজুদ্দিন বিশ্বাস। মূলত কংগ্রেস এই কেন্দ্রে হুমায়ুন রেজাকে টিকিট দেওয়াতেই তার ক্ষোভ।
কর্মী সভার পাশিপাশি জনসংযোগেও নেমে পোড়েছেন মইদুল। মইদুল অবশ্য জানাচ্ছেন , তার টকর সরাসরি সুতির তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী ইমানি বিশ্বাসের বিরুদ্ধে।
জেলায় সবে শুরু হয়েছে মনোনয়ন জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া। এর মধ্যে আরো বেশকিছু নেতা নির্দল হয়ে ভোটে দাঁড়িয়ে পড়তে পারেন বলেই অভিমত রাজনৈতিক মহলের।
তবে এর মধ্যেই জমে ওঠা ভোটের হাওয়ায় কেমন ‘খেলা’ দেখান নির্দলরা; সেই দিকেই নজর জেলাবাসীর।