বেদান্ত চট্টোপাধ্যায়ঃ শনিবার সন্ধ্যায় নাট্যদল থিয়েটার শূন্য’র উদ্যোগে একটি ভিন্ন স্বাদের আলোচনা সভার আয়োজন করা হয় বহরমপুর অমৃতকুম্ভের সভাকক্ষে। আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল “অভিনয়ের বন্ধু চিত্রকলা ”। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী কৃষ্ণজিৎ সেনগুপ্ত। থিয়েটার শূন্য নাট্য দলের নির্দেশক সুদীপ্ত মণ্ডল জানান, “ একটা ছবি অনেক গল্প বলে তা থেকে একটা বড় নাটক তৈরি হয়। আর একটা নাটকের মধ্যেও লুকিয়ে থাকে টুকরো টুকরো ছবি। বাস্তবের নিরিখে ছবির সাথে নাটক কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে সেই কথা মাথায় রেখেই এই আয়োজন।” এর পাশাপাশি সুদীপ্ত আরো জানান, “শুধুমাত্র থিয়েটার শূন্য নাট্য দলের ছেলে মেয়ে নয় , তার পাশাপাশি বর্তমান প্রজন্মের যারা শিল্পকে ভালোবাসে, যারা শিল্প নিয়ে কাজ করতে চায় তাদের জন্য এই আলোচনা সভা আয়োজন করা হয়েছিল। ”এদিন অনুষ্ঠানে শহরের বিভিন্ন নাট্যকর্মী থেকে শুরু করে, সংস্কৃতি প্রেমী ও সাংস্কৃতিক কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
আলোচক কৃষ্ণজিৎ সেনগুপ্ত বক্তব্যের শুরু থেকেই একের পর এক বিভিন্ন ছবির মাধ্যমে পরিষ্কার করছিলেন একটা ছবি কিভাবে বাস্তবে দুনিয়া গড়ে তুলতে পারে, এবং বাস্তবের দুনিয়ায় কত টুকরো টুকরো ছবি লুকিয়ে রয়েছে যা হয়তো আমরা দেখতে পাই না। গনেশ পাইনের আঁকা অর্জুন ছবিটি দেখিয়ে মঞ্চের একজন অভিনেতার ভঙ্গির সঙ্গে তুলনা করে সকলের সামনে তৈরি করেন। আবার কখনো যীশুর মৃত্যুর সময়ের ছবি, অথবা গগনেন্দ্রনাথ ঠাকুরের দুই বধূর কথোপকথন শীর্ষক ছবি, বা রক্তকরবী নাটকের মঞ্চায়নের ছবি দেখিয়ে তিনি স্পষ্টতই প্রকাশ করেন অভিনয়ের সাথে চিত্রকলা কতটা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। প্রসঙ্গত কৃষ্ণজিৎ বলেন, “ চিত্রকলা স্থির কিন্তু দর্শক তাকে জীবন্ত করে! এখানেই থিয়েটারের উপাদান। তুমি কথাও বলে নড়াচড়া করে, ছবি দেখেই অনেক চরিত্র তৈরি হয় ”।
ছবির মাধ্যমে চরিত্র বিশ্লেষণের পাশাপাশি কোন নাটকের পোস্টার কিভাবে একটা সময়কে বা একটা ছবিকে ফুটিয়ে তুলতে পারে তাও এই আলোচনা সভায় বিশ্লেষণ করা হয়। এর পাশাপাশি কৃষ্ণজিৎ বলেন,“ অভিনয়ের বন্ধু যেমন চিত্রকলা, তেমনি যারা মেকআপ আর্টিস্ট, যারা আলো তৈরি করে, যারা মঞ্চ নির্মাণ করেন, সকলেই একে অপরের পরিপূরক ”।
শেষে সংক্ষিপ্ত দর্শকদের প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে আলোচনা সভা। দর্শকদের মধ্যে থাকা তরুণ প্রজন্মদের উৎসাহ ও আগ্রহ বিশেষভাবে চোখে পড়ার মতো ছিল।