নদী ভাঙনের স্থায়ী সমাধানে রাজ‍্যের দশ বছরের প্রকল্প, ফি বছর বরাদ্দ ৫০ কোটি ঘোষণা মুখ‍্যমন্ত্রীর

Published By: Madhyabanga News | Published On:

নিজস্ব সংবাদদাতা, মালদহঃ সামসেরগঞ্জের ভাঙন দূর্গত এলাকা পরিদর্শনের আগে বৃহস্পতিবার গঙ্গা ভাঙন রোধে বড় ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন মালদহ-মুর্শিদাবাদের প্রশাসনিক বৈঠকে গঙ্গা ভাঙন রোধে প্রত্যেক বছর ৫০ কোটি টাকা দেওয়ার ঘোষণা করেন তিনি। ভাঙনের স্থায়ী সমাধানে আগামী দশ বছর ধরে চলবে এই গঙ্গা ভাঙন প্রতিরোধের কাজ। বর্ষার আগেই সেই কাজ শুরু করার নির্দেশ দিয়েছিন মুখ্যমন্ত্রী।
ফি বছর গঙ্গা ভাঙনে তলিয়ে যায় মুর্শিদাবাদ, মালদহ ও নদিয়ার গ্রামের পর গ্রাম। মাথার ছাদ হারিয়ে আকাশের নিচে ঠাঁই হয় ভিটে হারাদের। এই অবস্থার স্থায়ী  সমাধান চাইছে রাজ্য সরকার। সেদিকেই এদিন একধাপ এগোলেন মুখ্যমন্ত্রী। মালদহ ও মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসনিক সভায় এদিন এই ঘোষণা করেন তিনি।
এদিন গঙ্গার তীর থেকে ৫ কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকায় যেন কেউ নতুন বাড়ি তৈরি করতে না পারে সে ব্যাপারে জেলাশাসকদের স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “ গঙ্গা তো আমার হাতে নেই , যে ভাঙন পাঁচশো মিটারের মধ্যে হবে না পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে হবে। আমি পাঁচ কিলোমিটার পর্যন্ত সেফ খেলতে চাই। তাই মানুষকে পাঁচ- ছ’ কিলোমিটারের মধ্যে বসত বাড়ি তৈরি করতে দেওয়া যাবে না।”
যাঁদের পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে বাড়ি আছে তাঁদের অন্যত্র পাট্টা দিয়ে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এ দিন তিনি আরও বলেন, “ যদি জমি সমস্যা থাকে সেক্ষেত্রে ওই এলাকার মানুষদের চার তলা পাঁচ তলা বাড়ি করে দেওয়া যেতে পারে বাংলার বাড়ি প্রকল্পে।” ভাঙনের জেরে যাঁরা মাথার গোঁজার ঠাঁই হারিয়েছেন তাঁদের পাট্টা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। আগামীকাল সামসেরগঞ্জের ৮৭টি ভাঙন দুর্গত পরিবারকে জমির পাট্টা দেবেন তিনি।
ভাঙন এলাকার মাটি রক্ষা করার জন্য আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। যে ঠিকাদার এই কাজ করবে তাদের সেই কাজ নিয়মিত পর্যবেক্ষন করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। রাজ্যের মুখ্য সচিবকে বন দফতর, সেচ দফতরকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করার জন্য একটি কমিটি তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলেও এদিনের বৈঠকে জানান মুখ্যমন্ত্রী। সেই কাজে জেলাশাসকদেরও যুক্ত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। জেলাশাসকদের সঙ্গে যুক্ত থাকবে পঞ্চায়েত দফতরও। মানবিক দিক থেকে বিশ্ব ব্যাঙ্কের মত সংস্থার কাছ থেকে আর্থিক সাহায্য পাওয়া যায় কি না তার জন্যও আধিকারিকদের খোঁজ খবর নিতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী।
ভাঙন রোধে কেন্দ্রের বঞ্চনার কথা উল্লেখ করে এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ গঙ্গার স্রোত আটকাতে পারি না। জলে গিয়েছে ভাঙন রোধে রাজ্যের হাজার হাজার কোটি টাকা।” তিনি বলেন, “ একটা কাজের জন্য লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের মত প্রকল্প বন্ধ করতে পারি না। কেন্দ্র এরজন্য এক পয়সায়ও দেয় না। অথচ এক কাজের দায়িত্ব কেন্দ্রের। ”