তৃণমূলের সম্প্রীতির মিছিল নিয়ে শুরু রাজনৈতিক তরজা

Published By: Madhyabanga News | Published On:

নিজস্ব সংবাদদাতা, বহরমপুরঃ শান্তি ও সম্প্রীতির বার্তা দিতে শনিবার বহরমপুরে মিছিল করে তৃণমূল। তারপরেই জেলা জুড়ে ফের একবার শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। কংগ্রেসের দাবি, সম্প্রীতির জেলা মুর্শিদাবাদে এই ধরনের মিছিল করে জনগণের দৃষ্টি ঘোরানোর চেষ্টা করছে তৃণমূল। পঞ্চায়েত নির্বাচনকে পাখির চোখ করে সংখ্যালঘু মন ভোলাতে উঠেপরে লেগেছে রাজ্যের শাসকদল।

চলতি বছর সাগরদিঘি উপনির্বাচনে হেরে গিয়ে বেকায়দায় পড়েছে তৃণমল। সংখ্যালঘুরা তাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়েছে বলে বিরোধীরা নির্বাচনের ফল বেরনো ইস্তক দাবি করে আসছে। তৃণমূলের জেলা নেতৃত্বের অন্তর্বর্তী রিপোর্টেও এমন আভাস মিলেছে বলে দাবি সূত্রের। আর তা মেরামতে সক্রিয় হয়েছে শাসক শিবির, তারই প্রকাশ এই মিছিল, দাবি বিরোধী শিবিরের।

ওই দিন তৃণমূলের বহরমপুর সাংগঠনিক জেলার পক্ষ থেকে এই মিছিলের আয়োজন করা হয়েছিল। সামনে থেকে সেই মিছিলের নেতৃত্ব দেন রাজ্য সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি মোশারফ হোসেন। এদিন তিনি বলেন, “ হাওড়া সদর, উত্তর ও দক্ষিণ কলকাতা ছাড়া অন্য জেলাগুলিতে তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেল এই ধরনের মিছিল করবে।” তবে এই মিছিল কখনও সাগরদিঘির উপনির্বাচনের ফলে সংখ্যালঘু মন মেরামতির চেষ্টা নয়। বিজেপি’র ‘ষড়যন্ত্র’ রুখতে এই মিছিলের আয়োজন করেছেন বলে দাবি করেছেন মোশারফ। তিনি বলেন, “ এটা বিরোধীদের রটনা। সাগরদিঘি একটি আকস্মিক ঘটনা। সেই ঘটনা দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব বিশ্লেষণ করবে। তবে আবার সেখানে ভোট হলে সেখানকার মানুষ তৃণমূলকে হাফ সেঞ্চুরিতে জেতাবেন।” তাঁর দাবি, “ রামভক্ত বিজেপি রাজ্যে হিংসা সৃষ্টি করে আমাদের উপর দোষ চাপাতে চাইছে। বাংলার শান্তি বিঘ্নিত করতে ওরা বড় ষড়যন্ত্র রচনা করছে। এই অশুভ শক্তিকে আমরা গণতান্ত্রিকভাবে মোকাবিলা করবো। মাঠে ময়দানে তাদের জবাব দেব। আর তারই লক্ষে সম্প্রীতির বন্ধন অটুট রাখতে এই মিছিলের আয়োজন করা হয়েছে। ব্লকে ব্লকেও এই ধরনের মিছিল হবে।” বিজেপি’র দক্ষিণ মুর্শিদাবাদ জেলা সাংগঠনের সাধারণ সম্পাদক লাল্টু দাস বলেন, “ মুখ্যমন্ত্রীই মেরুকরণের রাজনীতি করছেন। প্রত্যেক ধর্ম প্রত্যেক ধর্মকে শ্রদ্ধা করবে এটাই হিন্দু সংস্কৃতির সর্বোচ্চ জায়গা। ”

অথচ বহরমপুর তথা জেলায় হিন্দুত্ববাদী শক্তি মাথা চাড়া দিয়েছে। কিন্তু তাঁদের উদ্দেশ্যে কিছু বলেন নি বলে দাবি করেন জেলা কংগ্রেস মুখপাত্র জয়ন্ত দাস। তিনি বলেন, “ এই জেলা বরাবর শান্তিপ্রিয় জেলা। এখানে সম্প্রীতির বাতাবরণ না থাকলে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের মত একজন ব্রাহ্মণ সন্তান জঙ্গিপুর থেকে জিতে আসতে পারতেন না। আসলে সংখ্যালঘু থেকে অনেক দূরে চলে গিয়েছে তৃণমূল তাই সম্প্রীতির বার্তা দিয়ে তাদের কাছে টানার চেষ্টা করছে। আসলে চোরদের দিক থেকে নজর ঘোরাতে এই ধরনের কায়দা ভাঁজছে তাঁরা।” তিনি অভিযোগ করেন, “ সম্প্রীতির মিছিলের মাধ্যমে নতুন করে ধর্মীয় জিগির তোলা হচ্ছে। সম্প্রীতির বন্ধনে জড়ানো এই জেলায় এই ধরনের মিছিল করার কোনও প্রয়োজন আছে কি? এর পরিবর্তে রাজনৈতিক নেতাদের সংযত হয়ে উস্কানিমুলক কথাবার্তা বলা বন্ধ করতে হবে। এই জেলার সম্প্রীতি যাঁরা নষ্ট করছে তাদের বিরুদ্ধে এবার সহজোটে সমস্ত দল কঠোরভাবে নামবে। এই খেলা আর খেলতে দেওয়া হবে না।” মোশারফ বলেন, “ বাম কংগ্রেস অনুবীক্ষণীক দল। তাঁদেরকে নিয়ে আমরা চিন্তিত নই। ভোট আসলে একটু গাঁইগুঁই করে।”