পুরোনো পুজোর কথাঃ লিখলেন রাহি মিত্র
প্রায় ৫০০ বছরের বেশি সময় ধরে বহরমপুরে দুর্গাপুজো হচ্ছে খাগড়া ‘মা জগদম্বা’ মন্দিরে । এই পুজোর প্রতিষ্ঠা হয় শ্রী অখিল চন্দ্র সাহার আমলে । তবে মন্দিরের শ্রীবৃদ্ধি হয় ননিপদ সহার সময়েই । জগদম্বা মন্দিরের পুরোহিতরা কিন্তু বংশপরম্পরায় পুজো করে আসছেন । জানা যায় এখানে ভগবান শিবের বেদি ছিল । তার পরই জগদম্বা মায়ের মন্দির হয় । জগদ্বন্ধু চট্টোপাধ্যায়ের হাত ধরে শুরু হয় পুজো । এখানে মায়ের তন্ত্র মতে পুজো হয় । চামুণ্ডা রূপে দেবী দুই সখী জয়া বিজয়া কে নিয়ে পূজিতা হন মন্দিরে ।
মহালয়ার পর প্রতিপদ থেকেই শুরু হয়ে যায় দেবীর পুজো । হয় ঘট স্থাপন । চন্ডীপাঠ হয় । পুজো হয় হয় ভোগ আরতিও । রাতের বেলা সন্ধ্যারতির পর হয় শীতল ভোগ । ষষ্ঠীর দিন পুজোর ঘট বসে , হয় অধিবাস । সপ্তমীতে ঘট স্থাপন হয় । এরপর সকালে নিরামিষ ভোগ হয় মায়ের।
অষ্টমীতে হয় নিরামিষ পুজো । ছাগবলির প্রথা থাকলেও তা মন্দিরে হয়না । উৎসর্গ করে দেওয়া হয় । মন্দির সোজা গঙ্গার ধারে ছাগ বলি হওয়ার রেওয়াজ ছিল এই পুজোতে । সন্ধিপুজো হয় বিধিমত । সন্ধিপুজো তে আজ থেকে প্রায় কুড়ি বাইশ বছর আগে মন্দিরে দো নলা বন্দুকে ফায়ারিং হতো । তবে সরকারি নিষেধাজ্ঞায় তা বন্ধ হয়ে যায় ।
নবমীতে সাধারণ পুজো হয় । ইলিশ মাছের ভোগ হয় । সাথে কচুর শাক, লাউ এর তরকারি অবশ্যই থাকতে হয়। নবমীতে জগদম্বা মন্দিরে শঙ্খচিলের ভোগ দেওয়া হয় । সব রকমের আমিষ নিরামিষ ইলিশ মাছ , কচুর শাক , লাউ এর তরকারি প্রভৃতি সহযোগে ।
এরপর দশমীতে দেবীর চিড়ে দই ভোগ হয় । প্রথা মেনে হয় সিঁদুরখেলাও । তবে এবার সিঁদুর খেলার তোড়জোড় হয়তো বা কম থাকবে করোনা বিধি র কারনে । এরপর আর যা কিছু আচার বিধির পর প্রতিমা বিসর্জন পর্ব উপস্থিত হয় । বিসর্জনের পর কাঠামো ফিরিয়ে আনা হয় । জগদম্বা মন্দিরে ঢাকি- মৃৎশিল্পীরা বংশ পরম্পরায় কাজ করে আসছেন ।