বহরমপুরবাসীর কাছে ভৈরব একটা আবেগ | আর এই আবেগের সাথে জড়িয়ে রয়েছে অনেক লোকগাথা, অনেক বিশ্বাস | দূর্গা পুজো নিয়ে সকলেরই কমবেশি উন্মাদনা থাকে, কিন্তু বহরমপুরবাসি অপেক্ষায় থাকে ভৈরব পুজোর | পুজোর দিন ভোর পাঁচটা থেকে ভক্তদের মাল্যদান এবং বাবা ভৈরবকে পৈতে পরানোর মধ্যে দিয়ে পুজোর শুভ সূচনা হয় । ভক্তরা উপোস করে ভাগীরথী নদীতে স্নান করে গণ্ডি কাটতে কাটতে ভৈরব মন্দিরে এসে পুজো দেন। প্রায় ২২ ফুট উচ্চতা “বাবা ভৈরব” এর । মুর্শিদাবাদ জেলার প্রাচীনতম ঐতিহ্যবাহী খাগড়ার এই ভৈরব পূজা জেলার বাইরে থেকেও অসংখ্য ভক্ত বৃন্দ পুজো দেন।
হিন্দু দেবতা শিবের একটি প্রকাশ বা অবতার, যা মৃত্যু এবং বিনাশের সাথে সম্পর্কিত। তিনি মহাকাল ভৈরব নামেও পরিচিত । এই ভৈরব পুজোর বিসর্জন নিয়ে থাকে আরও উন্মাদনা উচ্ছাস |এ বছর প্রশাসনের সমস্ত নির্দেশ উপেক্ষা করেই আনন্দে মাতলো শহরবাসি |
ভৈরব তলা মন্দির থেকে যখন বাবা ভৈরবের মূর্তি বের হয় তখন ঐ অঞ্চলের সমস্ত ইলেকট্রিসিটি বন্ধ করে দেওয়া হয় | এর কারণ ভৈরব মূর্তির যে উচ্চতা | মূর্তিতে বেঁধে যাতে কোনো তার ছিঁড়ে কোনো দুর্ঘটনা না ঘটে তার জন্যই এ ব্যবস্থা |এর পাশাপাশি ভক্তগণ ভৈরবের শোভা যাত্রায় বাতাসা ছেটাতে ছেটাতে যান | বাচ্চা থেকে বড়ো সবাই বাবার প্রসাদ ভেবে তা কুড়োতে ব্যস্ত থাকেন | আর এর সাথে থেকে বিরাট ঢাকি বাহিনী |
ঢাকের তালে কোমর দোলান নারী পুরুষ নির্বিশেষে | এর পাশাপাশি এই শোভাযাত্রায় দেখা যায় অনেকেই সং সেজে বিভিন্ন অঙ্গ ভঙ্গি করে মানুষ কে আনন্দ দেন | বহরমপুরবাসীর অনেকেই জানাচ্ছেন,’যা ভিড় দেখছি তা অন্যান্য বারের তুলনায় অনেক কম | এবছর ঢাকের সংখ্যাও কম |’ তবে সব মিলিয়ে ভৈরব নিয়ে জনমানুষের উন্মাদনা কোনো অংশেই কম হয়নি বলেই জানা যাচ্ছে |