রাত পোহালেই জামাইষষ্ঠী । আর জামাই ষষ্ঠী শুধুই একটা রীতি নয়, জামাই ষষ্ঠী নতুন জামাই তথা বাঙালি পরিবারের কাছে একটা উৎসবের দিন। “জামাই কখনো পুরোনো হয় না”, এমনটাই মত অনেক শাশুড়ির । এই দিনে জামাই কে বিভিন্ন মঙ্গলাচারের পাশাপাশি জামাই এর জন্য রান্না হয় বিভিন্ন রকমের খাওয়ার। তার সাথে থাকে বিভিন্ন রকমের মিষ্টি। আর এবছরের জামাই ষষ্ঠীতে বহরমপুরে মিষ্টিতে প্রায় অনাসৃষ্টি ঘটিয়ে ফেলেছেন বহরমপুরের ময়রাগন। বহরমপুরের নামকরা মিষ্টান্ন প্রতিষ্ঠান গুলিতে কেউ বানিয়েছেন পান সন্দেশ,২ কেজি ওজনের রসগোল্লা। আবার কেউ বানিয়েছে কাঁঠাল সন্দেশ, লিচু রসগোল্লা, আরও বিভিন্ন রকমের মিষ্টি। বহরমপুর গোরাবাজারের একটি পুরাতন মিষ্টির দোকানের বর্তমান কর্ণধার বৈশালী বিজয় সাহা জানাচ্ছেন, এ বছর ঐ দোকানে পান সন্দেশ, বেকড দই, বেকড কালাকাদ, জলভরা, আমাদের স্পেশাল ছানাবড়া, মিহিদানা, সীতাভোগ আরও বিভিন্ন রকমের মিষ্টি তৈরী হয়েছে। তার পাশাপাশি একটা বিশেষ অর্ডারে এবার জামাই ষষ্ঠী উপলক্ষে তাঁরা তৈরী করেছেন দু’কেজি ওজনের ছানাবড়া। জামাই আপ্যায়ণ করতে প্রাপ্তি সাহা নামে এক মহিলা তাঁর জামাই এর জন্য এই দুকেজি ওজনের ছানাবড়া অর্ডার করেছেন। তিনি জানাচ্ছেন, “জামাই কোনোদিন পুরোনো হয় না। এই বিশেষ দিনে জামাই এর জন্য বিভিন্ন রকমের মিষ্টি তো রয়েছে, তার সাথে দুপুরের মেনু তে রয়েছে হরেক রকম খাওয়ার। ”
বহরমপুর কল্পনার মোড় সংলগ্ন আরও একটি অভিজাত মিষ্টান্ন প্রতিষ্ঠান রীতিমতো জামাই ষষ্ঠীর বিভিন্ন রকম মিষ্টি তৈরী করে শহরবাসি কে ধাঁধায় ফেলে দিয়েছেন। আসলে এবার ঐ দোকানের স্পেশাল আইটেম কাঁঠাল সন্দেশ, লিচু রসগোল্লা। একজন ক্রেতা জানাচ্ছেন,“জলভরা সন্দেশে যেমন জামাইরা প্রথম চমকে গেছিলো, তেমনি এই কাঁঠাল সন্দেশ ও জামাই এর চোখে ধাঁধা লাগাবে।” ঐ দোকানের কর্ণধার সুমন কল্যাণ ঘোষ জানাচ্ছেন, “আমরা বরাবরই স্রোতের বিপরীতে নতুন কিছু করবার চেষ্টা করি। তাই এবছর আমাদের স্পেশাল আইটেম রয়েছে কাঁঠাল সন্দেশ, লিচু রসগোল্লা, স্ট্রোবেরি সন্দেশ, আম দই, জাম মিষ্টি আরও বিভিন্ন রকমের মিষ্টি। ”
সব মিলিয়ে জামাই নতুন হোক বা পুরাতন, এবছর জামাই ষষ্ঠীতে কোনো খামতি রাখতে চাইছেন না শ্বশুর – শাশুড়িরা। বিগত দুবছর লকডাউনে সেই ভাবে এই জামাই উৎসব উদযাপিত হয়নি। তাই এবছরে সকলে আবার একসাথে মিলিত হতে চাইছেন পরিবারের সাথে। বিক্রেতারাও জানাচ্ছেন গত দুবছর একদমই বিক্রি ছিল না, সেই পরিস্থিতিতে থেকে সময় অনেকটাই এবার বদলেছে। মানুষের মধ্যে বেশ চাহিদাও রয়েছে। এই দ্রব্য মূল্য বৃদ্ধির বাজারেও এই একটা দিন জামাই মেয়ের জন্য বিশেষ আয়োজনে মেতেছেন সকলেই। স্বাভাবিক নিয়মেই এই দিনটিতে সব জিনিস পত্রের দাম বেশি থাকলেও কোনো খামতি রাখছেন না কেউ।