বহরমপুর থেকে জলঙ্গীর পথে রবীন্দ্রনাথ কখনও ঘুরতে আসেনি | বেশ কয়েক দশক ধরে রাস্তার যা বেহাল দশা তাতে রবীন্দ্রনাথ কেন সাধারণ যেকোনো মানুষই এই রাস্তায় যাতায়াত করতে নাস্তানাবুদ হচ্ছেন |ধরে নেওয়া যাক “রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেননি ” হোটেলটি জলঙ্গী থেকে বহরমপুর এর এই রাস্তার কোথাও একটি অবস্থিত! তাহলে বুঝতেই পারছেন রবীন্দ্রনাথের এখানে খেতে বা ঘুরতে না আসার কারণ কি! সহজ ভাববে বললে বলা যায় যে চলাচলের রাস্তায় অনায়াসে পদ্ম চাষ করা যায়, সে রাস্তায় কেউ কি ঘুরতে আসে!
যেকোনো সুস্থ মানুষ এই রাস্তা দিয়ে যদি একবেলা যাতায়াত করেন ফেরার পথে তিনি কতটা সুস্থ থাকবেন তা বলা মুশকিল | মুর্শিদাবাদ জেলার বিভিন্ন প্রান্তের রাস্তার অবস্থা ভীষণ খারাপ এ আর বলার অপেক্ষা রাখে না | প্রতিদিনই প্রতিবেদন দেখা যায় “অমুক রাজ্য সড়কে ধান পুঁতে অবরোধ!”
এই রাস্তা সরাসরি মিশছে NH34 এর সাথে, বলা যায় এই রাস্তা কিন্তু রাজ্য সড়কের e way! কিছু দিন আগে কানা ঘুসো শোনা যাচ্ছিলো এই রাস্তা নাকি” ভারত নেকলেস “(ভারত মালা রোড )হবে!নেকলেস তো দূর দড়ি পাকানোর কাজটাও আজ পর্যন্ত শুরু হলো না!
জলঙ্গি রোড শেষ ঠিকঠাক ভাবে রিপেয়ার হয়েছিল বহুকাল আগে |যখন ভোটের দুন্দুভি বাজে তখন রাস্তার গর্ত ঢাকা পড়ে “দাদা দিদি”দের মনের রাগ দিয়ে !রাগ যেমন চট করে গলে যায়, গর্ত ঢাকা পিচ ও বর্ষা পড়লেই গলে, ভেঙে উধাও!
রাস্তায় এই মুহূর্তে যাঁরা বাস বা অন্যান্য গাড়ি চালক তাঁরা বলছেন, ” প্রত্যেক দিনই জীবন হাতে নিয়ে চলছি! সাথে যাত্রীদেরও |”জনসাধারণের কাছে জিজ্ঞেস করলে বলছেন ” যতক্ষণ না পর্যন্ত ৫০-৬০ টা লোক না মরছে, ততক্ষন অব্দি কোনো সরকারই কিছু করবে না,সব সরকারই নিজেদের দরকার মিটলে পালিয়ে যায়! ”
দিদিমনি বা দাদা সাহেবরা তো হেলিকোপটার এ ঘোরেন! সাধারনের তো হেলিকোপটার নেই; দিনের শেষে তাঁদের রয়েছে বাঁশের তৈরী চার কাঁধের খাট! অতঃপর এত আবেদন এত হুঙ্কার তারপরও মুর্শিদাবাদের জলঙ্গি রোড মারণ ফাঁদ |
প্রশাসক /প্রশাসন নজর নেই কারোরই |দিদিমনির রাজ্যে, দাদাবাবুর তৎপরতায় তাই হাজারো এক্সিডেন্ট বা আবেদনের পরেও “ন যোজউ ন তস্ত ”
এত সুন্দর রাস্তায় রবীন্দ্রনাথ কি করে ঘুরতে আসেন বলুন তো!
লিখলেনঃ প্রবুদ্ধ ব্যানার্জি, নিত্যযাত্রী (মতামত লেখকের ব্যক্তিগত)