বেদান্ত চট্টোপাধ্যায়ঃ অনেক অভিভাবকরাই বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা কে প্রহসন বলে দাবি করেন | অনেকে বলেন আজকাল সরকারি স্কুলে পড়াশোনা হয় না |আবার অনেক অভিভাবকের দাবি, প্রাইভেট টিচার ছাড়া ছেলে মেয়ে তৈরী সম্ভব না | এমন পরিস্থিতিতে ফারাক্কার অংশুমান ঠাকুর তৈরী করেছেন “গাছের ইস্কুল” |স্কুলের নামটা শুনেই অনেকেরই হয়তো বিশ্বভারতীর ছবিটা ভেসে উঠবে |
তবে কীভাবে তৈরী হলো এই গাছেদের স্কুল? কেমন ভাবে পড়ানো হয় গাছেদের স্কুলে? আসলে এই গাছেদের স্কুল বেড়ে উঠছে সমাজের ছোট্ট বাচ্চাদের নিয়ে, যারা ভবিষতে মহিরুহ হবে | অংশুমান নিজে প্রকৃতি ও পরিবেশ সচেতন মানুষ | যেখানে পারেন গাছ লাগান, গাছের যত্ন নেন | তবে শুধু মাত্র গাছ লাগালে তো হবে না, গাছেদের যাতে কোনো ক্ষতি না হয়, গাছ না কাটা হয় সেদিকে নজর রাখতে পারে ভবিষৎ প্রজন্ম কে সচেতন করতে হবে, ওঁদের কে তৈরী করার উদ্দেশ্যেই এই গাছেদের স্কুল, এমনটাই বলছেন অংশুমান |
অংশুমানের থেকে জানা যায় আজ থেকে বছর চারেক আগে তিনি প্রথম শুরু করেন গাছ লাগানো |তৈরী করেছেন ‘গাছ গ্রীন হ্যান্ডস’ | প্রথম অবস্থায় গাছ লাগাতে গিয়েও অনেক সমস্যার মুখে পড়তে হয় |
তারপর ফারাক্কার আদিবাসী নিবিড় এলাকার শিশুদের নিয়ে শুরু হয় এই গাছের স্কুল | খোলা আকাশের নিচে গাছের ছায়ায় পড়াশোনা করে বাচ্চারা | এই মুহূর্তে অংশুমান সহ মোট চারজন ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনা করান | পড়ানোর পাশাপাশি শেখানো হয় কতটা গাছ লাগানো জরুরি, জল অপচয় করলে ভবিষৎ এ কী হতে পারে |প্রসঙ্গত অংশুমান জানান,’ওঁরা প্রত্যেকে স্কুলে যায়, স্কুল থেকে ফিরে বা ওঁদের যখন সময় পায় ওঁরা আসে |ওঁরা এমনি প্রকৃতিপ্রেমী, কিন্তু কীভাবে প্রকৃতিকে রক্ষা করবে তা ওঁরা জানে না |ওঁরা আগের থেকে অনেক সচেতন |’
পাশাপাশি অংশুমান আরও জানান ভবিষ্যতে তাঁর ইচ্ছে আছে এই গাছেদের স্কুল কে অনেক বড়ো করে তোলার |কোনো বাণিজ্যিক ক্ষেত্র হিসেবে নয়, এই গাছেদের স্কুলে শিক্ষার প্রধান উদ্দেশ্য থাকবে কিভাবে প্রকৃতি পরিবেশ কে বাঁচানো সম্ভব, এমনটাই জানাচ্ছেন গাছেদের স্কুলের প্রধান অংশুমান ঠাকুর |অংশুমান নিজে পেশায় সহকারী অধ্যাপক,বিশ্বভারতীর ছাত্র | তাঁর জীবনে যে বিশ্বভারতীর যে প্রভাব সেই আদর্শ ও নিজের পরিবেশ সচেতনতা সে দিয়ে যেতে চায় ভবিষৎ প্রজন্ম কে |