খড়গ্রামে শুভেন্দুর সভা, চ্যালেঞ্জের মুখে দল !

Published By: Madhyabanga News | Published On:

প্রশান্ত শর্মাঃ ৮ নভেম্বরঃ বহরমপুরঃ দল ভাঙছেন শুভেন্দু ? রাজনৈতিক মহলের জল্পনা কি সত্যি হওয়ার পথে ? তেমনই ইঙ্গিত দিলেন জেলা তৃনমূল কংগ্রেসের কোঅর্ডিনেটর অশোক দাস । এদিন খড়গ্রামে প্রয়াত নেতা মফিজুদ্দিন মন্ডলের স্মরণসভায় শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্য প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতার সাফ অভিযোগ , “ শুভেন্দু অধিকারী এখন দল ভাঙার খেলায় মেতেছেন”। বহরমপুরে দলীয় দপ্তরে বসেই মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন এই তৃণমূল নেতা । অশোক দাস এদিন বলেন, “শুভেন্দু অধিকারী এখন দল ভাঙার খেলায় মেতেছেন । তাই তিনি সংখ্যার পরিসংখ্যান দিচ্ছেন” । সাথেই অশোক দাসের টিপ্পনী, অধীর রঞ্জন চৌধুরী শুভেন্দু অধিকারীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ হচ্ছেন । অশোক দাস এদিন বলেন,” শুভেন্দু অধিকারীর অবস্থান সম্পর্কে খবর রাখছেন মানুষ”।
খড়গ্রামের প্রয়াত তৃনমূল কংগ্রেস নেতা, জেলা পরিষদের দলনেতা মফিজুদ্দিন মণ্ডলের স্মরণসভা ঘিরে বেশকয়েকদিন ধরেই চাপানউতোর চলছিল তৃনমূল কংগ্রেসের অন্দরে। দল না মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদ , কোন ব্যানারে হবে স্মরণসভা ? এই প্রশ্ন ঘিরে ফাটল চওড়া হচ্ছিল জেলা পরিষদেও। অবশেষে শনিবার ঠিক হয়, নিজেদের অবস্থান থেকে সরে আসবে দল- জেলা পরিষদ দুই পক্ষই। মুখ বাঁচাতে পরিবর্তন করা হয় স্মরণসভার স্থানও। যদিও, খোদ শুভেন্দু অধিকারী সভা মঞ্চে দাঁড়িয়েই সভার আয়োজক হিসেবে নাম নেন মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের।
এদিনের সভা ঘিরে তৃনমূল কংগ্রেসের অন্দরে ছিল চাপা উত্তেজনাও । কে যাচ্ছেন ? কে যাচ্ছেন না সভায় ? হিসেব কষতে দেখা যায় জেলার নেতাদের। এদিন বিকেলে মুর্শিদাবাদের খড়গ্রাম থানার মাড়গ্রামে প্রয়াত মফিজুদ্দিন মণ্ডলের স্মরণ সভা মঞ্চে এসে পৌঁছান রাজ্যের পরিবহন সেচ ও জলসম্পদ উন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী । মঞ্চে তার পাশে ছিলেন মুর্শিদাবাদ জেলা পরিষদের সভাধিপতি মোসারফ হোসেন , সহকারী সভাধিপতি বৈদ্যনাথ দাস ও একগুচ্ছ তৃণমূলের জন প্রতিনিধি ও নেতৃত্ব । যদিও সেই সভা মঞ্চে দেখা মেলেনি স্থানীয় তৃনমূল বিধায়কের। ছিলেন না থেকে জেলা তৃনমূল কংগ্রেস নেতৃত্বের বড় অংশও ।
শুভেন্দু বলেন, মফিজুদ্দিন মন্ডলের পরিবারের পাশে থাকবেন তিনি, এর জন্য কারও অনুমোদনের প্রয়োজন হবে না । প্রয়াত মফিজুদ্দিন মণ্ডলের স্মৃতি চারণ করেন শুভেন্দু। স্মরণ সভায় জেলায় নিজের প্রভাব বোঝাতে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, জেলায় হামেশাই দাওয়াত পান তিনি। শুভেন্দু অধিকারী টেনে আনেন অতীতকে সম্মান দেওয়ার প্রসঙ্গেও । কোন অতীতের কথা বলছেন শুভেন্দু ? তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারাই মনে করিয়ে দিচ্ছেন, মুর্শিদাবাদ জেলায় দলবদলের অন্যতম কান্ডারী ছিলেন শুভেন্দু অধিকারীই। সেই কথাই কি ভুলে যাচ্ছে দলের এক অংশ ? উষ্মা শুভেন্দু শিবিরে।
সংখ্যা গুনিয়ে শুভেন্দুর বক্তব্য, “ কে নেই এই সভায় ! জেলা পরিষদের ৪৫ জন সদস্য আছেন। ১৬ জন পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান এখানে উপস্থিত আছেন। ১০০ ’র উপর প্রধান উপস্থিত হয়েছেন’। নাম নেন মফিজুদ্দিন মন্ডলের শুভাকাঙ্ক্ষীদেরও। তবে নেতাদের নাম নেওয়া যে শুভেন্দুর পাশে কে আছেন সে কথা বোঝাতেই, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। শুভেন্দুর এদিনের ভাষণ ছিল নিজের ছন্দেই। পরিচিত স্টাইলেই বুঝিয়ে দেন প্রয়াত নেতার পরিবারের সাথে তার ব্যক্তিগত নৈকট্য। সাথেই জেলাবাসীর কাছে তার জন্য প্রার্থনা করার , দোয়া করার আবেদন জানালেন ‘সেবক’ শুভেন্দু অধিকারী।
এদিন শুভেন্দু অধিকারীর মুখে শোনা যায় নি মুখ্যমন্ত্রীর নামও। উদ্যোক্তারা রাখেন নি মুখ্যমন্ত্রীর ছবির একটিও ব্যানার। বরং এদিনের সভায় দলকেই চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড় করালেন শুভেন্দু অধিকারী। প্রশ্ন উঠছে, শুভেন্দু অধিকারী সংখ্যা গোনায় প্রমাদ গুনছে তৃণমূল ?