মধ্যবঙ্গ নিউজ ব্যুরোঃ১২জুনঃ ১২ জুন দিনটি পালিত হয় বিশ্ব শিশু শ্রম বিরোধী দিবস হিসেবে। কিন্তু কোভিডের কারণে পিছিয়ে পড়ছে শিশুশ্রম বিরোধী লড়াই। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) ও ইউনিসেফ এক নতুন রিপোর্ট পেশ করেছে ২০২১ সালের শিশু শ্রম বিরোধী দিবস উপলক্ষ্যে। নতুন রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, বিশ্বজুড়ে শিশু শ্রমে যুক্ত শিশুর সংখ্যা বেড়ে ১৬ কোটিতে পৌঁছেছে। গত চার বছরে শিশু শ্রমিকের সংখ্যা কমার বদলে বেড়েছে ৮৪ লাখ। কোভিড-১৯ এর প্রভাবের কারণে আরও লাখ লাখ শিশু ঝুঁকিতে রয়েছে। তারাও যুক্ত হয়ে যেতে পারেন শিশু শ্রমিক হিসেবে বিপজ্জনক কাজে।
১২ জুন বিশ্ব শিশু শ্রম প্রতিরোধ দিবসকে সামনে রেখে প্রকাশিত ‘চাইল্ড লেবার: গ্লোবাল এস্টিমেটস ২০২০, ট্রেন্ডস অ্যান্ড দ্য রোড ফরওয়ার্ড’ শীর্ষক এই প্রতিবেদনে সতর্ক করে বলা হয়েছে, শিশু শ্রম বন্ধে অগ্রগতি গত ২০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো থমকে গিয়েছে। আগের নিম্নমুখী প্রবণতাকে উল্টে দিচ্ছে এবছরের তথ্য । ২০০০ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যবর্তী সময়ে শিশু শ্রমে নিয়োজিত শিশুর সংখ্যা কমে ৯ কোটি ৪০ লাখে নেমে এসেছিল।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, শিশু শ্রমে নিযুক্ত ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বৃদ্ধি পেয়েছে। শিশুদের স্বাস্থ্য, সুরক্ষা ও নৈতিকতার গুরুতর ক্ষতি করতে পারে এমন ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিযুক্ত ৫ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিশুর সংখ্যা ২০১৬ সালের পর ৬৫ লাখ বেড়ে ৭ কোটি ৯০ লাখে পৌঁছেছে।
কোভিড-১৯-এর কারণে বাড়তি অর্থনৈতিক চাপ এবং স্কুল বন্ধের কারণে ইতোমধ্যে শিশু শ্রমে নিযুক্ত শিশুদের শোষণ বাড়িয়েছে। ঝুঁকির মুখে থাকা পরিবারগুলোতে কাজ হারানো বা আয় কমে যাওয়ার কারণে আরও অনেক শিশু হয়তো সবচেয়ে খারাপ ধরনের শিশু শ্রমে নিযুক্ত হতে বাধ্য হচ্ছে।
শিশুশ্রমের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতাকে উল্টে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে আইএলও এবং ইউনিসেফ । এই দুই সংস্থা আহ্বান জানাচ্ছে: ১। সর্বজনীন শিশু সুবিধাসহ সবার জন্য পর্যাপ্ত সামাজিক সুরক্ষার ব্যবস্থা করা।
২। মানসম্মত শিক্ষার পেছনে ব্যয় বাড়ানো এবং কোভিড-১৯-এর আগে থেকেই স্কুলের বাইরে থাকা শিশুদেরসহ সব শিশুকে স্কুলে ফিরিয়ে আনা।
৩। প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য যথোপযুক্ত কাজের ব্যবস্থা করার বিষয়টি তুলে ধরা, যাতে পরিবারগুলোকে পারিবারিক উপার্জন বৃদ্ধিতে সহায়তা করতে শিশুদের অবলম্বন করতে না হয়।
৪। শিশু শ্রমকে প্রভাবিত করে এমন ক্ষতিকারক লৈঙ্গিক রীতিনীতি এবং বৈষম্যের অবসান ঘটানো।
৫। শিশু সুরক্ষা ব্যবস্থা, কৃষিজ উন্নয়ন, পল্লী জনসেবা, অবকাঠামো এবং জীবন-জীবিকার পেছনে বিনিয়োগ করা।
চাইল্ড লেবার অ্যামেন্ডমেন্ট (বর্জন ও নিয়ন্ত্রণ) অ্যাক্ট ২০১৬ ভারতে শিশু শ্রম বিষয়ক আইন। এই আইন অনুযায়ী ১৪ বছরের নীচের বয়সী শিশুদের কোন কাজের সাথে যুক্ত করা যাবেনা। তবে শর্তসাপেক্ষা পারিবারিক ব্যবসা, শিল্পকলার কাজে শিশুদের যুক্ত করা যায়। বিতর্ক আছে আইনের এই অংশ নিয়েও । ১৪ থেকে ১৮ বছর বয়সী কিশোরদের ক্ষেত্রেও আছে কাজের নিয়োগে কড়া বাধা নিষেধ। রাসায়নিক ও বিস্ফোরক পদার্থ নিয়ে কাজ চিহ্নিত আছে বিপজ্জন পেশা হিসেবে। এই ক্ষেত্রে কোনভাবেই কাজে লাগানো যবে না শিশু শ্রমিকদের।
তথ্যঃ ইউনিসেফ(https://www.unicef.org/)