কোথায় গেল পুজোর যাত্রা ? হারিয়ে গিয়েছে পুজোর আলকাপ, বাউলের আসর

Published By: Madhyabanga News | Published On:

পুজোর সেই সব দিন ভরে থাকতো যাত্রাপালা বাউল গান আর আলকাপেঃ লিখলেন রাহি মিত্র               প্রায় তিরিশ চল্লিশ বছর আগেও  মুর্শিদাবাদে পুজোর বাড়তি পাওনা ছিলো  কবি গান, আলকাপ , বাউল গান আর যাত্রা পালা  । জেলাজুড়ে গ্রামে গ্রামে চলত পুজো উপলক্ষে যাত্রা পালা  । হরিহরপাড়া, বেলডাঙার বিভিন্ন গ্রামগুলিতে এই সব যাত্রাপালা উপলক্ষে পড়ে যেত সাজ সাজ রব । বাদ থাকতো না বহরমপুরও  । বহরমপুরের  পাউন্ড রোড এলাকায় কালিকা নাট্য সংস্থা এ বিষয়ে বেশ নাম করেছিল৷

সারা জেলাজুড়ে শোরগোল পড়ে যেত যাত্রাপালা নিয়ে । মাতামাতি যে ভালই হতো তা বলাই যায় । শুরুর দিকে এই সব যাত্রাপালা গুলিতে পুরুষেরা মেয়ে অভিনয় করতেন । কারণ হিসেবে যেটা ছিল তা মেয়েদের এ কাজে যোগদান সমাজের চোখে খাটো বলে বিবেচিত হতো সে সময় । তবে একটা সময় এলো যখন মানুষের মনোরঞ্জনের তাগিদ কিন্তু পুরুষদের মহিলা সাজ কে পছন্দ করল না । এই না করার কারন থেকেই বলা যায় কিছু জন মহিলা প্রবেশ করলেন এই কাজে । অর্থাৎ মহিলা অভিনেত্রীরা পারিশ্রমিকের বিনিময়ে যাত্রা পালা গুলিতে অভিনয় করা শুরু করলেন । বহরমপুরে কিছু মহিলা থাকতেন যাঁরা জেলার বিভিনন যাত্রাপালা গুলিতে পারিশ্রমিকের বিনিময়ে অভিনয় করতেন । সরাসরি মহিলাদের যোগদানে পুজোর মনোরঞ্জনের বাড়তি পাওনা যাত্রা পালা গান আরও অনেক বেশি জমজমাট আর জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল ।

গ্রামাঞ্চলে অবশ্য লোকনাট্য , আলকাপ , বাউল গান এর পরে আরও একটি বিষয় ছিল যাকে পঞ্চরস বলা হত । যে টিকে মনোরঞ্জনের এক হাস্যরসাত্মক পরিবেশন ও বলা যেতে পারে । যাতে রসের পাঁচমিশালী থাকতো । যেগুলি থেকে গ্রামীন মানুষেরা দুর্গাপুজো বা দুর্গোৎসব উপলক্ষে মনের খোরাক ভালোই পেতেন সেই সময় তে।

হরিহরপাড়ার নিশ্চিন্তপুর এ সর্বমঙ্গলা পুজোতে যাত্রাপালা সেই সময় বিশেষ নাম করেছিল৷ এরপর ধীরে ধীরে সময়ের সাথে সাথে নব্বইয়ের দশকে প্রায় শেষ হয়ে যায় এই ধরনের পুজোর বাড়তি মনোরঞ্জনের রেওয়াজ । তবে সময়ের চাহিদা মতো পুজোর গান উঠে আসে৷। বিশেষত্ব শহরাঞ্চলে আসে পুজোর গানের এলবাম বিভিন্ন নামিদামি শিল্পীদের কন্ঠে । পূজা উপলক্ষে নির্মাণ করা চলচ্চিত্র , সে বাংলা হোক বা হিন্দি । মানুষ পুজোর আনন্দ নিতে থাকেন নানা ভাবে । উপভোগ করতে থাকেন পুজোর বাড়তি পাওনা মনোরঞ্জনের । সারা বছর কর্মব্যস্ত সময় কাটানোর পরে যা মানুষকে কিছু টা হলেও আনন্দ দিত বইকি ।