বাংলা লেখার ক্ষেত্রে সচরাচর আমরা ‘কি’ ও ‘কী’ এই দুটি শব্দ ব্যবহার এর ক্ষেত্রে ভুল করি । কোনটা কোন অর্থে ব্যবহার হয় তা অনেকেই জানিনা । সহজ টিপস দিলেন সুজয় শীল
প্রথমেই যে কথাটি বলে দেওয়া দরকার, তা হল ‘কী’ ও ‘কি’ দুটি সম্পূর্ণ আলাদা শব্দ এবং একটির জায়গায় অন্যটি ব্যবহার করা মারাত্মক ভুল। এই দুটি শব্দের পার্থক্য বোঝার সবচেয়ে সহজ উপায় হল, এই দুটিই প্রশ্নবাচক শব্দ । সেই প্রশ্নের উত্তরই বলে দেবে কোন বানানটি ঠিক।
প্রশ্নের উত্তর যদি ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ হয়, তাহলে ‘কি’ হবে।
যেমন: তুমি কি পড়ছো? উঃ- হ্যাঁ/না ।
আবার প্রশ্নের উত্তর যদি অন্য কিছু হয়, অর্থাৎ অন্য কোনো শব্দের দ্বারা দিতে হয়, তাহলে ‘কী’ বানান হবে।
যেমন: তুমি কী পড়ছো? উঃ- বাংলা ব্যাকরণ।
তবে বিষয়টি একটু বিশদে জেনে নেওয়া দরকার আছে ।
‘কি’ ও ‘কী’-এর পদ-পরিচয়:
‘কি’ পদটি একটি অব্যয় পদ। এটি একটি প্রশ্নবাচক অব্যয়। এটি অনেক সময় সংশয়সূচক অব্যয় হিসেবেও ব্যবহৃত হয়।
কি” এবং “কী” এর মধ্যে পার্থক্য:
কি এবং কী এর মধ্যকার পার্থক্য হলঃ প্রশ্নবোধক বাক্যের উত্তর যদি বিশদ বিবরণ দ্বারা দিতে হয়, তাহলে এমন বাক্যে ‘কী’ দীর্ঘ ঈ-কার হবে।
যেমনঃ তুমি কী দিয়ে ভাত খেয়েছ?
আর যদি প্রশ্নের উত্তর দিতে বিশদ বিবরণের প্রয়োজন হয় না বরং ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ দ্বারা দেওয়া যায়, তাহলে এ ক্ষেত্রে ‘কি’ হ্রস ই-কার দিয়ে লিখতে হবে।
যেমনঃ তোমরা কি লেখালেখি কর?
কোন এক কবি তার একটি বাক্যের মধ্যে ‘কি’ এবং ‘কী’ এর পার্থক্য খুব সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেনঃ “ওদের মধ্যে কী নিয়ে আলাপ হলো, কি আলাপ একেবারেই হলো না, তা তো আমি জানি নে”
বিস্ময়সূচক বাক্যে কিংবা হর্ষ বিষাদ বুঝাতে হলে ‘কী’ ব্যবহার হবে।
যেমনঃ আকাশ কী নীল! কী সুন্দর কথা বলেছে! কী কষ্ট! কী মধুর! ইত্যাদি।
তথ্য সংগ্রহ: ১। সাধারণ ভাষা বিজ্ঞান ও বাংলা ভাষা, রামেশ্বর শ