কিছু সম্পর্কের বয়স হয় না : লিখেছেন পার্থ চৌধুরী

Published By: Madhyabanga News | Published On:

সারাদিন রইলাম।দেহদান অবধি।উনি যেমন মানুষ ; এতটা যাঁর জার্নি।কিন্তু নিজেকে নিয়ে কোনো উচ্ছাস ওনার ছিল না।কোনো আড়ম্বরের বিরোধী ছিলেন।সেভাবেই মাথা উঁচু করে চলে গেলেন।
গত দু সপ্তাহ বুকে পাথর চেপে উডবার্ন আর সিসিইউ তে যাতায়াত করেছি।একটা ক্ষীণ আশা জেগেছিল গত বুধবার। কিন্তু…..
আমি সেই সৌভাগ্যবানদের একজন যাদের উনি তুমি বলতেন।ঘন্টার পর ঘন্টা কথা হত। একসাথে গেছি অনেক জায়গায়।তিনটি ছবিতে সহকারী ছিলাম। একটায় অলকদা আর শিবুদাও ছিল।
উনি আমাদের নতুন চিঠিতে আসতে খুব ভালবাসতেন।সব খবর আমার কাছে পেতেন। আমাদের স্যার কে শ্রদ্ধা করতেন।তিন বছর আগেও এই পরিবারের সকলের সাথে খোলামেলা আড্ডা মেরে গেছেন।আবার বর্ধমানে আসার কথা ছিল এই ডিসেম্বরে। সবাইকে উনি মনে রাখতেন।এই অসুস্থ হবার আগে আমাকে ডাঃ গীষ্পতিদার কথা জানতে চাইলেন।

উনি গণনাট্যের অনুষঙ্গে বামপন্থায় আকর্ষিত হয়েছিলেন।কিন্তু ভুল মনে হলে বলতে ছাড়েন নি। উনি আবেগের শেষ কথা। এই অনুরাগ ষোলোয়ানা নিখাদ ছিল।

ভর্তি হবার ঠিক আগে আমার একটা সমস্যার কথা জানতে পেরে আমায় বললেন ; ‘ কী করছো? আমার যে তোমার জন্য রাতে ঘুম হচ্ছে নাম। আমি বললাম; ‘ স্যার; আমি মেঠো ছেলে।আর একবার লড়ে নেব।আপনি চিন্তা করবেন না।
আউশগ্রামের জঙ্গলে আর নোয়াদার স্টেশনে কৃষ্ণচূড়ার ছায়ায় আর বীরভূমের পলাশীর মায়াবী গ্রামে একটা কাজ হবার কথা ছিল।রেল আর চলচ্চিত্র নিয়ে একটা প্রোজেক্ট নিয়েও কথা এগিয়েছিল।আর কেই বা করবে? ওনার সাথে সাক্ষাৎ আমার কুড়ি বছর আগে। কিন্তু ক্লাস এইটে স্কুল পালিয়ে খেলার পুতুল দেখে সেই যে মুগ্ধ হয়েছিলাম সে আবেশ আজও কাটেনি।কৃষক এবং গ্রামের জীবন নিয়ে বড় স্প্যানের ওনার যে উপন্যাস প্রকাশিত হবে তাতে আমার কিছুটা যোগদান আছে।এইটুকুই যা সান্তনা।
আমি অভিনেতা নই।নেতাও নই।সামান্য বার্তাজীবি।তবুও ওনার অপার স্নেহ আমার সারাজীবনের সঞ্চয় হয়ে রইল।
কিছু সম্পর্কের বয়স হয় না। নাম হয়না।