এখন খবরমধ্যবঙ্গ নিউজপরিবেশবিনোদনহেলথ ওয়াচখেলাঘরে বাইরেলাইফস্টাইলঅন্যান্য

এটা নাকি “ছেলেদের কাজ” ! সংসারের হাল ধরতে সেই কাজেই তাপসী

Published on: November 8, 2022

দেবনীল সরকারঃ  ” লোকে বলে এটা ছেলেদের কাজ  । আমি বলি, কাজ তো কাজই হয়, তার আবার ছেলে মেয়ে কি ! “, জড়তা কাটিয়ে বলছেন তাপসী হাজরা।  নিজের হাতে মুরগি কেটে, একা হাতে ধুয়ে পরিষ্কার করে বিক্রি করেন বহরমপুরের  হোতাসাঁকো, গাড়োয়ান পাড়ার তাপসী হাজরা।

২০২০ সালের মার্চে সারা বিশ্বে  আছড়ে পরেছিল করোনা অতিমারী। সারা পৃথিবীতে প্রভাব বিস্তার করেছিল কোভিড । কাজ হারিয়েছিলেন অসংখ্য মানুষ । দীর্ঘ লকডাউনের পরে কাজ হারিয়ে নতুন ব্যবসা শুরু করতে বাধ্য হয়েছিলেন অনেকেই । এরকমই এক দম্পতি হলেন তাপসী হাজরা ও অরিত হাজরা।

বছর তিনেক আগে বিয়ে হয়েছে তাঁদের। স্বামী অরিত হাজরা ডেলিভারির কাজ করেন।  স্বামী, স্ত্রী দুজনের ছোট্ট সংসার।  লকডাউনের সময় কাজ ছিল না। খুব কষ্ট করেই সংসার চালাতে হয়েছিল তাঁদের। “ লকডাউনের পর এই যা বাজারের অবস্থা তাতে একজনের ইনকামে সংসার চালানো দায়”, বলেন তাপসী হাজরা।

খাগড়া ও বিষ্ণুপুরের মাঝে রয়েছে হোতার সাঁকো। সেই হোতা সাঁকোর বামদিকে বিষ্ণুপুর বিলের পাশ দিয়ে যে রাস্তা কাশিমবাজারের দিকে চলে যাচ্ছে, ওটাই গারয়ান পাড়া সেখানেই দোকান তাপসীর।

সকালে বড় গাড়িতে করে মুরগি আসে। সেই মুরগি কিনে দোকানে রাখেন তিনি। সকাল ৮টায় খোলেন দোকান। বেলা বাড়তে বাড়তে ভিড়ও বাড়ে। দুপুর ১২টা অব্দি খোলা থাকে তাঁর দোকান। তারপর আবার বিকেলে খোলেন দোকান, খোলা থাকে সন্ধ্যা অব্দি। স্থানীয় খদ্দের প্রশান্ত হালদার বলেন, “ আমি উনার কাছ থেকে মাংস কিনি আজ প্রায় ১ বছর ধরে। উনি খুবই পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করে মুরগি কেটে, ধুয়ে দেন।”

তাপসী বলেন, “পেটের দায়ে কাজ তো করতেই  হয়। আগের বছর পুজোর সময় একটা ছোট খাবার দোকান দিয়েছিলাম । এই এলাকায় খাবারের দোকান সেরকম  চলে না। দিন আনে দিন খায়, এখানকার লোকেরা। তাই ভেবেচিন্তে মাংসের দোকান দিই । প্রথম দিকে স্বামী আপত্তি করলেও,  এখন ভালই বলে। সন্ধ্যায় কাজ সেরে সেও এসে বসে দোকানে। দু’জন মিলেই ব্যবসা করি ।”

Join WhatsApp

Join Now

Join Telegram

Join Now