বেদান্ত চট্টোপাধ্যায়ঃবহরমপুরঃ এক হাতে ঠাকুর গড়েন, অন্যহাতে দোকান সামলান। আর এইভাবেই সংসার চালিয়ে বড় করেছেন ছেলেমেয়েদের। বহরমপুর চুনাখালী নিমতলায় ছোট্ট একটা চায়ের দোকান | এই দোকানে ঢুঁ মারতেই দেখা মিলবে বছর পঞ্চান্নর ছায়া সরকারের | পঁয়ত্রিশ বছর ধরে চালাচ্ছেন চায়ের দোকান।
চা বিক্রির পাশাপাশি প্রতিমাও বানান ছায়া সরকার | দোকানেই রয়েছে ঠাকুর বানানোর সমস্ত জিনিস | তৈরী করেন ছাঁচের ঠাকুর | ছায়া দেবী নিজেই জানান, দুর্গা আর কালী ছাড়া সব ঠাকুরেরই প্রতিমা গড়েন তিনি | ছোট ছাঁচের কালী যদি কেউ অর্ডার দেন, তিনি তাও বানিয়ে দেন |
কয়েক দিন আগেই লক্ষ্মীপুজো গেল | এখনো অনেক গুলো লক্ষ্মী মূর্তি রয়ে গিয়েছে দোকানে, হয় নি বিক্রি | স্বামীর অসুস্থতার কারণে দীর্ঘদিন ধরে একা হাতেই সংসার দোকান সবটা সামলান | বড় করেছেন দুই ছেলে কে, মেয়ের বিয়েও দিয়েছেন|
“ এখন তো বয়স হয়েছে, এখন তো আরাম করার সময়, এখও এতো পরিশ্রম করছেন ? ” -এমন কথার উত্তরে ছায়া সরকার জানান, “আমি যতক্ষণ পারছি কাজ করবো | আমার ছেলেরা ভালো, তাঁরা আমার কোনো কিছুর অভাব রাখে না | আমি নিজের আনন্দে কাজ করি |”
এতো দিন একা একজন মহিলা হয়ে রাস্তার উপরে দোকান সামলাচ্ছেন কোনোদিন কোনো সমস্যায় পড়তে হয়নি? উত্তরে জানান,” না কোনোদিন সমস্যায় পড়তে হয়নি, আগে অনেক ছেলেরা চা খেতে আসতো |এখন দোকান বেড়েছে | তাই লোক কম |করোনার সময় দোকান বন্ধ ছিল, তবে ঐ আমার চলার মতো চলে গেছে | ”
ছায়া সরকার আরো বলেন , “আমার মেয়ে যখন ছোট ছিল তখন ওকে আঁচল দিয়ে ঢেকে রাখতাম আর দোকান চালাতাম |আমার ছেলে মেয়েরা আমায় খুব সাহায্য করেছে |তবে আক্ষেপ একটাই নিজে একজন মৃৎশিল্পী হয়েও আজ পর্যন্ত কোনো সরকারি সাহায্য পাইনি | নেই শিল্পী কার্ড” |