একশো বছরে ইতিহাসের উপেক্ষিত নায়ক সুধীন সেন, বছরভর বহরমপুরে অনুষ্ঠান

Published By: Madhyabanga News | Published On:

পবিত্র ত্রিবেদীর রিপোর্ট : কে সুধীন সেন? আজকের প্রজন্মের ছেলে মেয়েরা কতজন জানেন তাঁর অবদানের কথা? তিনি কি মুর্শিদাবাদ জেলার ইতিহাসের একজন উপেক্ষিত নায়ক? কেন তিনি আজও প্রাসঙ্গিক? তিনি সঙ্গীত শিল্পী। আবার চিত্রকর। রাজনৈতিক কর্মী। জীবনের রঙ্গমঞ্চে আত্মত্যাগী শিল্পী। প্রয়াত এই জীবন শিল্পীর জন্মের একশো বছর হতে চলেছে এই বছর। সুধীন সেন স্মরণ মঞ্চ গঠিত হয়েছে আগেই। সেই মঞ্চের পক্ষ থেকে বিশিষ্টদের নিয়ে তৈরি করা সুধীন সেন জন্ম শতবর্ষ উদযাপন কমিটি আয়োজন করতে চলেছে বছরভর অনুষ্ঠানের। সেখানে তাঁর বিষয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ আলোচনাও থাকবে। আগামী ১ সেপ্টেম্বর বহরমপুরের রবীন্দ্রসদনে বর্ষব্যাপী ওই কর্মকাণ্ডের সূচনা হবে। ওই অনুষ্ঠানে সুধীন সেনের অপ্রকাশিত গান প্রকাশ করা হবে। মুর্শিদাবাদ জেলার কমিউনিস্ট আন্দোলনের বিষয়ে তাঁর লেখা বই, ‘আমাদের অভিজ্ঞতায় মুর্শিদাবাদ জেলায় কমিউনিস্ট আন্দোলন’ এর নতুন সংস্করণ প্রকাশ করা হবে। যে বইটি বছর ২০ আগে সুধীন সেনের মৃত্যুর আগের বছর প্রকাশিত হয়েছিল।সুধীন সেনের জ্যেষ্ঠ পুত্র শিক্ষক সুগত সেন বুধবার জানিয়েছেন, সুধীন সেনের কন্ঠে, ‘তব লাগি ব্যথা’ গান বাজানো দিয়ে অনুষ্ঠানের শুরু হবে। ভীষ্মদেব চট্টোপাধ্যায়ের রাগাশ্রয়ী ওই গান সুধীন সেনের কণ্ঠে পুরনো টেকনোলজির মাধ্যমে ঘরোয়াভাবে টেপ রেকর্ডারে রেকর্ড করা। তখন সুধীন সেনের বয়স ৭০ পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু, দুর্ভাগ্যের বিষয় হছে তাঁর যৌবন কালের কোনও গানের রেকর্ড নেই। অনুষ্ঠানে থাকবেন শুভেন্দু মাইতি, আব্দুল কাফি, সোমনাথ চক্রবর্তীর মতো বিশিষ্টরা। বই প্রকাশ ও গীতি সংকলন প্রকাশ করবেন তাঁরা। সুধীন সেনের কথা ও সুরে 11 টি গানের সংকলন প্রকাশ হবে। সেখানে সাগর পাড়ি দেবো, ও আমার বাংলা মা গো গান রয়েছে।
তাঁর অনুরাগীরা জানিয়েছেন, যে মর্যাদা তাঁর প্রাপ্য ছিল তিনি তা পাননি। অনেক কালজয়ী গানের স্রষ্টা এই মানুষটির জীবন যাপন ছিল শিক্ষণীয়। পরাধীন ভারতে জেল খেটেছেন। জেলায় গণনাট্য সংঘের প্রতিষ্ঠাতা তিনি। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে শিক্ষণীয় রেখে গিয়েছেন অনেক কিছু। সুগত সেন বলেন, যে সময় তিনি যাপন করেছেন সেটা ছিল এক উত্তাল সময়। সেই সময় প্রতিটি ঘটনায় সুধীর সেন প্রতিক্রিয়া জ্ঞাপন করেছেন। জেলার প্রতিটি পালাবদলকারী ঘটনায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন। ফলে সেই জায়গা থেকে তার স্থান পাওয়া উচিত ছিল। কিন্তু, সচেতনতার সঙ্গে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মুর্শিদাবাদ জেলার ইতিহাস থেকে সুধীন সেনের নাম মুছে দেওয়ার প্রচেষ্টা চলছে। তিনি ইতিহাসের একজন উপেক্ষিত নায়ক।