ইতিহাসের গন্ধমাখা কাঠগোলা বাগান , লিখলেন দেবাশিষ পাল Kathgola Bagan Trip

Published By: Madhyabanga News | Published On:

মুর্শিদাবাদের আনাচা কানাচে লেখা রয়েছে ইতিহাস আর গল্পকথা। অতিমারীর তাড়নায় পুজো প্যান্ডেলের ভিড় এড়িয়ে “গঙ্গার তীর স্নিগ্ধ সমীর”এর খোঁজে বেড়িয়ে ঘুরলেন  মুর্শিদাবাদের বেশ কিছু ঐতিহাসিক স্মৃতিবিজড়িত স্থান । লালবাগ আস্তাবলের মোড় থেকে, টোটো করে গেলেন কাটরা মসজিদ, নসিপুর রাজবাড়ী, কাঠগোলা বাগান, ও জগৎশেঠ হাউস। কী দেখলেন সেখানে ? লিখলেন দেবাশিষ পাল। আজ কাঠগোলা বাগান Kathgola Bagan  পর্ব।

কাঠগোলা বাগান। মুর্শিদাবাদ

নশীপুর রাজবাড়ি ঘুরে পৌঁছে গিয়েছিলাম  কাঠগোলা বাগান। হাজারদুয়ারি থেকে চার কিলোমিটার উত্তরে, জিয়াগঞ্জের রাজা লক্ষ্মীপৎ সিং দুগর এই জায়গাটি কিনে বাগান বাড়ি তৈরি করেন। মনে করা হয় কাঠগোলাপের আধিক্যের জন্যই এই বাগান বাড়ির নাম হয় কাঠগোলা বাগান। প্রবেশমুখে নহবত গেট বিরাটাকার ও সুন্দর স্থাপত্যের নিদর্শন।

ভেতরে প্রবেশের পর বাঁদিকে একটি জলপূর্ণ সুড়ঙ্গ দেখা যায়, কথিত আছে এই সুরঙ্গটি নাকি ভাগীরথী সঙ্গে মিশেছে এবং দেড় কিলোমিটার দূরে জগৎশেঠের বাড়িতে এই সুরঙ্গ পথে যাওয়া যেত। আর ডান দিকে দেখা যায় ছোট্ট পাখিরালয় দেশ-বিদেশের নানা রকম পাখি ,রঙিন মাছ সেখানে সংরক্ষণ করা রয়েছে ম্যাকাও, চীনা মুরগি, বদরি, চড়ুই,টিয়া, কাকাতুয়া প্রভৃতি।

বাগান বাড়ির সামনেই রয়েছে বিরাট আকারের পুকুর

বাগান বাড়ির সামনেই রয়েছে বিরাট আকারের পুকুর সেখানে রঙিন মাছ এবং রাজহাঁসেরা আপন-মনে বিচরণ করছে। বাড়ির ভিতরে রয়েছে রাজপরিবারের ব্যবহৃত বিভিন্ন আসবাবপত্র সহ নানাবিধ জিনিসপত্র দু-চারটি পুরোনো বই এর আলমারি, দলিল-দস্তাবেজ প্রভৃতি।

ইতিহাসের সাক্ষী

কাঠের সিঁড়িটা চারটি পাকে তৈরি। প্রত্যেক পাকের পর একটি করে জানালা ও সম্মুখে ঝুলন্ত বারান্দা রয়েছে। ছাদের রেলিং প্রায়  ছ’ফুট উঁচু। বাগান বাড়ি থেকে বেরিয়ে কিছুদূর পরেই রয়েছে আদিনাথের জৈন মন্দির, তিনটি চূড়া বিশিষ্ট সম্পূর্ণ মন্দির শ্বেতাভাযুক্ত। সেখানে মন্দিরগাত্রে শ্বেতপাথরের প্রকোষ্ঠে বুদ্ধ, মহাবীর, গণেশ, শ্বেতভৈরব, সহ বিভিন্ন মূর্তি দেখা যায়। সমগ্র স্থানটি নানাবিধ গাছে পরিপূর্ণ শান্ত, স্নিগ্ধ, ছায়াশীতল।

তথ্যসূত্র:-১) “মুর্শিদাবাদ কাহিনী”- নিখিলনাথ রায়; তৃতীয় মুদ্রণ-২০১৮;প্রকাশক-৩৮/২ বাংলাবাজার, ঢাকা।  ২)বঙ্গদর্শন, ইতিবাচক বাংলা (ওয়েবসাইট)

মতামত এবং তথ্যের দায়িত্ব লেখকের নিজস্ব।