আসছে TET- কীভাবে নেবেন প্রস্তুতি ?

Published By: Madhyabanga News | Published On:

মধ্যবঙ্গ ডিজিটাল  ডেস্কঃ এখনও পর্যন্ত যা খবর তাতে আগামী ১১ই ডিসেম্বরেই হচ্ছে টেট পরীক্ষা। পরীক্ষার প্রস্তুতি তুঙ্গে। শহরে রয়েছে একাধিক কোচিং সেন্টার। সেখানে আনাগোনা বেড়েছে পরীক্ষার্থীদের। রাত দিন এক করে চলছে পড়াশোনা। এবারের টেট পরীক্ষা নিয়ে আশাবাদী জেলার পরীক্ষার্থীরা। গাইডরাও একই রকম আশাবাদী তাঁদের ছাত্র ছাত্রীদের নিয়ে। দরজায় কড়া নাড়ছে টেট। আর দু’সপ্তাহ বাদেই পরীক্ষা। শেষ মুহূর্তে কীভাবে তৈরি হবেন পরীক্ষার্থীরা – তা নিয়েই মধ্যবঙ্গের এই বিশেষ প্রতিবেদন।

‘টেট বা টিচার এলিজিবিলিটি টেস্ট’ – এই পরীক্ষার মাধ্যমে প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিক স্তরে শিক্ষক নিয়োগ করা হয়। পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ এই পরীক্ষা আয়োজন করে থাকে। বাংলা, ইংরাজি, গনিত, শিশুবিকাশ ও শিশুবিজ্ঞান এবং পরিবেশবিদ্যা এই ৫ টি বিষয়ে ৩০ করে সর্বমোট ১৫০ নম্বরে এই পরীক্ষা হয়। গত ১৪ ই অক্টোবর থেকে রাজ্যজুড়ে টেট পরীক্ষার ফর্ম ফিলাপ শুরু হয়েছিল, তখনই দিন ঘোষণা হয়েছিল পরীক্ষার। রাজ্যজুড়ে প্রায় সাড়ে ৬ লক্ষ প্রার্থী ফর্ম ফিলাপ করেছে ।

টেট পরীক্ষায় পাশের মাপকাঠি ৬০% নম্বর। এই ফলাফলের ভিত্তিতে রাজ্যের প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিতে শিক্ষক নিয়োগ করা হয়। গত ১ বছরেরও বেশি সময় ধরে টেট ও এস.এস.সি পরীক্ষায় দুর্নীতি নিয়ে উত্তাল রাজ্যের রাজনৈতিক মহল। একের পর এক প্রকাশ্যে এসেছে পরীক্ষা ক্ষেত্রে দুর্নীতির খবর। তদন্ত চালিয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থাও। গ্রেফতার হয়েছেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী তথা রাজ্যের একাধিক নেতৃত্ব। তবে এসবের মাঝেই আগামী মাসের ১১ তারিখ হবে টেট পরীক্ষা। ২০১৭ সালে শেষ বার হয়েছিল এই পরীক্ষা এরপর আবার পাঁচ বছর বাদে ২০২২ এ হবে টেট।

জোর কদমে প্রস্তুতি শুরু করেছেন পরীক্ষার্থীরা। শহরের কোচিংগুলিতেও মকটেস্টের প্রস্তুতিও তুঙ্গে, জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কোচিংগুলিতে আসেন ছাত্রছাত্রীরা। কিন্তু সবাই যে কোচিংয়ে গিয়ে প্রস্তুতি নেন এমনটাও নয়। বাড়িতে বসে সহায়িকা বইয়ের সাহায্য নিয়েও পড়াশোনা করছেন অনেক পরীক্ষার্থী। সে ক্ষেত্রে গাইডেরা বলছেন, সিলেবাস বড় তাই রুটিন বানিয়ে পড়াশোনা করা বাঞ্ছনীয়। একটি সহায়িকা বইয়ের ওপর ভরসা করে পরীক্ষা দেওয়াও বোকামি। কারণ, বাজারে এরকম অনেক সহায়িকা বই আছে যেখানে কিছু কিছু ভুল তথ্যও থাকে। তাই প্রস্তুতির সময় কোনও খটকা থাকলে অভিজ্ঞ গাইড, অন্যান্য সহায়িকা বই বা ইন্টারনেটের সাহায্য নেওয়া উচিত। বি.এড কলেজের ছাত্র সুদিপ মার্জিত, এই বছরের টেট পরীক্ষার ফর্ম ফিলাপ করেছেন। তিনি বলেন, “টেটে প্রতিযোগিতাও অনেক, তবে স্কুলে পোড়ানোর ইচ্ছে আমার ছোট থেকেই। চাকরি পাব আশা নিয়ে ফর্ম ফিলাপ করেছি। বাড়িতে পড়াশোনাও করছি এবার দেখা যাক কী হয়!”

আসন্ন ডিসেম্বরের ১১ তারিখ টেট পরীক্ষার সম্ভাব্য দিন ঘোষণা করা হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ তরফে জানানো হয়েছে প্রায় ১১০০০ শূন্য পদে শিক্ষক নিয়োগ করা হবে। এই বছরের টেট নিয়ে আশাবাদী বাংলা তথা জেলার পরীক্ষার্থীরা। শহরের একটি বেসরকারী সংস্থার কোচিং গাইড তুহিনবাবু বলেন, আমরা গাইডরা দিনরাত চেষ্টা করছি আমাদের ছাত্রছাত্রীরা যাতে তাঁদের ন্যায্য চাকরি পান। সিলেবাস বড় হলেও সঠিকভাবে রুটিন করে পরীক্ষার্থীদের গাইড করলে তাঁরা নিশ্চয় সাফল্য অর্জন করবে। আমরা কোচিং সেন্টারে একাধিক মকটেস্ট নিয়ে পরীক্ষার্থীদের প্রস্তুত করছি। অনেকে আছেন যারা এবারে প্রথমবার টেট পরীক্ষা দেবেন, তাঁদের যাতে পরীক্ষা হলে ঢুকে কোনও অসুবিধা না হয় তার দায়িত্ব আমাদের। কীভাবে ও.এম.আর সিটে পরীক্ষা দিতে হয় সে বিষয়ে আগে থেকে জানা থাকলে ভীতি কমবে। গত বারের প্রশ্নপত্র দেখে নিলেও পরীক্ষা বিষয়ক নিয়মকানুনগুলি পরিষ্কার হবে। যেমন – কালো কালির কলম ব্যবহার করা, সময়ের মধ্যে শেষ করা ইত্যাদি। কসরত করলে তা বিফলে যাবে না, বলেন গাইড।

২০১৫ সালের টেট এ ১৫০ নম্বরের এই পরীক্ষার জন্য ধার্য সময় ছিল ৯০ মিনিট, ২০১৭ তে তা বাড়িয়ে ১৫০ মিনিট করা হয়। আর এই বছর আরও ৩০ মিনিট বাড়িয়ে ১৫০ মিনিটের এই পরীক্ষার ধার্য সময় হয়েছে ১৮০ মিনিট বা ৩ ঘণ্টা। শহরের একটি বই-এর দোকানে টেট-এর শেষ মুহূর্ত প্রস্তুতির বই কিনতে এসেছেন সন্দিপা দত্ত। তিনি বলেন, “প্রস্তুতি নিচ্ছে সবাই নিজের মতো করে, আমিও দিনে সময় ভাগ করে আট ঘণ্টা পড়াশোনা করছি। বাড়ির লোকেরাও যথাসাধ্য সহযোগিতা করছেন। আশা করি পড়াশোনার জোড়ে চাকরি পাব, টাকা দিতে হবে না”।