প্রশান্ত শর্মাঃ৪ আগস্টঃ ফের আক্রন্ত সাংবাদিক। ফের ভয় পাওয়ানোর চেষ্টা। এবার মুর্শিদাবাদের সাগরপাড়ার সাংবাদিককে বাড়িতে ডেকে পেটালেন রাজ্যের শাসক দলের নেতারা। চলল চরম শারীরিক, মানসিক নির্যাতন। নেতাদের রাগ, ওই সাংবাদিক একটি খবর সংগ্রহ করতে গিয়েছিলেন। নেতাদের রাগ, নেতাদের ‘ইয়েস স্যার’ বলেন নি, নেতাদের জো হুজুরি করেন নি।
তাই মার ! তাই বেদম মার ! হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে ওই সংবাদকর্মীকে। তবে এই ঘটনা অনেক প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে। প্রশ্ন উঠছে, ওই নেতারা কারা ? প্রশ্ন উঠছে, এই ভাবে চলতে থাকলে দর্শক, শ্রোতা , পাঠকগুলো খবর পাবেন তো ?
কী ঘটেছে ? সোমবার সকাল সকালে সাগরপাড়া থানার বামনাবাদ পোল্লাগাড়ি এলাকায় স্থানীয় বাসিন্দারা বিক্ষোভ দেখান। খবরে পেয়ে সেখানে খবর সংগ্রহ করতে যান স্থানীয় সাংবাদিক সুব্রত প্রামাণিক । ছবি তোলার সময় স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেস নেতারা ছবি তুলতে বাধা দেয় তাকে। অভিযোগ,দেওয়া হয় হুমকিও। সেখান থেকে চলে আসেন তিনি। আক্রান্ত সাংবাদিকের অভিযোগ, সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় তাঁকে ফোন করে ডেকে পাঠানো হয় দেবিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের পোল্লাগাড়ি অঞ্চলের পঞ্চায়েত সদস্য জাব্বার সেখের বাড়িতে যায়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের জলঙ্গি উত্তর জোনের কনভেনর মতিউর রহমাম (ডলার), পঞ্চায়েত সদস্য জাব্বার সেখ, আজিত সেখ সহ বেশ কয়েকজন তৃণমূল নেতা । কেড়ে নেওয়া হয় মোবাইল, এরপরেই সাংবাদিকের উপর চড়াও হয় তৃণমূল কংগ্রেস নেতারা। দফায় দফায় মারধর করা হয় তাকে । চলে টানা অত্যাচার। ভিডিও করে মুচলেকা দিতে বাধ্য করা হয় ওই সাংবাদিককে।
মিডিয়া, খবরের গুরুত্ব দর্শক পাঠক ভালোই জানেন। তাই গ্রামের রাস্তা খারাপ হলে, হাসপাতালে চিকিৎসা না পেলে, প্রতারণার শিকার হলে খোঁজ হয় সাংবাদিকদের। সাংবাদিকরাই মানুষের সমস্যায়র কথা নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছে যাওয়ার সব থেকে ভরসাযোগ্য মাধ্যমিক। সাংবাদিকরাই আপনার সামনে তুলে ধরেন চারপাশের সঠিক খবর। গুজবে নয়, খবরে থাকতে আপনাকে দেয় তথ্য।
তবে সাংবাদিক যখন মার খাচ্ছেন, পাঠকও ভাবুন। কোন দিকে যাবেন ? সাহস করে নিজের কথা নিজের গলায় বলবেন নাকি সব মেনে নেবেন ? সাংবাদিকরা যখন মার খাচ্ছেন , আপনি নিরাপদ থাকছেন তো? কে দায় নেবে আপনার নিরাপত্তার ? দায় আসলে আপনাকেই নিতে হবে। দেশের নাগরিক হিসেবে সংবিধান আপনার পাশে আছে। নিজের কথা নিজের গলায় বলা আপনার মৌলিক অধিকার।
সাংবাদিকদের আক্রান্ত হতে দেখে চুপ করে থাকবেন না। কে বলেতে পারে, পরের হামলাটা হয়তো আপনার ওপরেই হবে ?
সোচ্চার হয়ে উঠুন, সরব হয়ে উঠুন। কথা বলুন।