বিজেপি’র হয়ে কাজ করছে কারা ? প্রশ্ন তুলে একে অন্যের বিরুদ্ধে সরব অধীর চৌধুরী, অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। ৩০ তারিখ মুর্শিদাবাদে নির্বাচন সামসেরগঞ্জ এবং জঙ্গিপুর কেন্দ্রে। ভোটের আগে দুই কেন্দ্রে বড় সভায় কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। জবাব দিতে দেরি করলেন না অধীর। চরমে উঠেছে দুই দলের বাগযুদ্ধ।
কেন্দ্রীয় স্তরে বিজেপি’র বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রভাব ফেলবে কি দুই দলের দুই শীর্ষ নেতার এই তরজা ? উঠছে প্রশ্ন।
এদিন অভিষেক প্রশ্ন তোলেন, কেন্দ্রের বিজেপি;’র বিরুদ্ধে নীরবব কংগ্রেস। বিরোধী দলের দায়িত্ব পালন করছে না তারা।
সাংসদে নিরব থাকার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরী । অধীর বলেন, “ পার্লামেন্টে কে কি বলে না বলে সব অন রেকর্ড বলে”।
সামসেরগঞ্জে জনসভায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, সামসেরগঞ্জের প্রার্থী আমিরুল ইসলাম ২০১৬ তেই জানিয়েছিলেন অধীর চৌধুরীর সাথে বিজেপি’র গোপন আঁতাত ছিল । সেই কারণেই কংগ্রেস দলে থাকেন নি আমিরুল।
অভিষেক বলেন, “ কংগ্রস নাকি বিজেপিকে হারাবে ? কংগ্রেস হয়তো বিজেপি’র বিরুদ্ধে লড়াই করছে, তৃণমূলও করছে । পার্থক্য কী ? কংগ্রেস হারছে আর তৃণমূল হারাচ্ছে। কংগ্রেস বিজেপির কাছে হারছে আর তৃণমূল বিজেপি’কে হারাচ্ছে” অভিষেকের দাবি, “ এবার ভারতবর্ষ জুড়ে খেলা হবে। তৃণমূলই একমাত্র বিজেপি’কে হারাতে পারে ”।
অভিষেকের ভাষণের উত্তরে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেন, “ মোদীর কাছ থেকে সুপারি খেয়েছে বাংলার তৃণমূল কংগ্রেস দল। সেই সুপারির কারণে আজকে তাঁদের ভাতিজার (অভিষেকের) মুখ দিয়ে কংগ্রেসকে দুর্বল করার জন্য প্রতিনিয়ত গালি গালাজ বর্ষিত হচ্ছে”
অধীরের দাবি, ইডি’র জেরার পর থেকেই কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বিষোদগার শুরু করেছেন অভিষেক। মুখ্যমন্ত্রীর মতামত নিয়েই বিষোদগার করছেন অভিষেক।
অধীর বলেন, “ প্রধানমন্ত্রী- বিজেপি চায় না ভারতবর্ষের সমস্ত বিরোধী দল এক হয় তাঁদের বিরুদ্ধে লড়াই করুক। মোদীকে টিকে থাকতে হলে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে ফাটক ধরাতে হবে। সেই ফাটল ধরানোর দায়িত্ব কে ? নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস পার্টি এবং তাঁদের ‘ভাতিজা’”।
অধীরের আরও দাবি, “ নিতিন গডকরি, রাজনাথ সিং, মোহন ভাগবত মিলে মমতা ব্যানার্জি এবং তার ভাতিজাকে বাঁচানোর জন্য সমস্ত চেষ্টা করছে। ”
অধীরের দাবি, দিদির ভাষণ পালটে যাচ্ছে। মোদীর বিরুদ্ধে গালিগালাজ কমে যাচ্ছে , অমিত শাহের বিরুদ্ধে গালিগালাজ বাড়ছে। রাজনাথ সিং, গাডকারি, মোহন ভাগবতের বিরুদ্ধে কথা বলেন না মুখ্যমন্ত্রী । ভিতর ভিতর বোঝাপড়া হচ্ছে বিরোধী শক্তি যাতে ঐক্যবদ্ধ না হয়।
নির্বাচন পরবর্তী পরিস্থিতিতে এর আগে তৃণমূল নিয়ে বেশ নরম সুর শোনা গিয়েছিল অধীর চৌধুরীর গলায়। ভবানীপুরে মমতা ব্যানার্জির বিরুদ্ধে প্রার্থীও দেয়নি কংগ্রেস। অধীর বলেছিলেন, বিজেপিকে সুযোগ না দিতেই এই সিদ্ধান্ত।
এদিন অবশ্য তৃণমূল কংগ্রেস বিজেপি’র ‘সুপারি’ নিয়েই চলছে বলে দাবি করেছেন অধীর।
এখন দেখার রাজ্যে রাজনীতিতে কী প্রভাব পড়ে অধীর অভিষেক তরজার। প্রশ্ন উঠছে, তৈরির আগেই বেলাইন তৃণমূল কংগ্রেসের বিজেপি বিরোধী জোট ?