অভাবকে জয় করে NEET-এ অসামান্য র‍্যাংক সামসেরগঞ্জের মোকাম্মেল আনসারির

Published By: Madhyabanga News | Published On:

নিজস্ব প্রতিবেদন: ভাঙ্গা চোরা এক চিলতে ঘর। ছোট ছোট ভাই বন, বাবা মায়ের সাথেই সেই ঘরই অট্টালিকার সম্মান। যতই অভাব থাক, যতই দারিদ্রতা চেপে বসুক সংসারে- তবুও ধৈর্য আর নিজের লক্ষ স্থির রেখেছে সে। মুর্শিদাবাদের সামসেরগঞ্জের উত্তর চাচন্ড গ্রামের ছেলে মহম্মদ মোকাম্মেল আনসারি। বাবা রেল স্টেশনের ধারে হকার এবং মা বিড়ি শ্রমিক। অভাব অনটন এই পরিবারের নিত্য সঙ্গী। অভাবকে জয় করেই এবছর ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি কাম এন্ত্রান্স টেস্টে অসাধারন র‍্যাংক করেছে মহম্মদ মোকাম্মেল আনসারি। মেডিক্যাল নিয়ে পড়াশোনায় লক্ষ স্থির এই ছাত্রের। চাচন্ড বাসুদেবপুর জালাদিপুর হাই স্কুলের কৃতি ছাত্র এই কিশোর। মাধ্যমিকে সফল ভাবে উত্তীর্ণ হওয়ার পর বিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনা করে উচ্চ মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরোয়। এর মাঝেই বিভিন্ন জায়গায় কোচিং নেওয়ার সুযোগও মেলে। আর এত পরিশ্রমের পর এবছর কৃতিত্বের সাথে নিটে ৪৪ হাজার র‍্যাংক হয়েছে মোকাম্মেল আনসারির। র‍্যাংকে একটু দূরে থাকলেও দারিদ্রতার সাথে লড়াই, পরিবারের যে লড়াই- সেই লড়াইকে সম্মান জানিয়ে এই ছাত্রকে নিয়ে আশার আলো দেখছে গোটা গ্রাম। চলার পথে ফেলে আসা দিনের কষ্ট, বাবা মায়ের তার প্রতি আস্থা, বিশ্বাস কোন ভাবেই যাতে বৃথা না হয়- প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে মোকাম্মেল।

ছাত্রের কথায়, মনের জোর থাকলেই যে কোন পরিস্থিতিতে স্বপ্ন পুরন সম্ভব। ঠিক সেটাই করতে চাইছে সেও। বাবা, মায়ের কষ্ট ছোট থেকেই দেখে, সেই কষ্ট লাঘব করতে চায় মোকাম্মেল।

দিনান্তে পান্তা ফুরনো সংসারে কোনরকমে ছেলের পড়াশোনার খরচ জুগিয়ে চলেছেন ছাত্রের বাবা মা। হকারি করে যতটুকু উপার্জন হয় তাতে মেটে না চাহিদা, বিড়ি বেঁধে সংসারে কিছু পয়সা রোজগার হয়- তবে এভাবে কতদূর চলবে- অন্ধকারে ছাত্রের অভিভাবক। সীমাহিন কষ্টের কথা বলতেই তাইতো কান্নায় চোখ ভেজে তাদের।

পরিশ্রম, মনের জোর, সাহস নিয়ে নিজের লক্ষ ছুতেঁ চায় এই ছাত্র। গর্বিত চাচন্ড বাসুদেবপুর জালাদিপুর হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষকও। মোকাম্মেল আনসারির উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করলেন, প্রতিভাবান ছাত্ররা যাতে অর্থের অভাবে পিছিয়ে না পরে- সরকারি ভাবে কোন সহায়তার আবেদনও জানালেন।

মনের জোর আর মেধা নিয়ে বাবা মা, ভাই বোনদের কষ্ট ক্মাতে চায় এই ছাত্র। দিনরাত এক করে, দাঁতে দাত চেপে চলছে পড়াশোনা। নিজের পায়ে দারাতেই হবে- এই লক্ষ পূরণে কোনভাবেই হার মানতে নারাজ মহম্মদ মোকাম্মেল আনসারি। কিন্তু পরিবারের আশংকাও প্রবল। উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে অর্থের অভাব বাধ সাধবে না তো?