অধরা মোবাইল, রাত বাড়লে গ্রেফতার হতে পারেন জীবন

Published By: Madhyabanga News | Published On:

নিজস্ব সংবাদদাতা, কান্দিঃ দিন গড়িয়ে সন্ধ্যা হল। সন্ধ্যা গড়িয়ে রাতের পথে পয়লা বৈশাখ। জীবনকৃষ্ণের মাছ ধরবার পুকুর থেকে এখনও জল ছাঁকছেন সিবিআই কর্তারা। এখনও অধরা বিধায়কের মোবাইল। তবে মোবাইল উদ্ধার করেই ছাড়বেন এলাকা, এমনই মরণ পণ করেছেন তাঁরা। শুধু মোবাইল ফোনই নয়। জীবনকৃষ্ণকে নিয়েই আন্দি ছাড়বেন গোয়েন্দারা। তার প্রস্তুতিও শেষ হয়েছে বলে দাবি সূত্রের।

আর তা হলে রাজ্যের স্কুলে ভুয়ো শিক্ষক নিয়োগ কান্ডে মুর্শিদাবাদ থেকে প্রথম গ্রেফতার হবেন শাসকদলের কোনও বিধায়ক। তাঁর আন্দির বাড়িতে প্রায় ৩২ ঘন্টা ধরে সিবিআইয়ের আধিকারিকরা তাঁকে টানা জিজ্ঞাসাবাদ করেন। সেখানেই শনিবার দুপুরে তাঁকে গ্রেফতারের প্রয়োজনীয় নথি তৈরি করে ফেলেছেন কেন্দ্রের গোয়েন্দারা। তৈরি হয়েছে বাজেয়াপ্ত তালিকাও। এ দিন জীবনের বাড়ি থেকে ছ’ব্যাগ গুরুত্বপূর্ণ নথি উদ্ধার করেছেন সিবিআই আধিকারিকরা। তালিকাতে সে সবেরও উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু বিধায়কের বাড়ি লাগোয়া পুকুর থেকে মোবাইল খুঁজে পেতে দেরি হওয়ায় গোয়েন্দারা এলাকা ছাড়তে চাইছেন না। মোবাইল উদ্ধার না হলেও বাজেয়াপ্ত তালিকায় তার উল্লেখ রয়েছে বলে দাবি সূত্রের। মোবাইল উদ্ধারে আনা হয়েছে মেটাল ডিটেক্টর সহ আধুনিক সরঞ্জাম। পাম্প বসিয়ে এখনও ছাঁচা হচ্ছে পুকুরের জল। এর একটা হেস্তনেস্ত করেই এলাকা ছাড়তে চাইছেন গোয়েন্দারা।

সূত্রের দাবি, জীবনের আয় বহির্ভূত সম্পত্তির হদিশ পেয়েছেন তাঁরা। মিলেছে একাধিক এজেন্টের নাম, মোবাইল নম্বর সহ একাধিক তথ্যও। তাঁদের সঙ্গে জীবনের কীভাবে তথ্য ও টাকা পয়সা দেওয়া নেওয়া হত, আদৌ তা হত কি না সেই সংক্রান্ত তথ্যও জীবনকে জিজ্ঞাসাবাদে মিলেছে বলে দাবি সিবিআইয়ের। তবে প্রাথমিক অবস্থায় সিবিআই আধিকারিকদের সামনে নিজেকে স্মার্ট দেখানোর চেষ্টা করেন জীবন। কিন্তু ক্রমাগত সিবিআই আধিকারিকদের জেরার মুখে এক সময় ভেঙে পড়েন বিধায়ক। তবে যে নির্দিষ্ট প্রশ্ন ও তথ্যের খোঁজে সিবিআই আধিকারিকরা জীবনের বাড়িতে তল্লাশি চালাতে এসেছিলেন সে সবের অনেক কিছুর খোঁজ পাওয়া যায়নি। এখনও অনেক প্রশ্নের উত্তর মেলেনি বিধায়কের কাছ থেকে। তাই নিজেদের হেফাজতে নিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাইছেন কেন্দ্রের গোয়েন্দারা। পাশাপাশি আরও একটি তথ্য উঠে আসছে ঘটনাস্থল থেকে। কোনওরকম ভীড় বা বিতর্ক এড়াতে গভীর রাতে বিধায়ককে নিয়ে এলাকা ছাড়তে পারেন সিবিআই গোয়েন্দারা। সেক্ষেত্রে কান্দি থানার সঙ্গে তাঁরা পরামর্শও করছেন বলে জানা যাচ্ছে। জেলা থেকে তাঁকে গ্রেফতার না করে কলকাতায় সিবিআই দফতরে নিয়ে গিয়ে আরও একপ্রস্থ জিজ্ঞাসাবাদের পর সেখানে জীবনকে গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করতে পারে সিবিআই। তবে মোবাইল না পাওয়া পর্যন্ত সিবিআই কর্তাদের আপাত ঠিকানা বিধায়কের ডেরা।