মধ্যবঙ্গ নিউজ ডেস্কঃ রাজ্যে বেজেছে পঞ্চায়েত ভোটের ডঙ্কা । প্রস্তুতি শুরু সব দলের। আর ভোট আসতেই মুর্শিদাবাদে এল রক্তপাতের খবর। গুলি করে রানিনগরের তৃণমূল নেতাকে খুন। অসহায় পরিবার। শুরু রাজনৈতিক তরজা। খুন হলেন আলতাব আলী । বয়স মাত্র ৪৬ । পেশায় ইসলামপুরের NGK MSK মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক । সিপিআই(এম) ‘এর মাধ্যমে রাজনীতিতে হাতেখড়ি। ২০০৮ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ছিলেন সিপিআই(এম) পরিচালিত লোচনপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান । প্রধান থাকা অবস্থায় এলাকার উন্নয়নের কাজের জন্য প্রশংসিত হয়েছেন একাধিকবার । ২০০৯ সালে নির্মল গ্রাম পঞ্চায়েত রূপায়ণের জন্য পান , জাতীয় স্তরের পুরস্কার ।
২০১৩ সালে বাম রাজনীতি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন আলতাব। সেই থেকে তৃণমূলের। দলের ব্লক নেতাদের দাবি, রানিনগরের ব্লক তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক তিনি। বাড়িতে রয়েছেন স্ত্রী, দুই কন্যাসন্তান , মা, ছোট ভাই। ইসলামপুর থানার গোপিনাথপুর নওদাপাড়ার বাড়িতে থাকেন মা, ভাই । স্ত্রীর সাথে মেয়েরা থাকে মুর্শিদাবাদের লালবাগের বাড়িতে। পরিবার সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিনের মতো এদিনও সন্ধ্যায় লালবাগের বাড়িতে ফিরছিলেন তিনি। ফিরছিলেন দুই কন্যার কাছে। কিন্ত হল না ফেরা। গুলিতে প্রাণ হারালেন আলতাব আলী।
তবে তৃণমূলের নেতার মৃত্যুতে উঠছে একাধিক প্রশ্ন। মঙ্গলবারই ছিল ইসলামপুরে লোচনপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনের সভা। প্রধান হন আলতাব আলির ঘনিষ্টই। এই পঞ্চায়েতের প্রধান নির্বাচনের সাথে খুনের যোগ রয়েছে বলেই দাবি রাজনৈতিক মহলে । রানিনগরের তৃনমূল বিধায়ক সৌমিক হোসেনের দাবি, খুনের পিছনে মদত রয়েছে কংগ্রেসের। প্রাক্তন তৃণমূল নেতা, বর্তমানে ব্লক তৃণমূলের সভাপতির দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন তিনি। যদিও সৌমিকের অভিযোগ উড়িয়েছে কংগ্রেস। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি , বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরীর দাবি, তৃণমুলের গোষ্ঠী কোন্দলের কারণেই এই খুন।
ঘটনার তদন্তে নেমে তৃনমূল কংগ্রেসের এক পঞ্চায়েত সদস্য সহ তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদিন ধৃতদের তোলাহয় লালবাগ মহকুমা আদালতে। তবে খুনের মূলে রাজনীতিই। এই কথাই উঠে আসছে শাসক বিরোধী বয়ানে। নভেম্বরেই মুর্শিদাবাদের নওদায় খুন হন নদীয়ার তৃনমূল নেতা , পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী মতিরুল ইসলাম। সেই ঘটনায় সামনে এসেছে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের ছবি।
এবার ফের খুন মুর্শিদাবাদে। রানিনগরে আলতাব আলীর খুন কি পঞ্চায়েত নির্বাচনে রক্তপাতের ট্রেলার ? আদৌশান্তিপূর্ণ হবে পঞ্চায়েত নির্বাচন ? উঠছে প্রশ্ন।