তৃণমূলের অন্দরে শুরু দোষারোপের পালা, হারের কারণ খুঁজতে আজ বৈঠক নেতাদের

Published By: Madhyabanga News | Published On:

মধ্যবঙ্গ নিউজ, সাগরদিঘিঃ রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর থেকে এই প্রথম এমন নিঝুম তৃণমূলের কার্যালয়। সর্বত্র হার নিয়ে হতাশা দেখা দিয়েছে কর্মীদের মধ্যে। নেতারা একে অপরকে দুষছেন নিজস্ব বৃত্তে। হারের কারণ খুঁজতে আজ শুক্রবার দলের উত্তর মুর্শিদাবাদ কার্যালয়ে বৈঠকে বসছেন জেলা নেতারা।

সাগরদিঘির উপনির্বাচনে দ্বিতীয় স্থান নিয়েই বৃহস্পতিবার সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে তৃণমূলকে। মুর্শিদাবাদে রাজ্যের শাসক দলের বিধায়ক সংখ্যা এক কমে এখন ঊনিশ। অথচ নির্বাচনের দিন এমন ফলাফলের আশা করেননি এই জেলার শীর্ষ নেতাদের কেউই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জেলা নেতা বলেন, “ ভোট ঘোষণা হওয়ার পর থেকে প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত হওয়া পর্যন্ত আমরা জানতাম আমরাই জিতব। কিন্তু প্রার্থীর নাম ঘোষণা হওয়ার পর থেকে হাওয়া বদলাতে থাকে। তবু শেষ পর্যন্ত আমরাই জিতব ভেবেছিলাম।” তাঁদের আশা ছিল ‘হাজার দশেক’ ভোটের ব্যবধানে জিতবেন তাঁরা। কিন্তু বাস্তবে কংগ্রেস প্রার্থী বাইরন বিশ্বাসের কাছে ২২ হাজার ৯৮৬ ভোটে হেরে যান তাঁদের প্রার্থী দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়। আর হার নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে ফের শুরু হয়েছে দোষারোপের পালা। যে আসনে এদিন তৃণমূল হারে সেই আসনেই হ্যাটট্রিক করেছিলেন প্রয়াত সুব্রত সাহা। তাঁর রাজনীতির কৌশল নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে শুরু হয়েছে আলোচনা।

সাগরদিঘিতে তৃণমূলের কার্যালয়ে তো বটেই শুক্রবার প্রায় সব কার্যালয়ই প্রায় বন্ধ ছিল। ঝিমিয়ে কর্মীরাও। সামসাবাদ এলাকার এক কর্মীকে এ দিন হারের কারণ জানতে চাওয়ায় নেতাদের বিরুদ্ধে বিস্তর ক্ষোভ উগড়ে দিলেন। ওই কর্মী বলেন, “ এই রকম অঘটন যে ঘটবে তা টের পেয়েছিলাম আগেই। যখন পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য প্রার্থীর নাম চাওয়া হয়েছিল তখন।” তাঁর অভিযোগ, “ সুব্রত দা (সাহা) বেঁচে থাকাকালীন পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রার্থী বাছা শুরু হয়েছিল। সুব্রত দাকে আড়ালে রেখে।” নিজেকে সুব্রত সাহা বিরোধী গোষ্ঠী হিসেবে পরিচয় দিয়ে তিনি আরও বলেন, “সুব্রত দা’র মৃত্যুর পর তাঁর পক্ষের নেতা কর্মীদের একপেশে করার চেষ্টা করেছেন বর্তমান নেতারা। ফলে তাঁদের মনে লেগেছে।” তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে থাকা আর এক কর্মীর অভিযোগ “ বাইরন বিশ্বাসের সঙ্গে আমাদের ওপর তলার নেতাদের হেব্বি যোগাযোগ। আমরা ভাবছি এক ওরা ভাবছে আর এক। এভাবে জেতা যায় না কি?” সাগরদিঘির ভোট পর্বের শুরু থেকে যৌথ দায়িত্বে ছিলেন নবগ্রামের বিধায়ক কানাই মন্ডল। এদিন তিনি বলেন, “ পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য একটা খসড়া তালিকা তৈরি হয়েছিল ঠিকই। কিন্তু সেই তালিকা চূড়ান্ত হয় নি। সে কথা সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেও দিয়েছিলাম। কিন্তু সে কথা হয়ত অনেকে বিশ্বাস করতে চায় নি।” তবে সুব্রত লবিকে অন্ধকারে রেখেই যে এই উপনির্বাচন হয়েছিল সে ব্যাপারে সরাসরি এদিন কিছু জানান নি তৃণমূলের এই পোড় খাওয়া নেতা। এদিন তিনি বলেন, “ সেটা নিয়ে এখনই কিছু মন্তব্য করছি না। অন্তর্ঘাত হয়েছে কি হয় নি তা নিয়েও বলতে পারছি না।” একইভাবে তিনি জানিয়েছেন “ওপর তলার নেতাদের সঙ্গে বাইরন বিশ্বাসের যোগাযোগের তত্ব খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। আজ বিকেলে বৈঠক ডাকা হয়েছে সেখানে আলচনা হবে।” তবে উপনির্বাচনের ফলাফল স্থানীয় স্তরের পঞ্চায়েত নির্বাচনের ওপর প্রভাব ফেলবে না বলেই জানিয়েছেন কানাই।