মধ্যবঙ্গ নিউজ ডেস্কঃ অকাল ভোটের বাদ্যিতে সরগরম সাগরদিঘি। এদিকে দুয়ারে মাধ্যমিক। অভিভাবক, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অভিযোগ, শব্দের দৌরাত্মে শিকেয় উঠেছে পরীক্ষা প্রস্তুতি। চলতি মাসের ২৩ তারিখ জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষার মুখোমুখি হবে মাধ্যমিক পড়ুয়ারা। ওই দিন প্রথম ভাষার প্রথম পত্রের পরীক্ষা। হাতে মাত্র দিন তিনেক বাকি। নাওয়া খাওয়া ভুলে এই সময় বইয়ে মুখ গুঁজে থাকার বদলে সভাস্থল সংলগ্ন মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের কান টানছে নেতাদের গরমাগরম কথা, দাবি অভিভাবদের। তার আঁচ পড়ছে অন্য এলাকাতেও। এক অভিভাবক কবিরুল ইসলাম বলেন, “ প্রায় রোজ এ দল ও দলের নেতারা সাগরদিঘি আসছেন। উচ্চস্বরে বাজছে মাইক প্রায় প্রতিটি সভায়। বাদ নেই ছোট ছোট জমায়েতও। কিন্তু মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের অসুবিধার কথা ওদের মাথাতে নেই। আর পড়ার বদলে হয় বাড়ির ছাদে উঠে না হয় সভাস্থলে গিয়ে সে সব শুনছে আমার ছোট ভাইয়ের ছেলেটা। ঘরে কি বেঁধে রাখা যায়।” সাগরদিঘি এস এন হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক তামিজুদ্দিন মল্লিক বলছেন, “এই উপনির্বাচনের প্রচারটা খুব বেশি হচ্ছে। মাধ্যমিক পড়ুয়াদের প্রস্তুতিতে বড় ব্যাঘাত ঘটালো এই উপনির্বাচন।”
সাগরদিঘির উপনির্বাচনের দিন ঘোষণা থেকেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। টানা মাধ্যমিকের নির্ঘন্ট বদলে গিয়েছে। ২৭ ফেব্রুয়ারীর পরীক্ষা হবে ১ মার্চ। কিন্তু সেই পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগে রাজনীতির কারবারিদের নিত্য সাগরদিঘি আসা যাওয়ায় পড়ুয়াদের অন্দরে বাড়ছে ক্ষোভ।
চলতি বছর মাধ্যমিকে পরীক্ষার্থী কমেছে জেলায়। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, মুর্শিদাবাদ জেলা থেকে এবার ৫৮ হাজার ৮৫৯ জন পড়ুয়া ওই পরীক্ষা দেবে। তার মধ্যে সাগরদিঘি থেকে পরীক্ষা দেবে ৩২৩৭ জন। এই ব্লকের গোবর্ধনডাঙা দস্তুরহাট হাইস্কুল থেকে সবচেয়ে বেশি পরীক্ষার্থী রয়েছে এবার। ওই স্কুলের ৪৮০ জন পড়ুয়া এবার পরীক্ষা দিচ্ছে ওই স্কুল থেকে।

নির্বাচন কমিশনের নিয়মে রবিবার ১৯ তারিখই উপনির্বাচনের প্রচারের শেষ দিন। মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হওয়ার দিন থেকেই পরীক্ষা বিধি লাগু হবে। সাগরদিঘি শহরের এক অভিভাবক প্রবীর মন্ডল বলেন, “পরীক্ষার আগে পড়াশোনাটা জরুরী। পরীক্ষার দিন তো পরীক্ষার নজরদারি চলবে।” তাঁর অভিযোগ, “সারাদিন বিভিন্ন এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনী টহল দিচ্ছে। চারদিকে অক্লান্ত ছুটছে নেতাদের গাড়ি, পুলিশের গাড়ি, আধিকারিকদের গাড়ি। আর সব জায়গায় তা হচ্ছে দল বেঁধে। জানলা, দরজা বন্ধ করলেও কি আওয়াজে মন বসে পড়ায়?” জঙ্গীপুর মহকুমার তৃণমূল শিক্ষক সংগঠনের নেতা শেখ মহম্মদ ফুরকান অবশ্য বলছেন, “মাইকের আওয়াজে পরীক্ষার্থীদের প্রস্তুতিতে ব্যাঘাত ঘটছে ঠিকই। তবে সভাস্থলে শব্দবিধি মেনে সভা হচ্ছে।”