Raibeshe Dance রায়বেঁশেকে অক্সিজেন জোগাতে বহরমপুরে কী কান্ড ?

Published By: Imagine Desk | Published On:

Raibeshe Dance রাজ্যের হারিয়ে যাওয়া লোকনৃত্যের তালিকায় অন্যতম রায়বেঁশে। এই লোকনৃত্যের গৌরব ফিরিয়ে আনতে মুর্শিদাবাদ, পূর্ব বর্ধমান, বীরভূম—এই তিন জেলার প্রায় তিনশো রায়বেঁশে শিল্পীকে নিয়ে বহরমপুর রবীন্দ্রসদনে তিনদিনের কর্মশালার সূচনা হল। জেলা প্রশাসন ও মুর্শিদাবাদ MURSHIDABAD  তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের সহযোগিতায় লোকসংস্কৃতি ও আদিবাসী সংস্কৃতি কেন্দ্রের উদ্যোগে এই কর্মশালার আয়োজন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা শাসক (উন্নয়ন) চিরন্তন প্রামাণিক । তাঁর কথায়, “রায়বেঁশে বাংলার এক ঐতিহ্যবাহী লোকনৃত্য Folk dance। নতুন প্রজন্মের কাছে এই নৃত্য পৌঁছে দেওয়াই আমাদের লক্ষ্য। কর্মশালা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শিল্পীরা তাঁদের দক্ষতা বৃদ্ধি করবেন।”

রায়বেঁশের ইতিহাস নিয়ে সুবীর সরকার, মহকুমা তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের আধিকারিক বলেন, “রায়বেঁশে মানেই একদিকে শারীরিক কসরতের নিদর্শন, অন্যদিকে বাংলার লোকসংস্কৃতির অন্যতম পরিচয়। এই কর্মশালা নতুন শিল্পী তৈরির ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে।”

Raibeshe Dance কী এই রায়বেঁশে?

‘রায়’ শব্দের অর্থ সম্ভ্রান্ত আর ‘বেঁশে’ শব্দের অর্থ বাঁশ। অর্থাৎ, শক্ত বাঁশের লাঠি দিয়ে প্রদর্শিত শারীরিক কসরতই রায়বেঁশের মূল আকর্ষণ। অনুমান করা হয়, কয়েকশো বছর আগে বাংলায় এই নৃত্যের প্রচলন শুরু হয়। এক সময়ে এটি যুদ্ধকৌশল প্রদর্শনের মাধ্যম হিসেবেও ব্যবহৃত হত। বাঁশের লাঠি ও যোদ্ধার মতো ভঙ্গিতে প্রদর্শিত এই নাচ আজও বাংলার ঐতিহ্যকে মনে করিয়ে দেয়।

Raibeshe Dance শিল্পীদের আশাবাদ

কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী শিল্পী বাবন বাগদী বললেন, “রায়বেঁশের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ছে। তবে সরকারি উদ্যোগ না থাকলে এই নাচ বাঁচানো সম্ভব নয়। এই কর্মশালার মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের মধ্যে রায়বেঁশে ছড়িয়ে দেওয়া যাবে।”

Raibeshe Danceকর্মশালার উদ্দেশ্য

এই তিনদিনের কর্মশালায় বিভিন্ন জেলার অভিজ্ঞ প্রশিক্ষকরা শিল্পীদের রায়বেঁশের নতুন কৌশল শেখাবেন। উদ্দেশ্য একটাই— নতুন প্রজন্মের কাছে রায়বেঁশে পৌঁছে দেওয়া এবং শিল্পীদের মধ্যে কৌশল আদানপ্রদান ঘটানো।

অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে এক অভূতপূর্ব উৎসাহ। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা শিল্পীরা বলছেন, এ ধরনের কর্মশালা আরও বেশি হলে রায়বেঁশে আন্তর্জাতিক স্তরেও পৌঁছতে পারবে। জেলা প্রশাসনের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে তাঁরা বলছেন, এটি শুধু লোকনৃত্যকে বাঁচানোর প্রচেষ্টা নয়, বরং বাংলার সংস্কৃতিকে নতুন মাত্রা দেওয়ার প্রয়াস। নতুন বছরের শুরুতে বহরমপুরে আয়োজিত এই কর্মশালা রায়বেঁশেকে সত্যিই অক্সিজেন দিতে পারবে কিনা, তা সময়ই বলবে। তবে বর্তমানে এই উদ্যোগে শিল্পীরা যেমন খুশি, তেমনই দর্শকরাও রায়বেঁশের জাদুতে মুগ্ধ।