CMPO West Bengal বাল্য বিবাহে রুখতে নতুন দায়িত্ব সিডিপিও দের

Published By: Imagine Desk | Published On:

CMPO West Bengal  বাল্য বিবাহ রুখতে নতুন দায়িত্বে সিডিপিওরা (Child Development Project Officer) । চাইল্ড ডেভলপমেন্ট প্রোজেক্ট অফিসাররাই (CPDO) কাজ করবেন চাইল্ড ম্যারেজ প্রোহিবেশন অফিসার Child Marriage Prohibition Officer ( CMPO)  হিসেবে। নিজের এলাকায় তাঁরা এই দায়িত্ব নেবেন। রাজ্য সরকারের নারী ও শিশু বিকাশ এবং সমাজকল্যাণ দপ্তরের  পক্ষ থেকে অর্ডার জারি করে এই তথ্য জানানো হয়েছে।  এতোদিন শিশু ও নারীদের পুষ্টি এবং বিভিন্ন প্রকল্পের দেখভাল করতেন সিডিপিওরা। এবার থেকে নতুন দায়িত্ব হিসেবে যোগ হল বাল্য বিবাহ বন্ধের কাজ।

বাল্যবিবাহ: ১৮ বছরের কম বয়সি মেয়ে ও ২১ বছরের কম বয়সি ছেলের বিয়ে শুধুমাত্র যে বেআইনী (বাল্য বিবাহ নিষিদ্ধ, ২০০৬ আইন অনুসারে) তা নয়, এর ফলে মানুষ নিজের মৌলিক অধিকার থেকেও বঞ্চিত হয়। এর ফলে কিশোর কিশোরীদের (বিশেষত কিশোরীদের) সমস্ত প্রকার বিকাশ বাধাপ্রাপ্ত হয়।

 

CMPO West Bengal বাল্য বিবাহ নিষিদ্ধকারী আধিকারিক কে ?

বাল্য বিবাহ নিষিদ্ধ আইন, ২০০৬ (১014), বাল্য বিবাহ নিষিদ্ধকারী আধিকারিকদের নিযুক্তির শর্ত প্রদান করে। এর বিরুদ্ধে সমস্ত মামলা ও অভিযোগের নিষ্পত্তি করার প্রক্রিয়া ও উপায় প্রদান করে।বাল্য বিবাহ নিষিদ্ধকারী আধিকারিক নিজের আওতাভুক্ত এলাকাকে  বাল্য বিবাহ মুক্ত করার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ  ব্যক্তি।

 

 

CMPO West Bengal  বাল্য বিবাহ প্রতিরোধক গতিবিধি/ কার্যক্রম : কীভাবে কাজ করবেন তাঁরা ?

সিএমপিও এর বাল্য বিবাহ সংঘটিত হবার পূর্বে তাতে হস্তক্ষেপ করার এবং বাল্য বিবাহ সংঘটিত হয়ে যাবার পরে বালক বালিকার তরফ থেকে আদালতে আবেদন করার অধিকার আছে।

যে সব স্থানে বাল্য বিবাহ হবার সম্ভাবনা আছে, সেই সব স্থানগুলির একটি তালিকা বানাতে হবে এবং বিবাহের সময়ে সেখানে পুলিশের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। ছেলে মেয়েদের বাল্য বিবাহ সম্পর্কে সচেতন করতে প্রথমে তাদের সাথে কথা বলতে হবে ও বাল্য বিবাহের ফলে তাদের ওপর যে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে সে সম্পর্কে তাদের বোঝাতে হবে বালক বালিকাদের এই পরিস্থিতি বুঝতে সাহায্য করতে হবে এবং তাদের বোঝাতে হবে যে বিবাহ না করা তাদের অধিকার ।

CMPO West Bengal  মাতা পিতাকে বাল্য বিবাহের নেতিবাচক প্রভাব সম্পর্কে বোঝাতে হবে ও তাদের এই বেসরকারি সংগঠনের সাহায্য নিতে হবে৷ তাদের সাথে মাসে একবার সাক্ষাৎ করতে হবে ও আলোচনা করতে হবোপঞ্চায়েত সদস্য/সদস্যদের সাথে এই ব্যাপারে প্রতি মাসে আলোচনা করতে হবে ও তার রিপোর্ট করতে হবে৷

CMPO West Bengal   সিএমপিও হবার সুবাদে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যদের দ্বারা তাদের এলাকায় সংঘটিত বাল্য বিবাহের নিবন্ধীকরণ করাতে হবে এবং সুনিশ্চিত করতে হবে যে এই নিবন্ধীকরণের সাথেবর ও বধূর বয়সের প্রমাণপত্র হিসাবে জনের শংসাপত্র,  স্কুল ছাড়ার শংসাপত্র, আধার কার্ড, মেডিকেল বোর্ডের দেওয়া প্রমাণপত্র ইত্যাদির প্রতিলিপি যেন সংযুক্ত থাকোএই সমস্ত নথি যেন সমস্টি উন্নয়ন আধিকারিক বা পঞ্চায়েত প্রধানের দ্বারা সত্যায়িত করা থাকে৷

 

সমস্টি উন্নয়ন আধিকারিক (10) স্থানীয় স্কুল ইন্সপেক্টরকে সেই সব শিশুদের তালিকা বানাতে নির্দেশ দিতে পারেন যাদের বাল্য বিবাহ হবার ঝুঁকি বেশি।

 

তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ: যদি বাল্য বিবাহ সংঘটিত হয়: যদি অদূর ভবিষ্যতে কোন বাল্য বিবাহ সংঘটিত হবার সম্ভাবনা থাকে, তাহলে পাত্র পাত্রী উভয়ের বাড়ি গিয়ে তাদের পিতা মাতাকে বোঝাতে হবে যে বাল্য বিবাহ হল দণ্ডনীয় অপরাধ ও পাত্র পাত্রীকে বিয়ে না করার পরামর্শ দিতে হবে৷ জন্য বোঝাতে হবে ও তাদের সচেতন করতে হবে ।তাদের বলতে হবে তারা যেন বাল্য বিবাহ হতে না দেয়।

পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতে হবে ও পুলিশের সহযোগীতায় অভিযুক্তকে গ্রেফতার করাতে হবে৷ পুলিশের কাছে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫১ নম্বর ধারা অনুযায়ী বাল্য বিবাহ বন্ধ করতে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করার অধিকার আছে৷

যদি পাত্র পাত্রীর পিতা মাতা বাল্য বিবাহ বন্ধ করতে রাজি না হয় তাহলে প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে অভিযোগ দায়ের করতে হবে ও বাল্য বিবাহ বন্ধ করার অনুমতির জন্য ১৩ নম্বর ধারার অধীনে আবেদন করতে হবে। বিবাহের প্রমাণসমূহ (ছবি, আমন্ত্রণ পত্র, বিবাহের জন্য খরচের রসিদ ইত্যাদি) একত্রিত করতে হবে৷

 

যে সমস্ত ব্যক্তি বাল্য বিবাহের ব্যবস্থা ও আয়োজন করার, সহযোগীতা করার, উৎসাহ দেওয়া ও যোগদানের জন্য দায়ী, তাদের তালিকা তৈরী করতে হবে৷ যদি ছেলে বা মেয়েকে বিবাহের জন্য জোর করা হয়,হুমকি দেওয়া হয় বা তাদের ছলনা করার চেষ্টা করা হয় অথবা বালক বা বালিকার জীবনের ঝুঁকি থাকে তাহলে তাদের সহযোগীতা করতে বা তাদের সুরক্ষা সুনিশ্চিত করতে তাকে তাৎক্ষণিক শিশুকল্যাণ সমিতির  সামনে উপস্থিত করতে হবে। যেখানে শিশু কল্যাণ সমিতি নেই, সেখানে ছেলে বা মেয়েকে প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে উপহিত করতে হবে। প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে উপহ্িত করার আগে অবধি এই সমস্ত ছেলে বা মেয়েদের সরকারি মান্যতা প্রাপ্ত বাচচাদের হোম, ড্রপ ইন সেন্টার বা অস্থায়ী হোমে রাখতে হবে। ছেলে বা মেয়েদের উদ্ধার করার পর, তাদের চিকিৎসা, আইনী সহযোগীতা, প্রাসঙ্গিক পরামর্শ ও পুর্নবাসন ইত্যাদি সর্বপ্রকারের সহযোগীতা সুনিশ্চিত করতে হবে৷